শিরোনাম
সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

পরিবহন নৈরাজ্য

জিম্মি অবস্থার অবসান হোক

গণপরিবহনের নৈরাজ্য রাজধানীবাসীর জন্য নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলছে এ খাতটি। সাধারণ মানুষের প্রতিদিনের যাতায়াতে রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের ভূমিকা খুবই নগণ্য। ফলে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তা এবং পরিবহন শ্রমিকদের কাছে রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থা জিম্মি হয়ে পড়েছে। চরম স্বেচ্ছাচারিতা চলছে সিটি বাস সার্ভিসে। ভাড়ার নামে বাড়তি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে গণপরিবহন। যাত্রী স্বার্থ রক্ষায় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিআরটিসি কোনো ভূমিকাই রাখছে না। তারপরও বেসরকারি খাতের বাস মালিক-শ্রমিকরা সরকারি বিআরটিসির বাস বন্ধের জন্য আন্দোলন করছে। অনেক স্থানে বিআরটিসি বাস চলাচলে বাধা দিচ্ছে তারা। অথচ সারা দেশে বিআরটিসির বাসের সংখ্যা রাস্তায় চলাচলকারী মোট বাসের ১ শতাংশেরও কম। পরিবহন বিশেষজ্ঞদের অভিমত, সিটি সার্ভিসে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। কিন্তু বাস মালিকদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের টাউট নেতা, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণকারী বিভিন্ন সংস্থার অসৎ কর্মচারী-কর্মকর্তাদের যে মেলবন্ধন রয়েছে তা থাকা পর্যন্ত সঠিক এবং কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। বেসরকারি বাসের পাশাপাশি সরকারি খাতের বা বিআরটিসি বাসের সংখ্যা বাড়িয়ে যা ইচ্ছা তাই করার নৈরাজ্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিআরটিসি মানেই জনগণের ট্যাক্সের টাকা লুট করার সংস্থা। গত ৫০ বছরে যাত্রীসেবায় তাৎপর্যপূর্ণ কোনো অবদান রাখতে না পারলেও এ সংস্থাটির সর্বস্তরের চোর মহাচোররা শত শত কোটি টাকা অপচয় করেছে। ফলে বিআরটিসির পেছনে আরও অর্থ বিনিয়োগ করে পরিবহন খাতের শৃঙ্খলা ফেরানো অলীক কল্পনা মাত্র। সে বাস্তব বিবর্জিত পদক্ষেপ জনস্বার্থই ক্ষুণ্ণ করবে। তার বদলে পরিবহন নৈরাজ্যের অবসানে নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। বাড়তি ভাড়া, ধোঁয়া নির্গমনের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ, রাস্তা বন্ধ করে যাত্রী উঠানো-নামানো ওভারটেকিং বন্ধে প্রয়োজনে উৎকোচের কাছে নতজানু হবে না এমন কর্তৃপক্ষ সৃষ্টির কথা ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর