সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বিদায়ী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তুর্কি বংশোদ্ভূত

বিদায়ী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তুর্কি বংশোদ্ভূত

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বিদায় নিয়েছেন বরিস জনসন। সে দেশের অন্যতম গুণী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভাবা হয় তাঁকে। বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে পরিচিত ছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় কলামিস্ট হিসেবে। ডেইলি টেলিগ্রাফে সাপ্তাহিক কলাম লিখে তিনি সম্মানি পেতেন বছরে ২ লাখ ৭৫ হাজার পাউন্ড। অন্যান্য পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে লিখেও আয় করতেন বিপুল অর্থ। একটি বই লেখার জন্য তিনি ৫ লাখ পাউন্ড পাওয়ার চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী পদ চলে যাওয়ায় আর্থিকভাবে লোকসানের বদলে লাভবান হবেন বরিস। তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বের কেচ্ছা লিখে যে অর্থ আয় করতে পারবেন বাংলাদেশের মুদ্রায় তার পরিমাণ বহু কোটি টাকা। বিদায়ী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন একজন তুর্কি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ। তাঁর দাদার বাবা অর্থাৎ প্রপিতামহ আলি কামাল ১৯১৮ সালে ছিলেন তুরস্কের উসমানীয় খলিফার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁর ভাই ছিলেন খেলাফতের প্রভাবশালী রাষ্ট্রদূত। বরিস জনসনের প্রপিতামহ ছিলেন খেলাফতের ঘোর সমর্থক এবং মুস্তফা কামাল আতাতুর্কের খেলাফতবিরোধী আন্দোলনের প্রচন্ড বিরোধী। তুরস্কে কামাল আতাতুর্কের নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদীরা ক্ষমতা দখল করলে আলি কামালকে হত্যা করা হয়। আলি কামাল বিয়ে করেছিলেন এক ব্রিটিশ খ্রিস্টান শ্বেতাঙ্গ মহিলাকে। তাঁর গর্ভে জন্ম নেন বরিস জনসনের পিতামহ। তাঁর নাম রাখা হয় উসমান কামাল উইলফ্রেড জনসন। আলি কামালের হত্যাকান্ডের সময় তাঁর পুত্র উসমান কামাল উইলফ্রেড জনসন ইংল্যান্ডে ছিলেন এবং তিনি কখনই বাবার দেশে যাননি। সবারই জানা, যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বাবাও ছিলেন একজন আফ্রিকান মুসলিম। আফ্রিকার কেনিয়া থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আসেন পড়াশোনা করতে এবং ওবামার শ্বেতাঙ্গ মাকে বিয়ে করেন। বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ির পর বারাক ওবামা মায়ের কাছে থেকে যান। মুসলমান পুরুষ খ্রিস্টান ও ইহুদি নারীদের বিয়ে করতে পারেন স্ব স্ব ধর্মীয় বিশ্বাসে বহাল থাকা অবস্থায়। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, উমাইয়া খলিফাদের কারও কারও খ্রিস্টান স্ত্রী ছিল। বাবার হত্যাকান্ডের পর বরিস জনসনের দাদা তাঁর মায়ের কাছে লালিতপালিত হন। তিনি তাঁর পুত্রের নাম রাখেন মুসলিম ও খ্রিস্টান ঐতিহ্য অনুযায়ী। বরিস জনসন পূর্বপুরুষের মতো তুরস্কের উসমানিয়া খেলাফতের প্রতি মোহ পোষণ করলেও ইংরেজ পরিচয়েই গর্ববোধ করেন। বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও রাজনীতিতে সক্রিয় থাকবেন। ইউক্রেনের পাশে শক্ত অবস্থান নেওয়ায় ইউরোপের তথা বিশ্বরাজনীতিতেও তিনি আলোচিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচিত হবেন বহুদিন।

সর্বশেষ খবর