বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

আন্তর্জাতিক লেনদেন

ডলার-নির্ভরতার অবসান ঘটুক

আন্তর্জাতিক লেনদেনে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর থেকে ডলারের ওপর নির্ভরশীল পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশ। এ নির্ভরশীলতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দায় মদদ জুগিয়েছে ডলারের দাম অপ্রত্যাশিতভাবে বৃদ্ধির ঘটনা। এ প্রেক্ষাপটে ব্যবসায়ী মহল আন্তর্জাতিক লেনদেনে বিকল্প নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার প্রস্তাব করেছে সরকারের কাছে। যাতে ডলারের পাশাপাশি ইউরেপীয় ইউনিয়নের ইউরো, ভারতীয় রুপি, চীনা ইউয়ান, জাপানি ইয়েন, রুশ রুবল বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়। বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি করে চীন ও ভারত থেকে। ডলারের বদলে এ দুটি দেশ থেকে আমদানির ক্ষেত্রে ইয়েন ও রুপি ব্যবহার করলে ভোগান্তি কমবে। দেশের ব্যবসায়ীরা বাড়তি দামে ডলার কেনার ঝামেলা থেকে রেহাই পাবেন। বর্তমানে আন্তর্জাতিক লেনদেনের বেশির ভাগই সংঘটিত হয় সুইফটের মাধ্যমে। ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রার পর থেকে লেনদেনের নিরাপদ ও প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে সুইফট। সারা বিশ্বের ২০০-এর বেশি দেশের ১১ হাজার আর্থিক প্রতিষ্ঠান সুইফটের মাধ্যমে লেনদেন করে। বাংলাদেশের বৈদেশিক লেনদেনও পরিচালিত এ সিস্টেমে। আর্থিক লেনদেনের এ নিরাপদ মাধ্যমটির বিকল্প কিছু ব্যবস্থাও গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার এসপিএসএফ ও চীনের ক্রসবর্ডার ইন্টারব্যাংক পেমেন্ট সিস্টেম বা সিআইপিএস। চীনের এ লেনদেন মাধ্যমটিকে সুইফটের সম্ভাবনাময় বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রাশিয়াও এ সিস্টেমে যুক্ত হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার বেশ কয়েকটি ব্যাংককে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ব্যবস্থা সুইফট থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর ফলে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের লেনদেন প্রক্রিয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক চীনা মুদ্রায় লেনদেনের অনুমতি দিয়েছে। ভারতের সঙ্গে রুপিতে লেনদেনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। লেনদেনে জাপানি ইয়েন ব্যবহার ও ডলারের ওপর নির্ভরতা কমাতে সহায়তা করবে। ডলারের কাছে জিম্মি হওয়ার বিড়ম্বনা কাটাতে এ বিষয়ে ত্বরিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর