রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

উত্তপ্ত রাজনীতি

গণতন্ত্রের স্বার্থেই চাই সংযম

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে হঠাৎ। নির্বাচন সামনে রেখে সরকার ও বিরোধী দল রাজনীতির মাঠ দখলে তৎপর হবে এতে অস্বাভাবিকতার কিছু নেই। কিন্তু নিজেদের অবস্থান জানান দিতে লাঠিসোঁটার প্রদর্শন কোনোভাবেই কাক্সিক্ষত নয়। একইভাবে সহিংসতা দমনের নামে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বাড়াবাড়ি বিয়োগান্ত পরিণতি ডেকে আনবে এমনটিও আশা করা হয় না। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত নয় মাসে বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনসহ রাজনৈতিক সংঘাত-সহিংসতার ৩৮৭ ঘটনায় ৫৮ জন নিহত ও ৫ হাজার ৪০০ জন আহত হয়েছেন। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা চলমান এ পরিস্থিতিতে নেতিবাচক ইঙ্গিতের আভাস দিয়েছেন। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে দুর্বৃত্তায়ন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা। রাজনৈতিক অঙ্গনে সুস্থ পরিবেশ সৃষ্টি না হলে সংঘাত মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে এমন আশঙ্কা বোদ্ধাজনদের। রাজনীতি যখন মানুষের কাছে ব্যবসা হয়ে যায় তখন সহিংসতা অনিবার্য হয়ে ওঠে। অর্থ, শক্তি ও দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ না হলে সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ কখনো প্রত্যাশা করা যায় না। যদিও আমরা হামেশাই এসব ভুলে যাই এবং এগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখি। সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থেই দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এসব বিষয়ে আলোচনা দরকার। জনগণের কল্যাণই যদি মূল উদ্দেশ্য হয় তাহলে এর কোনো বিকল্প নেই। রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি পারিবারিক ও সামাজিক অসহিষ্ণুতাও বৃদ্ধি পেয়েছে দেশজুড়ে। দীর্ঘ আড়াই বছরের করোনাকালীন দুর্ভোগের কুফল কাটিয়ে ওঠার আগেই রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে দুনিয়াজুড়ে যে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়েছে তাতে বিপর্যয়কর অবস্থায় পড়েছে স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানুষ। গত তিন দশকে বাংলাদেশের ওপর এবারই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা বিষনিঃশ্বাস ফেলতে সক্ষম হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক দলগুলোকে গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে দায়িত্বশীল ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। গণতন্ত্রের স্বার্থেই সহিংসতা ও সংঘাত এড়াতে সংযমী হতে হবে সব পক্ষকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীল ভূমিকাও প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর