শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রবীণদের হালহকিকত

আরও কল্যাণমুখী উদ্যোগ নেওয়া দরকার

দেশ ভালো থাকলে মানুষ ভালো থাকে। আজকের যুগে কোনো দেশ ভালো থাকবে কি না তা অনেকাংশে নির্ভর করে বৈশ্বিক অবস্থার ওপর। সেদিক থেকে বাংলাদেশ শুধু নয়, দুনিয়ার দু-একটি বাদে কোনো দেশই খুব একটা ভালো নেই। দীর্ঘ আড়াই বছরের মহামারির পর রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ দুনিয়াজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি করেছে। তার উত্তাপ পড়ছে বাংলাদেশেও। দেশের সাধারণ মানুষ খুব একটা ভালো নেই। নুন আনতে যাদের পান্তা ফুরায় তাদের অবস্থা সহজেই অনুমেয়। বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতির এ উন্নয়নশীল দেশের প্রবীণরাও যে ভালো নেই তা বোঝাতে বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ধনাঢ্য পরিবার ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ছাড়া অন্য সব প্রবীণ তাদের সন্তানদের আয় উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল। সেখানে রয়েছে হতাশার কালো ছায়া। কারণ সন্তান বা পরিবারের উপার্জনকারী সদস্যদের আয়ের ক্ষেত্রে যে সংকট, তার অপপ্রভাব প্রবীণদের জীবনকেও কষ্টকর করে তুলছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি প্রবীণদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ১ কোটি ৫৩ লাখের বেশি প্রবীণ নাগরিক রয়েছেন, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৯ শতাংশের বেশি। দেশের এ দেড় কোটির বেশি প্রবীণ নাগরিককে বিশেষায়িত আইডি (পরিচয়পত্র) কার্ড দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের, যারা সংশ্লিষ্ট কার্ড দিয়ে প্রবীণ নাগরিকের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন। ইতোমধ্যে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর কল্যাণ ও সুরক্ষায় কর্মকৌশল ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। এজন্য চলতি অর্থবছর এ খাতের বরাদ্দ রয়েছে ৭ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা। এ বরাদ্দের টাকা বয়স্ক ভাতা, বিধবা বা স্বামীনিগৃহীতা মহিলা ভাতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতাসহ নয় ক্যাটাগরির প্রবীণের জন্য ব্যয় করা হবে। প্রবীণদের কল্যাণে সরকারের নানা উদ্যোগ থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা যথেষ্ট নয়। এ দুরবস্থার অবসানে প্রবীণদের কল্যাণে আরও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের অর্থনীতিকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে হবে সার্বিক জনকল্যাণের স্বার্থে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর