মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

বাড়তি খরচ জনগণ কেন দেবে

বাংলাদেশের সরকারি খাতের প্রায় প্রতিটি প্রকল্পের কাজ সময়মতো সম্পন্ন না হওয়া ঐতিহ্যের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ঐতিহ্যের কালো ঘেরাটোপ থেকে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা কিছুতেই বেরিয়ে আসতে চাইছেন না। জনগণের ট্যাক্সের টাকা লুটেপুটে খাওয়ার সুযোগ থাকায় সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে কীভাবে সময় ক্ষেপণের মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরা যায় তা তাদের একাংশের কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের ভিত্তিতে বাস্তবায়িত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ক্ষেত্রেও সরকারি প্রকল্পের ঐতিহ্য অনুসৃত হচ্ছে এমন অভিযোগ দানা বেঁধে উঠছে পাঁচ বছরের প্রকল্প ১২ বছরেও শেষ না হওয়ায়। যে শম্বুকগতিতে এ প্রকল্পের কাজ চলছে তাতে প্রকল্প পরিচালকের তথ্যানুযায়ী ১২ বছরে ৫১ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অর্থাৎ এ গতিতে চলতে থাকলে তা বাস্তবায়নে আরও এক যুগ কেটে যাবে। রাজধানীর যানজট নিরসনে নেওয়া এ প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের ভিত্তিতে বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি এখনো সার্বসাকল্যে অর্ধেক। এরই মধ্যে তিন দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। ২০১১ সালে শুরু করা এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ২১৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। সবশেষ মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। আর এতে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রকল্পের প্রথম অংশ ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত চলতি বছর ডিসেম্বরে খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সেতু বিভাগ। ঢাকা-কুতুবখালী পর্যন্ত এ প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য ১৯.৭৩ কিলোমিটার। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বিমানবন্দর থেকে চিটাগাং রোড পর্যন্ত যেতে লাগবে মাত্র ২০ মিনিট। এতে অবশ্য উচ্চহারে টোল দিতে হবে ব্যবহারকারীদের। সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ায় বাড়তি যে ৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে তা প্রকল্পসংশ্লিষ্ট নয়, জনগণের পকেট থেকে এর অর্ধেক ব্যয় হবে। অথচ এ সময় ক্ষেপণে কোনোভাবেই জনগণ দায়ী নয়। কিন্তু বাড়তি খরচের ব্যয় কেন তারা বহন করবে তা সবাই ভেবে দেখলেই ভালো করবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর