রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

অশান্ত মিয়ানমার সীমান্ত

বন্ধ হোক অসংযত আচরণ

মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে প্রায় এক মাস ধরে চলছে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ। সে সংঘর্ষের উত্তাপ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যেও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। কারণ বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর নিক্ষিপ্ত গোলাগুলির শব্দে প্রকম্পিত হয়েছে সীমান্ত এলাকা। এমনকি গত এক মাসে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সেনা হেলিকপ্টারের অনুপ্রবেশ ঘটেছে অভিযানকালে। তাদের গোলা পড়েছে বাংলাদেশ ভূখন্ডে। এ ব্যাপারে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র দফতরে ডেকে এনে কড়া প্রতিবাদও জানানো হয়েছে। সৎপ্রতিবেশীসুলভ মনোভাবের ব্যত্যয় ঘটিয়ে গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে বাংলাদেশ সীমান্তে নো ম্যানস ল্যান্ডে নিক্ষিপ্ত মর্টার শেলে একজন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। নো ম্যানস এলাকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অধিবাসী ১৮ বছরের ওই যুবক নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছে আরও পাঁচজন। এর আগে শুক্রবার দুপুরে বান্দরবানের ঘুমধুম-তমব্রু সীমান্তে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে এক চাকমা যুবকের পা উড়ে যায়। এক মাসের বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর গোলাগুলি বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেন না। তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় পাঁচ বছর ধরে আশ্রয়শিবির গড়ে তুলে বসবাস করছে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ৪ হাজার ২০০-এর বেশি রোহিঙ্গা। আশ্রয়শিবির ঘেঁষে মিয়ানমারের কাঁটাতারের বেড়া ও রাখাইন রাজ্যের একাধিক পাহাড়। পাহাড়ের ওপর দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশের একাধিক তল্লাশি চৌকি। তিন দিন ধরে আশ্রয়শিবিরের পিছনের পাহাড়ে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে পাহাড়ের চৌকি থেকে ব্যাপকহারে গুলি ছোড়ার পাশাপাশি মর্টার শেল নিক্ষেপ করা হচ্ছে। কী কারণে এত বেশি গোলা ও মর্টার শেল ছোড়া হচ্ছে তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সে দেশের বিদ্রোহীদের সংঘাত তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু সে সংঘাতের উত্তাপ যাতে বাংলাদেশে অনুভূত না হয় তা দেখা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। এ ব্যাপারে তাদের সতর্ক হতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর