মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রয়াত অ্যাড. রফিকুল ইসলাম ও কমিশনার রফিকুল আলম

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

প্রয়াত অ্যাড. রফিকুল ইসলাম ও কমিশনার রফিকুল আলম

শুক্রবার ২৩ সেপ্টেম্বর আমার এক প্রিয় সহকর্মী টাঙ্গাইল জেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম অপ্রত্যাশিতভাবে ইহলোক ত্যাগ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মানুষটা যে এতটা হৃদয় জুড়ে ছিলেন মৃত্যুর আগে বুঝতে পারিনি। এ জীবনে খুব একটা কম মৃত্যু দেখিনি। মুক্তিযুদ্ধে কম করে ২৫-৩০ জন মহান যোদ্ধা চোখের সামনে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে ১৫-২০ জন যোদ্ধাকে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করতে দেখেছি। তারপর অনেক বছর কত মৃত্যুসংবাদ পেলাম, কত মৃত্যু দেখলাম। কিন্তু অ্যাডভোকেট রফিকের আকস্মিক মৃত্যুতে দেহমনে যে প্রভাব পড়েছে এ রকম খুব একটা বেশি অন্য কোনো মৃত্যুতে পড়েনি। মৃত্যু স্বতঃসিদ্ধ সত্য। অনেক বছর থেকে মৃত্যুকে সহজভাবে নেওয়ার একটা মানসিকতা তৈরি হয়েছে। আগে কোনো মৃত্যুসংবাদে চোখে পানি আসত, বুক ভারী হতো। যদিও হাদিস-কোরআনে আছে- মৃত্যু নিয়ে ব্যথিত হতে নেই। তবু কোনো কোনো মৃত্যু ভীষণ ব্যথা দেয়। বিশেষ করে অ্যাডভোকেট রফিকের মৃত্যু কেমন যেন বিধ্বস্ত করে ফেলেছে। এ রকম হঠাৎ মৃত্যুসংবাদ পেয়েছিলাম আকুরটাকুর পাড়ার কহিনুর ফরাজীর। ১৯৯০-এ দেশে ফিরে কহিনুরকে যেমন পেয়েছিলাম তেমনি রফিককেও পেয়েছিলাম। ’৯৯ সালে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ গঠনে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম। দোষেগুণে মানুষ। রফিকেরও হয়তো অনেক দোষ ছিল। তবু দল প্রতিষ্ঠার দিন থেকে শেষনিঃশ্বাস পর্যন্ত একজন দলীয় নিষ্ঠাবান নেতা হিসেবে সময় কাটিয়েছেন। এই তো সেদিন ৩০ আগস্ট মঙ্গলবার সারা দেশ থেকে কয়েক শ নেতা-কর্মী নিয়ে পিতার সমাধিতে গিয়েছিলাম। সেখানেও রফিক শামিল ছিলেন। শুনেছি অন্যদের বসবার সিট দিয়ে নিজে গাড়ির বনাটে চেপে গিয়েছিলেন। সব সময় দলের জন্য নিবেদিত। সব সময় সব কাজ হয়তো করতে পারেননি। কিন্তু যখন যে কাজই দেওয়া হয়েছে করার চেষ্টা করেছেন। সেই রফিক তেমন কিছু না বলেই না-ফেরার দেশে চলে গেলেন। কত সময় কত কথা বলেছি, শক্ত মন্দও যে বলিনি তা নয়। কিন্তু সব সময় মাথা নিচু করে শুনেছেন। খুব একটা দুঃখ প্রকাশ করেননি। রফিক যখন ল পাস করে সনদের জন্য বার কাউন্সিলে আবেদন করেন তখন বার কাউন্সিলের সভাপতি ছিলেন অ্যাডভোকেট সুধাংশু শেখর হালদার। বড় ভালো মানুষ ছিলেন। প্রবীণ যাঁরা তাঁরা আমাকে বড় ভালোবাসতেন, যত্ন করতেন, কথা শুনতেন। রফিক সুধাংশু শেখর হালদারকে বার সার্টিফিকেটের জন্য বলে দিতে বলেছিলেন। ওঁর সামনেই সুধাংশুদাকে ফোন করেছিলাম। ওঁর ওকালতি সনদ পেতে কোনো অসুবিধা হয়নি। দলের জন্য সারা দেশে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে যাননি। একেবারে সর্বশেষ কর্মী সম্মেলনে গিয়েছিলাম ৬ সেপ্টেম্বর কালিহাতীতে। মাঝে শরীরটা খারাপ হওয়ায় কালিহাতী থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য ফোন করেছিলাম। কেবিন ব্লকের ৩১১ নম্বর রুম রেখেছিল আমার জন্য। ৭ সেপ্টেম্বর সকালেই হাসপাতালে গিয়েছিলাম। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ৮ সেপ্টেম্বর এনজিওগ্রাম করানো হয়েছিল। ১৫ তারিখ বাড়ি ফিরেছিলাম। কতবার কত অসুখবিসুখ হলো। করোনার পর যে দুর্বলতা দেখা দিয়েছিল তা এখনো কাটেনি বরং আরও খারাপ হয়েছে। টাঙ্গাইল এসেছিলাম ২২ সেপ্টেম্বর। ওইদিন রাতেও অ্যাডভোকেট রফিক এদিকওদিক ছোটাছুটি করেছেন। রাত ১১টা পর্যন্ত বাইরেই ছিলেন। শুনতাম রফিক আর বীরপ্রতীক হাবিবুর রহমান তালুকদার প্রতিদিন টাঙ্গাইল পুরান বাসস্ট্যান্ডে আড্ডা দিতেন, চায়ের দোকানে বসতেন। তিনি হঠাৎই চলে গেলেন। ঘটনাটা কেমন যেন লাগছে। ২৩ তারিখ বাদ আসর বিবেকানন্দ স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে ওঁর জানাজায় প্রচুর লোকসমাগম হয়েছে। মনে হলো পাড়ার সবাই এসেছেন। যথাসময়ে জানাজায় গিয়েছিলাম। তেমন কিছু বলতে পারিনি। আল্লাহর কাছে শুধু প্রার্থনা করেছি আল্লাহ যেন সব ভুলত্রুটি ক্ষমা করে তাঁকে বেহেশতবাসী করেন। আরও একবার সন্ধ্যার পর বিবেকানন্দ স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে জানাজায় শরিক হয়েছিলাম। সেটা দুলাভাই এ কে এম শহীদুল হকের জানাজা। রাত সাড়ে ৯টা-১০টার দিকে অভাবনীয় লোক হয়েছিল সে জানাজায়ও। এ কে এম শহীদুল হকের বাড়ি শেরপুরের চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুর আগলা। কর্মজীবনে টাঙ্গাইল এসেছিলেন। ময়মনসিংহ বা শেরপুর আর কখনো স্থায়ী হননি। টাঙ্গাইলেই স্থায়ী হয়েছিলেন। টাঙ্গাইলেই মাটি হয়েছে। কার জন্ম আর মৃত্যু কোথায় কেউ বলতে পারে না। খুব বেশি মানুষ নেই যেখানে জন্ম সেখানেই শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করে অথবা মাটি পায় কিংবা শ্মশানে যায়। কিছু ভাগ্যবানেরই জন্ম ও মৃত্যু অথবা জন্ম আর শেষবিদায় একই জায়গায় হয়। একজন নিবেদিত রাজনৈতিক কর্মী রাজনৈতিক নেতা আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। অ্যাডভোকেট রফিকের অভাব কাটতে নিশ্চয়ই সময় লাগবে। আল্লাহ যেন ওঁর পরিবার-পরিজনকে তাঁর সুশীতল ছায়াতলে রাখেন।

আজ কিছুদিন দেশ-দুনিয়ার কোনো সঠিক দিশা পাচ্ছি না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন হাসিনা কদিন আগে সরকারিভাবে ভারত সফরে গিয়েছিলেন। পরপরই ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে। রানি এলিজাবেথ ৭০ বছর ব্রিটিশ সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। অত লম্বা সময় আর তেমন কেউ সিংহাসনে থাকেননি। ব্রিটিশ রাজসিংহাসন খুবই গৌরবের। আগে পৃথিবীর এক বড় অংশ ছিল ব্রিটিশরাজের অধীন। এখন শেষ হতে হতে মাত্র কয়েকটি দেশ আছে যারা এখনো প্রতীকীভাবে ব্রিটিশরাজকে মান্য করে। বহুদিন পর ব্রিটিশরা রাজা পেল। সেই সঙ্গে কমনওয়েলথও একইভাবে রাজার অধীনে এলো। দেখা যাক রাজার শাসনে কমনওয়েলথ কতটা ফুলে ফলে সৌরভে ভরে ওঠে। আমার বোন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টি অনুষ্ঠান শেষে জাতিসংঘে গেছেন ৭৭তম অধিবেশনে অংশ নিতে। কিন্তু কোথাও অবস্থা খুব একটা ভালো না। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষের কারণে সারা পৃথিবী টালমাটাল। কবে এর শেষ হবে কেউ জানে না। গরিবের পেটে লাথি, তাদের জীবন ওষ্ঠাগত। এখন আর সাধারণ মানুষ ভরপেট খাওয়ার চিন্তা করতে পারে না। কারোর দেশের প্রতি যতটা নিষ্ঠা থাকার কথা যতটা সততা থাকার কথা সেসবের তেমন বালাই নেই। একসময় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আমরা মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলাম। কিন্তু এখন এত বছর পর রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত পাঠাতে না পেরে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, বাংলাদেশের মানবিক গুণ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। রোহিঙ্গা সমস্যা দেশের আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যায় রূপ নিতে চলেছে। এ ক্ষেত্রে মনে হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশকে যদি রোহিঙ্গাদের প্রশ্নে একত্র করতে পারতেন, এক সুতায় গাঁথতে পারতেন তাহলে তাঁর কর্তৃত্ব এবং নেতৃত্ব আরও অনেক বেশি পাকাপোক্ত, সুদৃঢ় হতো। কিন্তু সময়ের কাজ সময়ে হয়নি। যার খেসারত দিতে হচ্ছে এখন সবাইকে। দ্বিখন্ডিত ত্রিখন্ডিত জাতির তেমন কোনো ভবিষ্যৎ নেই। ঐক্যবদ্ধ বাঙালি জাতির ভবিষ্যৎ যতটা উজ্জ্বল, বিভক্ত জাতির তেমন সম্ভাবনা কখনো ছিল না, ভবিষ্যতেও হবে না। জাতিকে অগ্রগতির মহাসোপানে পৌঁছাতে হলে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তা না হলে কোনো মুক্তি নেই। প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে নতুন নতুন নানা কথা শুনছি। কিন্তু আমাদের যতটা সতর্ক থাকার কথা জাতিগতভাবেই আমরা ততটা সতর্ক নই। বিরোধী দল আছে সরকার পতন নিয়ে, সরকার আছে বিরোধী দল দলন নিয়ে। কেউ আসল সত্য খুঁজছে না, খোঁজার চিন্তাও করছে না। যতক্ষণ সত্য এড়িয়ে চলা হবে ততক্ষণ কোনো সমস্যার সমাধান হবে না। বরং নতুন নতুন সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে। কোনো সমস্যা ব্যাপকভাবে মাথা চাড়া দেওয়ার আগেই সমাধান অথবা নির্মূল করা হলো বুদ্ধিমানের কাজ। তা যারা করতে পারেন তারাই সফল। কিন্তু যারা সময়ের কাজ সময়ে করেন না বা করতে পারেন না তারা যত চেষ্টাই করুন সফলতার সোনালি ফসল কখনো ঘরে তুলতে পারেন না। আমাদের দেশে সবচেয়ে বড় সমস্যা জাতীয় ঐক্য, জাতীয় আস্থার অভাব। যত কষ্টই হোক এসব থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। জাতিসংঘে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কতটা কী ভূমিকা রাখতে পারবেন তা তিনিই জানেন। কিন্তু সমস্যার প্রধান জট বাইরে নয়, দেশের অভ্যন্তরে এবং তার সমাধান করতে হবে দেশের ভিতর থেকে জনসাধারণকে নিয়ে। বাইরের মাতাব্বরিতে তেমন খুব একটা কাজ হবে না।

সেই ১৯৫০ সালে গুটিগুটি পায়ে টাঙ্গাইল এসেছিলাম। আকুরটাকুর পাড়ায় ছোট থেকে বড় হয়েছি। সমবয়সী আশপাশে যারা ছিল তারা প্রায় সবাই বন্ধুর মতো, আপনজনের মতো ছিল। বড়রা তো চলে গেছেনই, ছোটরাও অনেকে গেছেন। রেজিস্ট্রিপাড়ার আমাদের শিক্ষক রঞ্জিতকান্ত সরকার সেই কবে চলে গেছেন। গত পরশু রফিকুল আলম নামে এক কমিশনার চলে গেলেন। বেশ কিছুদিন থেকেই অসুস্থ ছিলেন। মাত্র দু-এক দিন আগে অপারেশন করে পেসমেকার বসানো হয়েছিল। কিন্তু বাঁচেননি। এখন ঠিক মনে নেই রফিকুল আলমের হাত ভেঙে ছিল কীভাবে কী করে। ভাঙা হাত নিয়েই দারুণ সুন্দর খেলতেন। তখন তো ম্যারাডোনা ছিলেন না, পেলে ছিলেন না। টাঙ্গাইলে আলমই ছিলেন আমাদের কাছে ম্যারাডোনা। অ্যাডভোকেট রফিকের কুলখানি ছিল। মাইকে শুনেছিলাম রেজিস্ট্রিপাড়ার আলম কমিশনার ইন্তেকাল করেছেন। বাদ আসর পুরান বাসস্ট্যান্ড মসজিদে জানাজা। গিয়েছিলাম। মনে হয় ৪০-৫০ বছর পর পুরান বাসস্ট্যান্ড মসজিদ এলাকায় গিয়েছিলাম। স্বাধীনতার পরপর বেশ কয়েকবার বাসশ্রমিক ইউনিয়নের অফিসে গেছি। মন্ত্রী লুৎফর রহমান আজাদের বাবা শ্রমিকনেতা হবিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধে অভাবনীয় ভূমিকা রেখেছিলেন। তাঁর কারণেই স্বাধীনতার পর প্রায় ছয় মাস টাঙ্গাইলের সবকটি বাসের যে আয় হয়েছিল তা বাস মালিকদের না দিয়ে বস্তাভর্তি টাকা শ্রমিক ইউনিয়নকে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই টাকায় তারা রেজিস্ট্রিপাড়ায় পরিত্যক্ত পুকুর কিনে ‘হবিবুর রহমান প্লাজা’ নামে বিশাল এক মার্কেট করেছে। তবে টাঙ্গাইলের সবকটি মার্কেট দারুণভাবে চললেও হবিবুর রহমান প্লাজা তেমন ভালো চলছে না। খন্দকার রফিকুল আলমের বাসা হবি প্লাজার আগে রহিম মৌলভির বাড়ির উত্তরে মনে হয় নরেশ চন্দ্রর ছেলে রতনদের বাড়ির সরাসরি পশ্চিমে। বাসস্ট্যান্ড মসজিদে আসরের নামাজের ইমামতি করছিলেন ক্যাবিনেট সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। আমি বাড়ি থেকে নামাজ পড়ে গিয়েছিলাম বলে বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। জানাজা নামাজে মসজিদের ভিতরে প্রথম কাতারে শামিল হই। মুসল্লিরা খুবই যত্ন করে মসজিদের ভিতরে নিয়ে গিয়েছিলেন। ভিতরে তেমন জায়গা নেই। চার-পাঁচ সারির বেশি নামাজিরা দাঁড়াতে পারেন না। ডানে দাঁড়িয়েছিলেন জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি, তাঁর ডানে এসপি সরকার মোহাম্মদ কায়সার, বাঁয়ে এমপি ছানোয়ার। ক্যাবিনেট সচিব কিছু বলতে বলেছিলেন। আমি অংশ নিইনি। ভালো লাগছিল না। এক দিন আগে তরতাজা একজন সহকর্মী অ্যডভোকেট রফিক পরপারে চলে যাওয়ায় খুবই বিধ্বস্ত ছিলাম। আলমের বড় ছেলে জানাজায় উপস্থিত লোকজনের কাছে মাফ চেয়েছে। দিলু খন্দকার নাকি জানাজায় ছিল। ক্রীড়া সাংবাদিক দিলু খন্দকার আমার খুবই প্রিয়। ওরা যখন ছোট হানাদাররা আমাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ায় স্বাধীনতার পর আমি ওয়াপদা ডাকবাংলোয় থাকতাম। সকালে ডাকবাংলোর বিশাল বারান্দায় বসলে মাঝেমধ্যে দিলুদের প্রাতর্ভ্রমণ দেখতাম। মাঝেমধ্যে আমার সঙ্গে নাশতাও করত। ক্যাবিনেট সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম নানাবাড়ি থেকে কিছুদিন পড়ালেখা করেছেন। প্রায় অনেক কিছুই ভুলে গিয়েছিলাম। দিলুর কারণে পুরনো দিনের কথা মনে পড়েছে। প্রয়াত রফিকুল আলমের মতো নিষ্ঠাবান ক্রীড়াবিদ টাঙ্গাইলে খুব বেশি কেউ ছিল না। মোটামুটি অনেকটা পূর্ণ বয়সেই রফিকুল আলম পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। আল্লাহ তাঁকে বেহেশতবাসী করুন, তাঁর পরিবার-পরিজনকে শোক সইবার শক্তি দিন।

লেখক : রাজনীতিক

www.ksjleague.com

সর্বশেষ খবর