মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

মত প্রকাশের স্বাধীনতা

হাই কোর্টের অভিমতকে অভিনন্দন

কোনো সাংবাদিক তার তথ্যের উৎস কারও কাছে প্রকাশ করতে বাধ্য নন এমন একটি ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাই কোর্ট। রাষ্ট্র বনাম দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় ২১ জুন রায় দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ। গত রবিবার ঐতিহাসিক ওই রায়ের ৫১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ পেয়েছে। একটি দৈনিকে ২০২০ সালের ২ মার্চ ‘২০ কোটিতে প্রকৌশলী আশরাফুলের দায়মুক্তি’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে ব্যবস্থা নিতে আবেদন জানায় দুদক। একপর্যায়ে হাই কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারির পাশাপাশি উল্লিখিত প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ফের অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। মামলার নিষ্পত্তি করে দেওয়া রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকরা সাংবিধানিকভাবে এবং আইনত দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে জনস্বার্থে সংবাদ পরিবেশন করতে পারবেন। এ মামলার শুনানি পর্যালোচনা করে এটাই প্রতীয়মান যে, কোনো সাংবাদিক তার নিউজের তথ্যের উৎস কারও কাছে প্রকাশ করতে বাধ্য নন। সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলে দেওয়া আছে। গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। এটা গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। রায়ে হাই কোর্ট আরও বলেন, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন রক্ষায় সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আধুনিক বিশ্বে জানার অধিকার সবারই আছে। গণমাধ্যমের কাজ হলো জনগণকে সজাগ করা। বর্তমান সময়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়ছে। এর বিরুদ্ধে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে হলুদ সাংবাদিকতা গ্রহণযোগ্য-সমর্থনযোগ্য নয় উল্লেখ করে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে গণমাধ্যমের মনোযোগী হওয়া উচিত। জনস্বার্থে দুর্নীতি, অর্থ পাচারসহ অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশে আইন সাংবাদিকদের সুরক্ষা দিয়েছে। হাই কোর্টের রায়ে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার যে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে তা দুর্নীতির বিরুদ্ধে দেশ ও জাতির স্বার্থ রক্ষায় সাংবাদিকদের সাহসী ভূমিকা রাখতে উদ্বুদ্ধ করবে। উচ্চ আদালতকে আমাদের অভিনন্দন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর