বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
ইতিহাস

হিউয়েন-সাং

হিউয়েন-সাং

হিউয়েন-সাং সাত শতকের চৈনিক বৌদ্ধ তীর্থযাত্রী। তিনি ভারত ও বাংলাদেশ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বিবরণ লিখে গেছেন। মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি বৌদ্ধ ভিক্ষু হন। সুই রাজবংশের পতন-পরবর্তী রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার কারণে তিনি সিচুয়ানের (জিচুয়ান) জিংদুতে চলে যান এবং সেখানে ২০ বছর বয়সে সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করেন। বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কে জানার জন্য হিউয়েন-সাংয়ের ভারত ভ্রমণের অভিপ্রায় জাগ্রত হয়। ফা-হিয়েনের ভারত ভ্রমণ সম্পর্কে তিনি অবহিত ছিলেন এবং তিনিও চীনে পৌঁছানো বৌদ্ধ ধর্মশাস্ত্রের অসম্পূর্ণতা ও ভুল ব্যাখ্যা সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সাত শতকের চীনা বৌদ্ধ তীর্থযাত্রী হিউয়েন-সাংয়ের বাংলাদেশ সফরের মধ্য দিয়ে। ৬২৯ খ্রিস্টাব্দে চীন থেকে যাত্রা করে হিউয়েন-সাং উত্তরের বাণিজ্যপথ ধরে মধ্য এশিয়ার কুচ হয়ে উত্তর ভারতে পৌঁছান। কনৌজ নগরে পৌঁছে তিনি মহান ভারতীয় সম্রাট হর্ষবর্ধনের আতিথ্য লাভ করেন। তিনি মগধের বিভিন্ন বৌদ্ধ তীর্থস্থান পরিদর্শন করেন এবং তৎকালীন বিখ্যাত বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্র নালন্দা মহাবিহারে পড়াশোনায় অতিবাহিত করেন। এরপর তিনি বাংলার বিভিন্ন এলাকা এবং দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারত ভ্রমণ করে পুনরায় মধ্য এশিয়া হয়ে চীনে প্রত্যাবর্তন করেন। হিউয়েন-সাংয়ের গ্রন্থ জিউ জি (সি-উ চি) মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ওপর সর্ববৃহৎ ও পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ সংবলিত গ্রন্থ। বাংলাদেশে অবস্থানকালে এ অঞ্চলের রাজনৈতিক ও সামাজিক চিত্র সযতেœ সংগ্রহ করেছেন। বাংলায় ভ্রমণকৃত বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে ছিল প্রধানত কর্ণসুবর্ণের নিকটবর্তী রক্তমৃত্তিকা, পু-্রনগর ও এর সংলগ্ন এলাকা, সমতট ও তাম্রলিপ্তি। তাঁর বিবরণ বাংলার প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে ব্যাপক সহায়তা করে। কোথাও কোথাও তাঁর বিবরণ পক্ষপাতদোষে দুষ্ট হলেও সাত শতকের বাংলার ইতিহাস, বিশেষ করে শশাঙ্কের শাসনাধীন গৌড় রাজ্য সম্পর্কে তিনি আলোকপাত করেন।

জাফর খান

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর