সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

না ফেরার দেশে তোয়াব খান

সাংবাদিকতার মহিরুহকে অভিবাদন

পথিকৃৎ সাংবাদিক তোয়াব খান চলে গেলেন না ফেরার দেশে। শনিবার দুপুরে এ মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার চিরবিদায়ের মাধ্যমে দেশের সাংবাদিকতার একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতন ঘটল। ৮৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণকারী এই কিংবদন্তি সাংবাদিক দৈনিক বাংলার সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক তোয়াব খানের জন্ম ১৯৩৪ সালের ২৪ এপ্রিল, সাতক্ষীরার রসুলপুর গ্রামে। তাঁর সাংবাদিকতা জীবনের শুরু ১৯৫৩ সালে সাপ্তাহিক জনতার মাধ্যমে। ১৯৫৫ সালে তিনি যোগ দেন দৈনিক সংবাদে। ১৯৬১ সালে তিনি দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক হন। ১৯৬৪ সালে যোগ দেন দৈনিক পাকিস্তানে। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে শব্দসৈনিকের ভূমিকা পালন করেন তোয়াব খান। সে সময় তাঁর উপস্থাপনায় নিয়মিত প্রচারিত হতো ‘পিন্ডির প্রলাপ’ নামের অনুষ্ঠান। ১৯৭২ সালের ১৪ জানুয়ারি থেকে তিনি দৈনিক বাংলার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সচিব ছিলেন। ১৯৮৭-১৯৯১ মেয়াদে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ ও প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদেরও প্রেস সচিব ছিলেন। তিনি প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ও প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৯২ সালে জনকণ্ঠের প্রকাশনার শুরু থেকে গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন। দেশের সাংবাদিকতার অঙ্গনে আধুনিকতার পথিকৃৎ ছিলেন তিনি। আজীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করেছেন দৃঢ়ভাবে। সাংবাদিকতার স্বাধীনতার প্রবক্তাও ছিলেন তিনি। তোয়াব খানের মৃত্যুতে দেশের সাংবাদিকতার অঙ্গনে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ হওয়ার নয়। তার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিশিষ্টজনরা শোক প্রকাশ করেছেন। সাংবাদিকদের কাছে তার মৃত্যু তাজিংডং পাহাড়ের চেয়েও ভারী হয়ে দেখা দিয়েছে। সর্বশক্তিমানের কাছে আমাদের প্রার্থনা জীবনের পরপারেও ভালো থাকুন তোয়াব খান। সাংবাদিকতার মহিরুহকে শেষ অভিবাদন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর