শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

এসএসসি পরীক্ষা

বিপুল শিক্ষার্থীর ঝরে পড়া উদ্বেগজনক

বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে শুরু হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় দেশের ২৯ হাজার ৫৯১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন পরীক্ষার্থীর অংশ নেওয়ার কথা। কিন্তু প্রথম দিনের পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল ৩৩ হাজার ৮৬০ জন পরীক্ষার্থী। সোজা কথায় মাধ্যমিক পর্যায়েই ঝরে পড়েছে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার জন্য মনোনীত হওয়ার পর কেন তারা ঝরে পড়ল তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। একই সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকেও বিষয়টি পর্যালোচনার দাবি রাখে। আমাদের ধারণা, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় আগেই যারা শিক্ষার ট্রেন থেকে ঝরে পড়েছে, তাদের এই বিয়োগান্তক পরিণতির পেছনে পারিবারিক অর্থনৈতিক দুরবস্থা প্রধানত দায়ী। দুই বছরের করোনাঘাতে দেশের কয়েক কোটি মানুষ অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছে। ক্ষুধার রাজ্যে যেখানে পৃথিবী গদ্যময়, সেখানে অনেক অভিভাবকের কাছে সন্তানদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া বিলাসিতাই মনে হয়েছে। যে কারণে তাদের ঠেলে দেওয়া হয়েছে জীবিকার সংগ্রামে। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিপুলসংখ্যক মেয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের এক বৃহৎ অংশের শিক্ষাজীবনের ইতি ঘটেছে বিয়ের কারণে। গ্রামগঞ্জ তথা দেশজুড়ে বখাটেদের যে অবাধ রাজত্ব, সেখানে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া মেয়ে শিক্ষার্থীদের একাংশের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে দরিদ্র পরিবারের মেয়েরা বখাটে নামের মানুষ শকুনদের দ্বারা প্রায়ই উত্ত্যক্ত হয় গ্রামগঞ্জ এবং মফস্বল শহরগুলোতে। এমনকি রাজধানীর শহরতলিতেও তাদের দাপট প্রকট।  বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর ঝরে পড়া জাতির জন্য একটি উদ্বেগজনক ঘটনা। এই ব্যাধির উপশমে কী করণীয় সে বিষয়ে সরকার, স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধি, শিক্ষক এবং সামাজিক নেতাদের ভাবতে হবে। মেয়ে শিক্ষার্থীদের বাল্যবিয়ে রোধে সব কিছুর আগে গ্রামগঞ্জে-মহল্লার বখাটে নামের ঘৃণ্য শকুনদের নিরস্ত করতে হবে শক্তভাবে। পরীক্ষার্থীদের জন্য শুভ কামনা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর