রবিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

শিক্ষায় সর্বনাশ পৌঁছেছে গভীরে

আলম রায়হান

শিক্ষায় সর্বনাশ পৌঁছেছে গভীরে

অনেকেরই প্রিয় কবি তারাপদ রায়। তাঁর একটি কবিতার কয়েক ছত্র- ‘আমরা যে গাছটিকে কৃষ্ণচূড়া গাছ ভেবেছিলাম/যার উদ্দেশ্যে ধ্রুপদী বিন্যাসে কয়েক অনুচ্ছেদ প্রশস্তি লিখেছিলাম/গতকাল বলাই বাবু বললেন, “ঐটি বাঁদরলাঠি গাছ”। ... আমাদের কবে সর্বনাশ হয়ে গেছে।’ নানান ধরনের অঘটন ঘটলে এ কবিতাটি মনে পড়ে। মনে পড়ে প্রায়ই। কারণ প্রায়ই অঘটন ঘটছে। এ অবস্থায় কিছুদিন আগে একটি দৈনিক পত্রিকায় ডাকসুর সাবেক জি এস গোলাম রাব্বানীর বিস্ফোরক উক্তির কারণে তারাপদ রায়ের এ কবিতাটি প্রবলভাবে মনে পড়ল। সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা বলেছেন, ‘ছাত্রলীগ হচ্ছে বেকার তৈরির কারখানা’। যমুনা গ্রুপের পরিচালক পদে যোগ দিয়ে কয়েকদিনে তাঁর লব্ধ অভিজ্ঞতা থেকে তিনি আরও বলেছেন, ‘আমি এখানে জয়েন করার পর গত ১০ দিনে অন্তত ১ হাজার সিভি এসেছে। তাদের প্রত্যেকে অনার্স-মাস্টার্স করা বা দু-এক জনের...। কিন্তু তাদের আমি কোথায় দেব? তারা কী পারে?’ রাজনীতি থেকে এক ধরনের অবসরে গিয়ে অথবা ছিটকে পড়া গোলাম রাব্বানী এখন করপোরেট চাকুরে। আমাদের দেশে এ ধরনের চাকরি করার প্রবণতা রাজনীতিকদের মধ্যে বিরল নয়, তবে আমলাদের মধ্যে বেশ প্রবল। সরকারের ডাকসাইটে আমলারাও অবসরে যাওয়ার পর কোনো না কোনো ব্যবসায়ী গ্রুপে যোগদানের ধারায় শামিল হন। হয়ে যান অনুগত, আজ্ঞাবহ। অনেক প্রতিষ্ঠান কোনো কোনো আমলাকে আগে থেকেই চাকরির টোপ দিয়ে রাখে। কখনো আবার চাকরিতে থাকাকালেই ‘বেতন’ দেওয়া শুরু হয় এমন রটনা আছে। যা আসলে নিয়মিত ঘুষের পেরোলে রাখা। অবশ্য অবসরে যাওয়ার পর প্রতিশ্রুত চাকরি না দেওয়ার ঘটনাও আছে। তবে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের উদাহরণ খুব বেশি নেই। বরং প্রতিশ্রুতি রক্ষার উদাহরণই ভূরি ভূরি। ফলে বিভিন্ন করপোরেট হাউসে সাবেক আমলাদের হাটবাজার বসার অবস্থা হয়ে গেছে। স্বাধিকার আন্দোলনের সময় চার খলিফা খ্যাতদের একজন আবদুল কুদ্দুস মাখন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীন্ডেিত বীতশ্রদ্ধ হয়ে মাফিয়া ডন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের কোম্পানির চাকরিতে যোগদান করেন এবং আমৃত্যু সেখানেই চাকরি করে গেছেন। চাকরিরত অবস্থায় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রার্থী হয়েছেন এবং পরাজয়বরণ করেছেন দলীয় বিশ্বাসঘাতকতায়। চার খালিফা খ্যাত আর একজন আ স ম আবদুর রব রাজনীতিতে খেই হারিয়ে প্রকাশ্যে একটি চাকরি চেয়েছিলেন। ডাকসুর সাবেক জিএস গোলাম রাব্বানী যমুনা গ্রুপের চাকরিতে যোগ দিয়ে সম্প্রতি আলোচনার ধারায় নবসংযোজন। ভবিষ্যতে হয়তো তিনি করপোরেট অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের নতুন জ্ঞান দিতে পারবেন। যেমন ছাত্রলীগ প্রসঙ্গে দিয়েছেন, ছাত্রলীগ করার সুবাদে। আগামীতে তিনি কোন জ্ঞান দেবেন তা অবশ্য সময়ই বলে দেবে। এজন্য আমাদের অপেক্ষা করাই ভালো।

প্রসঙ্গক্রমে স্মরণ করা যায়, যমুনা গ্রুপের যমুনা টেলিভিশনের আনুষ্ঠানিক সম্প্রচার জটিলতার পাঁকে আটকে থাকা অবস্থায় সর্বময় দায়িত্ব নিয়ে চাকরিতে যোগদান করেছিলেন ডাকসাইটে আমলা আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খান। তখন তিনি স্থানীয় সরকার সচিব হিসেবে সদ্য অবসরে। আমলা হিসেবে বেশ আলোচিত নাম। ছাত্রনেতা হিসেবেও সমধিক পরিচিত ছিলেন। তবে তিনি যমুনা গ্রুপের চাকরিতে বেশি দিন থাকেননি। এ ধারায় গোলাম রাব্বানী যমুনা গ্রুপে কত দিন থাকবেন সে প্রসঙ্গ এখানে প্রাসঙ্গিক নয়। তাঁর সাম্প্রতিক উক্তিটিই কেবল বিবেচনার বিষয়। তিনি বলেছেন, ‘ছাত্রলীগ হচ্ছে বেকার তৈরির কারখানা’। কিন্তু একটু খতিয়ে দেখার চেষ্টা করলে অনুধাবন করা যাবে, বেকার তৈরির কারখানা কেবল ছাত্রলীগ নয়। এ প্রক্রিয়া চলমান সব ছাত্র সংগঠনে। সঙ্গে আর একটি বিষয় আছে, যা গোলাম রাব্বানী বলেননি অথবা সচেতনভাবে এড়িয়ে গেছেন। তা হলো, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যাঁরা রাজনীতি করেন, তা হোক ছাত্র রাজনীতি অথবা জাতীয় রাজনীতি, তার বেশির ভাগই দেশ বা জাতির ভবিষ্যৎ-কেন্দ্রিক ভাবনা দ্বারা তেমন প্রভাবিত হন না। তাঁদের কাছে বর্তমানটাই মুখ্য এবং তা একান্তই আত্মকেন্দ্রিক। এ সর্বনাশা ধারার কারণে ছাত্রলীগ নেতাদের অর্থবিত্তের খবর প্রায়ই প্রকাশিত হয়। এমনকি ছাত্রলীগ নেতার হাজার কোটি টাকা পাচারেরও প্রমাণিত খবর প্রকাশিত হয়েছে। ২ হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় গ্রেফতার ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নিশান মাহমুদ শামীমের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি বিষয়টি বছরখানেক আগের। আবার এটি মনে করার কোনো কারণ নেই, বিষয়টি এখানেই থেমে আছে। এ ধারা বহমান, যা সহজেই বোধগম্য। বলা বাহুল্য, ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে নিশান মাহমুদ শামীমের ধারায় আরও অনেকে আছেন। আর যে ধারা থেকে নিশ্চয়ই দূরে ছিলেন না ছাত্রদলের নেতারাও, যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। একই কথা কমবেশি প্রযোজ্য জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্রসমাজের বেলায়ও। হয়তো এ কারণে ক্ষমতায় থাকাকালে ত্যক্তবিরক্ত হয়ে জেনারেল এরশাদ তাঁর দলের ছাত্র সংগঠন বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। এমনকি তিনি অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিও একই কর্ম করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু বোধগম্য কারণেই জেনারেল এরশাদের এ আহ্বান কেউ ধর্তব্যের মধ্যে নেননি। আর এরশাদের এ ঘোষণার কার্যকারিতা শেষতক তাঁর দলেও হারিয়েছে। জেনারেল এরশাদ যে খুব সাদা মনে ছাত্র রাজনীতির অবসান ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন তা মনে করার কোনো কারণ নেই। তিনি হয়তো নিজের ক্ষমতা রক্ষার জন্য একটি কৌশল হিসেবে ছাত্র রাজনীতির অবসান ঘটানোর চেষ্টা করেছেন। তাঁর এ চেষ্টা সফল হলে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা সহজ হতো না। স্মরণ করা যায়, পাকিস্তানের দুঃশাসন এবং বাংলাদেশে স্বৈরাচারবিরোধী বিভিন্ন আন্দোলনে ছাত্র সংগঠন তথা ছাত্রসমাজের প্রধান ও ঐতিহাসিক ভূমিকা রয়েছে। এ হচ্ছে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের গৌরবের উদাহরণ। আর এ গৌরবের ঢেঁকুর তুলতে তুলতে ছাত্র রাজনীতি এবং গোটা ছাত্রসমাজ কোথায় পৌঁছেছে? বিভিন্ন সংগঠনের কাভারেজে ছাত্রনেতাদের যেসব ঘটনা-রটনা প্রকাশিত হচ্ছে তা নিশ্চয়ই সুখকর বিষয় নয়। আর ছাত্রদের সামগ্রিক শিক্ষার মান যেখানে গিয়ে ঠেকেছে তা খুবই উদ্বেগজনক। এসএসসি ও এইচএসসিতে ‘মেধাবীরা’ আসলে কতটা মেধাবী তার কিছুটা প্রমাণ মেলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সময়। এ ক্ষেত্রে প্রতি বছরই আলোচনা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ফেলের পরিসংখ্যানে। এদিকে আবার বিশ্ব রেটিংয়ে নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তাহলে বাংলাদেশের শিক্ষার সামগ্রিক অর্থটা কী দাঁড়াল? নিশ্চয়ই বগল বাজাবার মতো কিছু নয়। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে একটু দৃষ্টি ফেরালেই বোধগম্য হবে, সর্বনাশ কত গভীরে চলে গেছে। আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিষয়টিকে বিচ্ছিন্ন করে দেখারও উপায় নেই। সমাজের সবকিছুর সূচকই নিম্নমুখী। একসময় যা ছিল অকল্পনীয় তা এখন মামুলি ব্যাপার। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, আম গাছে বেল ধরলেও তা যেন সাধারণ বিষয়ের শ্রেণিভুক্ত হয়ে যাবে। ফলে শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষক পেটানো, খুন, শিক্ষককে জুতার মালা পরানো আমাদের তেমন আলোড়িত করে না। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ছাত্রদের লেলিয়ে দেওয়া, ধর্মীয় ইস্যু তুলে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করা, জেলে দেওয়া এসব একসময় ছিল কল্পনার বাইরে। কিন্তু এখন অনেকটাই স্বাভাবিক ঘটনার মতো। যেমন শিক্ষক কন্যাতুল্য ছাত্রীর সঙ্গে ‘ইত্যাদি’ করেন, এ খবরও অহরহ আসছে। অনেকে বলছেন, নৈতিকতার দিক থেকে ছাত্র-শিক্ষক যেন অধোগতির এ সরল রেখায় দাঁড়িয়ে গেছে। এক কথায় যাকে বলা চলে চরম অবক্ষয়। এর সঙ্গে আর একটি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন। তা হলো, কেউই তার পরিচয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন আর কেবলই শিক্ষার কেন্দ্র নয়। এ হয়ে গেছে রাজনীতি ও বাণিজ্য কেন্দ্র। শিক্ষক তাঁর পেশার মাধুর্যের সীমায় থাকতে চান না। তাঁর প্রচুর টাকা দরকার। একসময় বেঁচে থাকার জন্য কোনো কোনো শিক্ষক টিউশনি করতেন। ব্যাচেও পড়াতেন। কিন্তু মুক্তবাজার অর্থনীতিতে তা রূপ নিয়েছে কোচিং বাণিজ্যে। এ থেকে শিক্ষকদের আর্থিক প্রাপ্তি বেশ। শুধু এই নয়, আরও অনেক পথে শিক্ষকরা আয় করেন। তাঁদের নজর এখন প্রাপ্তির দিকে। আবার এ প্রাপ্তি কেবল অর্থের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না। শিক্ষকদের প্রাপ্তির বাসনা যে আরও কত দিকে প্রসারিত তার খবর তো প্রায়ই গণমাধ্যমে আসছে। ছাত্রী-সহকর্মী এমনকি অতি অধস্তন কোনো ব্যাপারেও যেন বাছবিচার নেই। শিক্ষক তো অনেক ওপরের বিষয়, মনুষ্য পদবাচ্যের সঙ্গেও যা যাওয়ার কথা নয়। কিন্তু এসবই ঘটছে অহরহ। এ চরম হতাশার। আরও হতাশার দিক হলো, শিক্ষা নিয়ে সরকারের হরেক কিসিমের সিদ্ধান্ত। কখনো এই, কখনো সেই- এই করেই সময় পার হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক কিছুই এখনো চলছে ট্রায়াল অ্যান্ড এরর বেসিসে। ফলে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। সবচেয়ে জরুরি বিষয় শিক্ষানীতি প্রসঙ্গেই ধরা যাক। প্রায় এক যুগ আগে প্রণীত শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের কথা ছিল ২০১৮ সালের মধ্যে। কিন্তু আইনের অভাবে তা তেমন কার্যকর নয়। এদিকে শিক্ষা আইনের খসড়া নিয়ে কেবল আলোচনাই হচ্ছে ১১ বছর ধরে! জ্ঞানগর্ভ আলোচনা-পর্যালোচনার গ-ি পেরিয়ে শিক্ষা আইনের খসড়া কবে চূড়ান্ত হবে, তা কেউ জানে না।

উল্লেখ্য, জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকরের ভিত্তি হচ্ছে আইন। কিন্তু সে আইনটিই হয়নি। আবার শিক্ষা ক্ষেত্রে নানান ধরনের ভারী ভারী নীতি, খুচরা নীতি এবং শক্ত শক্ত আইন হলেই বা কী হবে? তা নিয়েও সংশয় আছে। বিরাজমান আইনের কার্যকারিতা কোন পর্যায়ে আছে তার একটি ছোট্ট উদাহরণ কুড়িগ্রাম। এ জেলার চিলমারী উপজেলার নটারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছর ধরে একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে পাঠদান! কিন্তু সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তারা বিষয়টি জানেন না!! এ হচ্ছে সরকারি মনিটরিংয়ের নগ্ন একটি নমুনা। এ রকম অনেক আছে। ফলে আইন প্রণয়ন সমাপ্ত হলেই শিক্ষানীতির কস্তুরীঘ্রাণ প্রবল হবে, তা মনে করার কোনো কারণ নেই। কেননা শিক্ষার নীতিমালা ও আইন প্রণয়নের সঙ্গে এমন অনেকে সম্পৃক্ত আছেন যাঁরা বিভিন্ন এজেন্ডায় নিমজ্জিত। যাকে সোজা বাংলায় বলা হয় দুরভিসন্ধি। ২০১৬ সালে শিক্ষা আইনের যে খসড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পাঠিয়েছে তাতে ‘ছায়া শিক্ষার’ নামে কোচিং ও প্রাইভেট টিউশনের বৈধতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এতে সুযোগ রাখা হয়েছিল সহায়ক বা অনুশীলন বই প্রকাশেরও। সোজা বাংলায় যার অর্থ হচ্ছে, কোচিং বাণিজ্য চলবে এবং আইনসিদ্ধ নোটবই। এ নিয়ে সংগত কারণেই তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ফলে খসড়াটি পর্যালোচনার জন্য ফেরত আনে মন্ত্রণালয়। সে সময় জানানো হয়েছিল, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে খসড়াটি চূড়ান্ত করা হবে। পর্যালোচনার জন্য সাবেক একজন সচিবকে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মাস যায়, বছর যায় আইনের খসড়া আর চূড়ান্ত হয় না। কে জানে সুনীলের কবিতার ৩৩ বছর কাটার পরও শিক্ষা আইনের জন্য আমাদের আক্ষেপ করতে হবে কি না!                

লেখক : জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

সর্বশেষ খবর