শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

মোমিনের গুণাবলি

মো. আমিনুল ইসলাম

মোমিনের গুণাবলি

মোমিন আরবি শব্দ। যার অর্থ  বিশ্বাসী। সহজভাবে যিনি আল্লাহ রব্বুল আলামিন নাজিলকৃত সব কিতাবের ওপর, নবী-রসুলদের ওপর, পরকালে পুনরুত্থিত হওয়ার ওপর এবং তাকদিরের ওপর কোনোরকম সন্দেহ ছাড়াই বিশ্বাস স্থাপন করেন, তিনিই মোমিন বলে বিবেচিত। আল কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যারা গায়েবের ওপর ইমান আনে, নামাজ প্রতিষ্ঠা করে তাদের আমি যা কিছু দান করেছি তা থেকে আমার পথে ব্যয় করে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ৩)

আল্লাহ আরও বলেন, ‘আর রহমানের বান্দা তারাই যারা জমিনে অত্যন্ত বিনম্রভাবে চলাফেরা করে এবং জাহেল ব্যক্তিরা খারাপভাবে তাদের সম্বোধন করে, তখন তারা বলে সালাম। এবং তারা রাত অতিবাহিত করে তাদের রবের উদ্দেশে সিজদাবনত হয় ও দাঁড়িয়ে থাকে। এবং তারা বলে হে আমাদের রব তুমি আমাদের কাছ থেকে জাহান্নামের আজাব সরিয়ে নাও। তারা যখন ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না, আবার কৃপণতাও করে না বরং তাদের পন্থা এ দুয়ের মধ্যবর্তী। তারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনো মাবুদকে ডাকে না। যথার্থ কারণ ছাড়া যাকে হত্যা করা আল্লাহ হারাম করেছেন তাকে তারা হত্যা করে না। আর তারা ব্যভিচার করে না। যে ব্যক্তি এ অপরাধগুলো করে তারা সে গুনাহের ভাগিদার হবে এবং শাস্তি ভোগ করবে। এবং যারা তওবা করে, ইমান আনে ও সৎকাজ করে ফলে আল্লাহ তাদের গুনাহগুলো নেক দ্বারা বদলে দেবেন। যে ব্যক্তি তওবা করে এবং নেক আমল করে সে আল্লাহর কাছেই তওবা করে যেমন তওবা করা উচিত। দয়াময় আল্লাহর নেক বান্দা তারাও যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না এবং অসার বিষয়ের সম্মুখীন হলে আপন মর্যাদা রক্ষার্থে ভদ্রতার সঙ্গে সেখান থেকে সরে পড়ে। এরা হচ্ছে এমন লোক যখন তাদের কাছে তাদের মালিকের কোনো আয়াত পড়ে কিছু স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় তখন তারা তার ওপর অন্ধ ও বধির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে না। নেক বান্দা তারাও যারা বলে, হে আমাদের রব তুমি আমাদের স্বামী স্ত্রী ও সন্তানসন্ততিদের থেকে আমাদের জন্য চোখের শীতলতা দান কর উপরন্তু তুমি আমাদের মুত্তাকিদের ইমাম বানিয়ে দাও।’ (সুরা ফোরকান, আয়াত ৬৩-৭৪) এ আয়াতগুলো থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান একজন মোমিন হবে ভদ্র, মার্জিত ও সৎ স্বভাব সম্পন্ন এবং বিনয়ী ও নম্র। মোমিনের আল্লাহভীতি প্রবল যা অন্যদের নেই। তাদের পার্থিব জীবনের কাজকর্ম থেকে আখেরাতের চিন্তা নিবৃত্ত রাখে। জাহেল অর্থাৎ যারা শিক্ষিত এবং জাহেলি কর্মকান্ডে লিপ্ত তাদের এড়িয়ে চলে এবং বলে সালাম। মোমিনরা রাত্রি জাগরণ করে তাদের পালনকর্তার সামনে সিজদারত অবস্থায় ও দন্ডায়মান অবস্থায়। রাত জেগে ইবাদত করা সহজ নয়। কারণ রাত হলো নিদ্রাযাপন ও আরামের। অর্থাৎ এরা দিনরাত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইবাদতে মশগুল থাকে। রসুল (সা.) বলেন, ‘নিয়মিত তাহাজ্জুদ আদায় কর, কেননা এটা তোমাদের পূর্ববর্তী সব নেককারের অভ্যাস ছিল। এটা তোমাদের আল্লাহর নৈকট্য দানকারী, মন্দ কাজের কাফফারা এবং গুনাহ থেকে নিবৃত্তকারী।’ (ইবনে খুজাইমা) মোমিনরা অপব্যয় করে না। তারা মিতব্যয়ীর পথ অনুসরণ করে। এরা কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে না এবং ব্যভিচারের নিকটবর্তীও হয় না। মোমিনদের বৈশিষ্ট্য হলো তারা জেনেশুনে আজেবাজে কথা ও কাজ শুনতে বা দেখতে অথবা অংশ নিতে পছন্দ করে না। আখেরাতের কথা ও আল্লাহর আয়াত স্মরণ করে এরা চিন্তাভাবনা করে, উদাসীন হয় না।

আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের তাঁর মোমিন বান্দা হওয়ার তৌফিক দান করুন।

 

                লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর