রবিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

ধান উৎপাদন

কৃষকবান্ধব নীতি গ্রহণ করুন

সার ও ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধিতে চলতি বছর আমন ও বোরো উৎপাদনে কৃষকের ব্যয় বেড়ে গেছে। ধান উৎপাদন করে কৃষক আদৌ লাভবান হবেন কি না এমন সংশয়ও সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ১ আগস্ট থেকে ইউরিয়া সারের দাম বেড়েছে কেজিতে ৬ টাকা এবং ৫ আগস্ট থেকে ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ৩৪ টাকা বেড়ে যাওয়ায় ধান উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাপক হারে। এমনিতেই তারা উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পান না। যে কারণে ধান চাষে উৎসাহ হারিয়েছেন কৃষক। চলতি বছর রেকর্ড পরিমাণ ধান-গম আমদানিতে দেশের অর্থনীতি কঠিন চাপের মুখে পড়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, কৃষিকাজে বছরে ৯ লাখ ৭২ হাজার টন ডিজেল ব্যবহার হয়। এতে কৃষকের খরচ হয় ৭ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা। নতুন করে প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ৩৪ টাকা বাড়ানোয় এখন ব্যয় হবে ১১ হাজার ৮০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ডিজেলের দাম বাড়ায় কৃষকের ব্যয় বাড়ছে ৩ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া নভেম্বরে শুরু হতে যাওয়া বোরো মৌসুমে ইউরিয়া সারের প্রয়োজন হয় বেশি। প্রতি কেজিতে ৬ টাকা বাড়ায় বোরো আবাদে শুধু ইউরিয়া সারের খরচ বাড়ছে ৩৭ শতাংশ। ১৩ বছর ধরে চাল উৎপাদন বাড়লেও প্রতি বছর চাল আমদানি করতে হচ্ছে। খাদ্য হিসেবে আড়াই কোটি টন চালের চাহিদা থাকলেও উৎপাদন হচ্ছে পৌনে ৪ কোটি টনের বেশি। তবু বর্তমানে রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল। অন্যদিকে উৎপাদন খরচ না ওঠায় কয়েক বছর ধরেই ধানের আবাদ ছেড়ে অন্য ফসলে ঝুঁকছেন কৃষক। কমছে ধানের জমি। নীলফামারী জেলায় গত বছর ২৩ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হলেও চলতি বছর ভুট্টার জমি ২ হাজার হেক্টর বেড়েছে। অর্থাৎ কৃষক ধানের বদলে ভুট্টা বা অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকছেন। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষিবান্ধব পদ্ধতি গড়ে তুলতে হবে যাতে কৃষক তার উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পান। এটি সম্ভব হলে ধান উৎপাদনে উৎসাহী হবেন কৃষক। পাশাপাশি গম উৎপাদনে উৎসাহী করা গেলে হাজার হাজার কোটি টাকার আমদানি ব্যয় সাশ্রয় হবে। শক্তিশালী হবে দেশের অর্থনীতি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর