প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় সফর কেন্দ্র করে ৩৩ দফার যৌথ বিবৃতিতে তৃতীয় যে-কোনো দেশে পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশকে নিজ ভূখন্ড ব্যবহারের ট্রানজিট দেওয়ার কথা জানিয়েছে ভারত। যৌথ বিবৃতিতে দুই দেশ সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে একমত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে তিস্তা চুক্তির জন্য আবারও অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। একইভাবে ভারত আগ্রহ দেখিয়েছে ফেনী নদীর বিষয়ে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চেয়েছে বাংলাদেশ এবং চলতি বছরই দুই দেশ সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি (সেপা) সইয়ের জন্য আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে। চার দিনের ভারত সফরে সোমবার দিল্লি পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় দুই দেশের মধ্যে সাতটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর উপলক্ষে ঢাকা ও নয়াদিল্লি থেকে একযোগে ঘোষিত যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়- বাংলাদেশকে ট্রানজিট সুবিধার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য ভারতের স্থলবন্দর, বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে নেওয়া যাবে। এ পরিবহনের জন্য বাংলাদেশকে কোনো শুল্ক ফি দিতে হবে না ভারতকে। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়- উভয় নেতা দ্বিপক্ষীয় সব বিষয় আলোচনা করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য ও কানেকটিভিটি, পানিসম্পদ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, উন্নয়ন সহযোগিতা, সংস্কৃতি এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগসহ বিভিন্ন বিষয়। পাশাপাশি তাঁরা ভবিষ্যতে নতুন নতুন ক্ষেত্র যেমন পরিবেশ, জলবায়ু, সাইবার নিরাপত্তা, তথ্যপ্রযুক্তি, মহাকাশবিজ্ঞান, পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ও সমুদ্র অর্থনীতিতে সহযোগিতার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। দুই নেতা চলমান রেল সহযোগিতা ও উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। যৌথ বিবৃতিতে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে দুই পক্ষের আলোচনার কথা বলা হলেও এ বিষয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়নি। দুই দেশের বন্ধুত্বের স্বার্থে তিস্তার পানি বণ্টনে ভারত বাংলাদেশকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে এমনটিই প্রত্যাশিত।