বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

উত্তরা ট্র্যাজেডি

দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত হোক

রাজধানীর উত্তরায় বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্পের একটি গার্ডার প্রাইভেট কারের ওপর পড়ে শিশুসহ পাঁচজনের জীবন কেড়ে নিয়েছে। বারবার এ ধরনের দুর্ঘটনার পরও কর্তাব্যক্তিদের বোধোদয় না হওয়ায় সোমবার বিকালে ট্র্যাজেডির পুনরাবৃত্তি হয়েছে। রাস্তা বন্ধ না করেই মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে ক্রেন দিয়ে গার্ডার ওঠানোর কাজ চলছিল। তখন প্রাইভেট কারটি নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ ক্রেনটির এক পাশ উল্টে গার্ডারটি ছিটকে গাড়ির ওপর পড়ে যায়। আরেকটি ক্রেন এনে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে গার্ডার সরিয়ে প্রাইভেট কার থেকে পাঁচজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্যে ২৫-৩০ বছরের দুজন মহিলা, চার-পাঁচ বছরের একজন ও সাত বছরের একজন মেয়েশিশু এবং ৪৫-৫০ বছরের একজন পুরুষ রয়েছেন। দুর্ঘটনায় আহত হন দুজন। আহত হৃদয় ও রিয়া মণি নবদম্পতি। তারা পেছনের সিটে বসেছিলেন। জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার বাসিন্দা আহত হৃদয়ের বাবা মো. রুবেল মিয়া গাড়ি চালাচ্ছিলেন। শনিবার হৃদয় ও রিয়া মণির বিয়ে হয়। সোমবার কাওলায় হৃদয়ের বাড়িতে ছিল বৌভাতের অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান শেষে রুবেল মিয়া নিজেই গাড়ি চালিয়ে তাদের আশুলিয়ার খেজুরবাগানে রিয়ার বাসায় পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন। পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হৃদয় ও রিয়া মণিকে ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত বছর শাহজালাল বিমানবন্দরের কাছে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্পের গার্ডার পড়ে চারজন আহত হন। যাদের দুজন চীনা নাগরিক। গার্ডার ধসে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে। নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার ধসে মারা যান ১৩ জন। আহত হন অনেকে। একের পর এক গার্ডার ধসে প্রাণহানি ঘটলেও এসব দেখভালের দায়িত্ব যাদের তাদের কুম্ভকর্ণের ঘুম না ভাঙায় উত্তরা ট্র্যাজেডির উদ্ভব হলো। যেনতেনভাবে গার্ডার ওঠাতে গিয়ে কেড়ে নেওয়া হলো পাঁচটি মূল্যবান প্রাণ। হতাহতদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দান এবং দুর্ঘটনার দায় নির্ণয় করে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর