শিরোনাম
শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

অপ্রাপ্তবয়স্ক চালক

কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙুক

রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তে রোড ডিভাইডারে অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকের দ্বারা গাড়ি চালানোর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করার নির্দেশনা অনেকেরই চোখে পড়ার কথা। বাস্তবে ট্রাফিক পুলিশের নাকের ডগায় সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকরা। নিরাপত্তাহীন করে তুলেছে সড়ক-মহাসড়ক। লেগুনা, থ্রি-হুইলার, নসিমন, করিমন, ভটভটিতে শিশু চালকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। গ্রাম-মফস্বলে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা মোটরসাইকেল নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সড়ক। দুর্ঘটনায় নিজের প্রাণই নয়, ঝুঁকিতে ফেলছে অন্যদের। স্বেচ্ছাসেবী গবেষণা সংস্থা সেভ দ্য রোডের তথ্যানুযায়ী, সারা দেশে বর্তমানে পরিবহন খাতে শ্রম দিচ্ছে প্রায় ১ লাখ ৫৫৫ শিশু-কিশোর। এর একটি অংশ চালক ও চালকের সহকারী। এদের নেই প্রশিক্ষণ বা ড্রাইভিং লাইসেন্স। প্রতিদিন গড়ে ৯ শতাধিক ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে, যার বড় অংশই শিশু শ্রমিকের অংশগ্রহণের কারণে। গবেষণা সংস্থাটির হিসাবে পরিবহন খাতে রাজধানী ঢাকায় ৩৬ হাজার ৫০, চট্টগ্রামে ১৯ হাজার ৫০, খুলনায় ১৪ হাজার ৩৮০, বরিশালে ৮ হাজার ২৬০, সিলেটে ৮ হাজার ৩৪০, রাজশাহীতে ৬ হাজার ৩৫০, রংপুরে ৫ হাজার ৫৬৫ ও ময়মনসিংহে ৪ হাজার ১৬০ শিশু-কিশোর। বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যানে প্রায় ৭৩ শতাংশ লেগুনা চালায় অপ্রাপ্তবয়স্করা। অন্যান্য যানবাহনে বিশেষ করে মোটরচালিত রিকশায় অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকের সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার গলি-সড়কে বাইক চালাতে দেখা গেছে অনেক স্কুলগামী কিশোরকে। প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে দেখা যায় শিশু-কিশোরদের ৩০০ ফুট পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়েতে। ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাচ্ছে হাজারো অপ্রাপ্তবয়স্ক চালক। সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধে এ যথেচ্ছতার অবসান ঘটাতে হবে। সড়ক পরিবহন আইন কাগজ-কলমে সীমাবদ্ধ না রেখে তার যথাযথ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। রাজধানীতে শিশু চালকদের গাড়ি চালানো কোনোভাবেই ট্রাফিক বিভাগের জন্য মর্যাদার কথা নয়। তাদের কুম্ভকর্ণের ঘুম থেকে জাগতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর