শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

বন্যার চিরাচরিত দুর্ভোগ

পানিবন্দি মানুষকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন

জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে দেশের উপকূলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় ডুবে গেছে অসংখ্য জনপদ। লঘুচাপ ও পূর্ণিমার কারণে জোয়ারের পানির উচ্চতা বেড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্ভোগে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। এমনিতেই ভয়াবহ বন্যার শিকার হয়ে এখনো ধুঁকছে নিম্নাঞ্চলের মানুষ। এ অঞ্চল কখন আগের অবস্থায় ফিরবে তা এখনো অনিশ্চিত। ভবিষ্যতে আবারও এমন দুর্যোগ রুখতে কতটা টেকসই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা-ও ভেবে দেখার বিষয়। দুর্যোগপ্রবণ দেশ হলেও ত্রাণসহায়তা দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলাকেই প্রাধান্য দিয়ে এসেছি আমরা। প্রাথমিকভাবে তা জরুরি হলেও দুর্যোগ-পরবর্তী পুনর্বাসন প্রক্রিয়াটিই হচ্ছে মূল কাজ। একই সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল। যার কারণে প্রস্তুতি, পরিকল্পনা ও বরাদ্দ সবকিছু হলেও বাস্তবায়নে ঘাটতি থেকে যায়। ভয়াবহ বন্যার শিকার সিলেট ও সুনামগঞ্জের মানুষ এখনো দুর্ভোগ কাটিয়ে উঠতে পারেনি। জাতিসংঘের হিসাবে বন্যায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ৭২ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদের জন্য ৫০ লাখ ডলারের সহায়তা ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি। বন্যায় অনেক মানুষ ধান, গবাদি পশু ও খামারের মাছ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। অনেকে হয়ে পড়েছে কর্মসংস্থানহীন। অসংখ্য নলকূপ নষ্ট হয়েছে, অনেক স্বাস্থ্যকেন্দ্র হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষয়ক্ষতির তালিকাটি আসলে দীর্ঘ। করোনা পরিস্থিতির পর বন্যায় শিক্ষা ক্ষেত্রে যে ক্ষতি হয়েছে তা মোকাবিলা করা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের। সরকারি হিসাবে সিলেট বিভাগের ৬৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সংস্কার ছাড়া ৫২৮টিতে পাঠদান সম্ভব নয়। ফলে এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে গেলেও অনেক জায়গায় এখনো পাঠদান শুরু করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় সরকারের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানকে একযোগে কাজ করতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে রাজনৈতিক নেতৃত্ব, স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদেরও।

সর্বশেষ খবর