শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

চিকিৎসা বিড়ম্বনা

বন্ধ হোক অব্যবস্থাপনা ও প্রতারণা

বাংলাদেশে চিকিৎসার নামে চলছে সীমাহীন প্রতারণা। চিকিৎসকের কাছে গেলেই নানা বিষয়ে টেস্টের জন্য পাঠান ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। তারা যে রিপোর্ট দেন, তা কতটা খাঁটি আর কতটা ভুয়া তা নিয়ে সংশয়ের শেষ নেই। এমনকি সঠিক রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক বেঠিক ব্যবস্থাপত্র দেন এমন নজির ভূরি ভূরি। আর এ কারণেই দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখতে পারছে না সাধারণ মানুষ। চিকিৎসা খাতে শত শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হচ্ছে প্রতি বছর। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দাকালেও ব্যয় হচ্ছে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা। শুধু উচ্চবিত্ত কিংবা ধনীরা নয়, নিম্নবিত্তরাও চিকিৎসার জন্য ছুটে যাচ্ছেন ভারতে। চিকিৎসার নামে দেশে অব্যবস্থাপনা ও মানহীনতার যাচ্ছেতাই অবস্থা চলছে। এ থেকে মুক্তি পেতে নিম্নবিত্তরাও দেশে তাদের স্বজনদের চিকিৎসা করোনার চেয়ে ভারতে চিকিৎসা করাকে সাশ্রয়ী বলে ভাবছেন। যে কারণে ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দূতাবাসে মেডিকেল ভিসার জন্য ভিড় বাড়ছে। দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোয় রয়েছে অব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা; আর বেসরকারিতে আস্থার সংকট, প্রতারণার ফাঁদ। ভালো সেবার আশায় মধ্যবিত্ত এমনকি নিম্নমধ্যবিত্তরাও প্রতিদিনই ছুটছেন বিদেশে। উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রতি বছর দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে শত শত কোটি টাকা। গত দুই বছর কভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে বিদেশযাত্রায় ছিল নানা বিধিনিষেধ। ভারতের সঙ্গে স্থলপথে সীমান্ত দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় যেতে পারেননি রোগীরা। সীমান্ত খুলতেই মেডিকেল ভিসার জন্য ভিড় বেড়ে গেছে ভিসা সেন্টারগুলোয়। থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরে যাওয়া রোগীর ভিড়ও ঊর্ধ্বমুখী। প্রতি বছর বাংলাদেশিরা বিদেশে চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন টাকা খরচ করেন। দূরবর্তী অগ্রসর দেশগুলো তো বটেই ভারতে চিকিৎসা করাতে গেলে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি খরচ হওয়ার কথা। তবে আনুষঙ্গিক খরচ ধরলে ভারতে বাংলাদেশের চেয়ে সাশ্রয়ী খরচে চিকিৎসা করা যায়। দেশে চিকিৎসক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর প্রতি মানুষের আস্থার সংকট বিদেশমুখী হওয়ার প্রবণতা বাড়াচ্ছে; যা এড়াতে দেশে মানসম্মত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারকে কঠোর হতে হবে। প্রতারণা বন্ধে নিতে হবে কঠোর মনোভাব।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর