রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

নদী ভাঙন

দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে

বাংলাদেশ নদী-নালার দেশ। হাওর-বাঁওড়ের দেশ। মিঠাপানিসমৃদ্ধ বাংলাদেশের নদী-নালা এ দেশের প্রধান সম্পদ। নদী-নালা বাংলাদেশকে সুজলা সুফলা হতে সহায়তা করছে। নদী দেশবাসীর জন্য সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ হলেও বন্যা এ জনপদবাসীর জন্য প্রায়শই দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রতি বছর নদী ভাঙনে নিঃস্ব হয় হাজার হাজার মানুষ। নদীগর্ভে হারিয়ে যায় বিস্তীর্ণ এলাকা। নদীর গতিপথ বদলে পাল্টে যায় বিভিন্ন জনপদের মানচিত্র। বসতভিটা, জায়গাজমি সব হারিয়ে নিঃস্ব হয় হাজার হাজার পরিবার। একসময়ের অবস্থাপন্ন মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে অমানবিক জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়। রাস্তাঘাট, হাটবাজার, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদরাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়। প্রতি বছর প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমি নদীগর্ভে চলে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, অবৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় নদীর গতিপথ রুখে দেওয়ার জবরদস্তিমূলক চেষ্টার কারণে দেশের বিভিন্ন নদীতে ভাঙন হচ্ছে। অপরিকল্পিত ড্রেজিং ও বালু তোলার কারণে ক্ষতির শিকার হচ্ছে নদী। ভাঙন রোধের সরকারি কার্যক্রমে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ভাঙন নিয়ন্ত্রণ কাজে নিয়োজিতদের জবাবদিহির অভাবে কার্যকর সুফল পাওয়া যায় না। ফলে বছর বছর বরাদ্দ বাড়লেও ভাঙনকবলিত মানুষ তার সুফল পায় না। সরকারের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)-এর পূর্বাভাসে বলা হয়, এ বছর দেশের ১৩ জেলার ২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা ভাঙনের কবলে পড়বে। ফসলি জমির পাশাপাশি ঘরবাড়ি হারাতে পারে প্রায় ১৮ হাজার মানুষ। তীব্র ভাঙনের মুখে পড়তে পারে কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, রাজশাহী, ফরিদপুর ও মাদারীপুর। সিইজিআইএসের পূর্বাভাসের তালিকায় না থাকলেও শরীয়তপুর, চাঁদপুর ও মুন্সীগঞ্জে গত কয়েক বছরের মতো এ বছরও নদীতীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দিচ্ছে। নদী ভাঙন যেহেতু লাখ লাখ মানুষের সমস্যা, সেহেতু টেকসই পদ্ধতিতে নদীর কূল রক্ষার উদ্যোগ নিতে হবে। দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে প্রশাসনকে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর