শিরোনাম
শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ক্যাঙারু নয়, বিড়াল দ্বীপ

ক্যাঙারু নয়, বিড়াল দ্বীপ

প্রচুর ক্যাঙারু থাকার কারণেই অস্ট্রেলিয়ার দ্বীপটির নামকরণ হয়েছিল ক্যাঙারু আইল্যান্ড। কিন্তু ক্যাঙারু আইল্যান্ডে ক্যাঙারুর স্থান দখল করে নিয়েছে বনবিড়াল। সমুদ্রসৈকত থেকে শুরু করে সরকারি রাস্তায় এদের অবাধ বিচরণ। চলাফেরা করে নির্ভীকচিত্তে, কাউকেই তোয়াক্কা করে না। এসব দেখে স্থানীয়দের অনেকেই দ্বীপের নাম পাল্টে ‘ক্যাট আইল্যান্ড’ রাখার দাবি জানাচ্ছেন। দ্বীপে মানুষ মাত্র ৪ হাজার। কিন্তু বনবিড়াল আছে লক্ষাধিক। অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম এ দ্বীপটির মতো অন্য কোথাও এত বনবিড়াল নেই। অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূল কেপ জারিভস থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে ক্যাঙারু আইল্যান্ডের অবস্থান। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্যের জন্য দ্বীপটি বিখ্যাত। ম্যাথু ফিল্ডার্স দ্বীপটি আবিষ্কার করার পর দ্বিতীয়বার সেখানে গিয়ে যে পরিবেশ দেখে এসেছিলেন তা এখনো প্রায় বহাল আছে। তবে হেরফের ঘটেছে প্রাণীর সংখ্যায়। সিল, ওয়ালাবি, ক্যাঙারু, কোয়েলাসহ বিভিন্ন দেশজ প্রাণী হুমকির সম্মুখীন। এর একমাত্র কারণ বনবিড়াল। গলিত মাংস এদের প্রিয় খাবার। ক্যাঙারু মারা যাওয়ার পর এরা খুব আয়েশ করে খায়। দলবদ্ধ হয়ে মানুষের ওপর হামলা চালায়। ক্যাঙারু আইল্যান্ডের অনেক লোক মনে করে বনবিড়াল তাদের জীবনের বড় এক সমস্যা। কাজেই এদের সংখ্যা কমিয়ে ফেলা প্রয়োজন।  যেখানে ইঁদুর থাকবে সেখানে বিড়ালও থাকবে, এটাই নিয়ম কিন্তু ক্যাঙারু আইল্যান্ডে বিড়ালের ইঁদুরভোজ নেই। বনবিড়াল নিরীহ প্রাণীদের মাংস খেয়ে বেঁচে থাকে। সেজন্য অনেক ক্ষুদ্র প্রাণীর অস্তিত্বই হুমকির সম্মুখীন। সমস্যাটি নিয়ে পরিবেশবাদীরা ইতোমধ্যে সরব হয়ে উঠেছেন। বনবিড়াল নিধনের চিন্তাভাবনাও চলছে। নিধনের পক্ষে- বিপক্ষে যুক্তি রয়েছে পর্যাপ্ত।

অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখন্ডের লোকদের প্রিয় খাবার বনবিড়ালের মাংস। ধারণা করা হয়, সারা অস্ট্রেলিয়ায় এ প্রাণীর সংখ্যা প্রায় ১ মিলিয়ন। এরা প্রতি বছরে হত্যা করছে আনুমানিক ১ বিলিয়ন প্রাণী। বিষয়টি ভাবার মতোই বটে। এ সমস্যা নিয়ে প্রায়ই হচ্ছে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম। সংসদে পর্যন্ত আলোচনা হয়। যুক্তি-পাল্টা যুক্তির মধ্য দিয়েই ইতি ঘটছে। আসা যাচ্ছে না কোনো সিদ্ধান্তে। কেউ কেউ বলেন, বনবিড়ালকে তাদের মতোই থাকতে দেওয়া উচিত। আবার কারও কারও অভিমত, এ প্রাণীগুলোকে হত্যার মাধ্যমে অন্যদের বাঁচতে দেওয়া উচিত।

আফতাব চৌধুরী

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর