শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ধর্ষকদের দৌরাত্ম্য

প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে সভ্যসমাজের পরিচয়

দেশে শিশুরাই বেশি ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। বিশেষত ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী মেয়েরা মানুষবেশী পিশাচের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে বিপজ্জনকভাবে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জরিপে বলা হয়েছে- পথে, বাসে, ট্রেনে, ঘরে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন নারী। সহিংসতার মধ্যে ধর্ষণের ঘটনাই বেশি। অভিযুক্তের মধ্যে বেশি তরুণ। নির্যাতন থেকে রেহাই পাচ্ছে না দুই বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৭৫ বছরের বৃদ্ধা। ২০২১ সালে নারী ও শিশুর পাঁচ ধরনের নির্যাতনের মধ্যে ধর্ষণ ৮১০, দলবদ্ধ ধর্ষণ ২২৫, ধর্ষণচেষ্টা ১৯২, যৌতুক ১১৪ এবং উত্ত্যক্তকরণ ও যৌন হয়রানির ৯৬টি ঘটনা ঘটেছে। ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী মেয়েদের ৩১ শতাংশ দলবদ্ধ ধর্ষণ, ১৮ শতাংশ ধর্ষণ ও ১১ শতাংশ ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়েছে। উত্ত্যক্তকরণ ও যৌন হয়রানির ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা বেশি, এ হার ২২ শতাংশ। বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মহিলা পরিষদের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশে নারী ও কন্যা নির্যাতন চিত্র ২০২১ : ধর্ষণ, গণধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা, যৌন হয়রানি ও যৌতুক’ শিরোনামে সমীক্ষা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। মহিলা পরিষদের প্রতিবেদনে বলা হয়, সামাজিক বন্ধন বা পরিচিত লোকজন নারীকে যতটুকু নিরাপত্তা দিচ্ছে, তার চেয়ে বেশি নিরাপত্তাহীন করে তুলছে। যৌতুকের ক্ষেত্রে ৭৬ শতাংশ নারী স্বামীর নির্যাতনের শিকার। ৩০ শতাংশ ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রতিবেশীরা। তবে উত্ত্যক্ত ও যৌন হয়রানির ক্ষেত্রে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও বখাটেদের হার ৫০ শতাংশ। বাংলাদেশে বাল্যবিয়ের প্রধান কারণ সমাজে উত্ত্যক্তকারী মানুষ শকুনদের দৌরাত্ম্য। শিক্ষা থেকে মেয়েদের ঝরে পড়ার মুখ্য কারণও তাই। মহিলা পরিষদের পরিসংখ্যানে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে তা বাস্তবতার একটি অতি ক্ষুদ্র চিত্র। মানসম্মানের ভয়ে ধর্ষণ ও উত্ত্যক্তের ৯৫ শতাংশই গোপন রাখা হয়। সভ্যসমাজের অংশ হিসেবে নিজেদের ভাবলে ধর্ষক ও উত্ত্যক্তকারীদের রুখতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর