কুড়িগ্রামে এক কেন্দ্র সচিবের নেতৃত্বে ফাঁস হয়েছে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র। একটি-দুটি নয়, তার বইয়ের তাকে পাওয়া গেছে ছয়টি বিষয়ের প্রশ্নপত্র। কেন্দ্র সচিবসহ শিক্ষকবেশী তিন জোচ্চোরকে পুলিশ ইতোমধ্যে গ্রেফতার করেছে। শিক্ষকদের বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। তবে সময়ের বিবর্তনে চোর-মহাচোরেরাও যে এ পেশায় যুক্ত হয়ে শিক্ষকতা পেশার মুখে চুনকালি লাগাচ্ছে প্রশ্নপত্র ফাঁসে কেন্দ্র সচিবসহ তিন শিক্ষক নামধারীর গ্রেফতার তারই প্রমাণ। কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষা শুরুর প্রথম থেকেই প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠে। ১৯ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষার আগের রাতেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশ্ন ছড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। টাকার বিনিময়ে ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের উত্তরসহ প্রশ্নও পাওয়া যায় পরীক্ষার আগেই। ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই নেওয়া হয় দিনাজপুর বোর্ডের ওই দুই পরীক্ষা। এসএসসির ছয়টি বিষয়ের প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পাওয়ার পর বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, দিনাজপুর এক বিজ্ঞপ্তিতে চারটি পরীক্ষা স্থগিতের কথা জানিয়েছে। সেগুলো হলো- গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, কৃষিবিজ্ঞান ও রসায়ন। এ ঘটনায় প্রশ্নফাঁসের মূল হোতা ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের সচিব লুৎফর রহমানসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। জীববিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিতের প্রশ্ন ফাঁস হলেও সে পরীক্ষাগুলোর নির্ধারিত সময়ের আগেই নতুন প্রশ্ন ছাপানো হবে। সে কারণে ওই দুটি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, নষ্টামির গুরু কেন্দ্র সচিব ও তার সহযোগীরা প্রতিটি প্রশ্নপত্র ও উত্তরমালা ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছেন। নীতিনৈতিকতা বিসর্জনকারী সাধুবেশী সাক্ষাৎ শয়তানদের অপকর্মে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীকে ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, শিক্ষকদের ভাবমূর্তি যেভাবে তারা ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছেন তা দুর্ভাগ্যজনক। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়া হবে- আমরা এমনটিই দেখতে চাই।