শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বিশ্ববিদ্যালয় সমাচার

পেছনে হাঁটার প্রবণতা দুর্ভাগ্যজনক

রূপকথার ভূতেরা পেছনের পানে হাঁটে। আমাদের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো রূপকথার ভূতদের প্রতিবিম্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাদবাকি দুনিয়া থেকে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে। ইউরোপ আমেরিকা বা পশ্চিমা বিশ্ব দূরে থাক এশীয় মানের দিক থেকেও বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পিছিয়ে। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার বিচারেও পিছিয়ে থাকার বিষয়টি বেশ স্পষ্ট। গত দুই যুগে দেশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মচ্ছব চলছে। কিন্তু মানসম্মত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা বলে কিছু নেই। আছে অপরাজনীতির চর্চা। এশিয়ার শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নেই বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সর্বোচ্চ ১৫১তম স্থানে আছে। র‌্যাঙ্কিংয়ে মোট ১০০ স্কোরের মধ্যে ঢাবি পেয়েছে ৩২ দশমিক ৪। এশিয়ার ৭০০ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত কিউএস বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাঙ্কিং বিশ্লেষণে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। শিক্ষা ও শিক্ষকদের সুনাম, পিএইচডির সংখ্যা এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর হারের ওপর ভিত্তি করে এই র‌্যাঙ্কিং করা হয়। র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে আছে চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় এবং দ্বিতীয় স্থানে সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। চীনের জিনহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় স্থানে আছে। বাংলাদেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এনএসইউ) যথাক্রমে ১৯৯তম এবং ২১৯তম স্থানে আছে। প্রতিষ্ঠান দুটির প্রাপ্ত স্কোর যথাক্রমে ২৬ দশমিক ৯ এবং ২৪ দশমিক ৮। র‌্যাঙ্কিংয়ে থাকা বাংলাদেশের এ তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেই শুধু স্কোর উল্লেখ করেছে কিউএস। র‌্যাঙ্কিংয়ে ভারতের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষ ১০০-এর মধ্যে অবস্থান করছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ৪০তম অবস্থানে আছে দেশটির ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব  টেকনোলজি, বোম্বে। এই তালিকায় শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পাকিস্তানের আছে তিনটি। এশিয়ার শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারেকাছে বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় না থাকা লজ্জার শুধু নয়, অপমানেরও। এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলে অভিহিত করা হতো।  কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতার বদলে দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষক রাজনীতি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ক্ষুণ্ন করছে। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দু-একটি বাদে অন্যগুলো নিছক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ফলে সামনে এগোনোর বদলে পেছনে হাঁটা অনিবার্য হয়ে উঠছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর