মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

অতীত অস্বীকার দুর্ভাগ্যের লক্ষণ

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

অতীত অস্বীকার দুর্ভাগ্যের লক্ষণ

টাঙ্গাইল জেলা সদর রোড সম্প্রসারণে অনেকদিন থেকে কাজ চলছে। রাস্তার দুই পাশের বাড়িঘর, দোকানপাটের কিছু কিছু অংশ ভাঙচুর করা হয়েছে। বৈধ ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পত্তি হলেও চলাচলের সুবিধার্থে কেউ প্রতিবাদ করেনি, কোনো ক্ষতিপূরণ দাবি করেনি। তবে কাজটি দীর্ঘায়িত হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। বিন্দুবাসিনী উচ্চবিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর ভেঙেছে। তার পাশেই টাঙ্গাইল শহীদ মিনার। একেবারেই জায়গা নেই। শহীদ মিনার ছোট করে রাস্তা বড় করলে সে যদি এক ইঞ্চিও হয় শহীদ মিনার নষ্ট হয়ে যাবে। শহরে শ্বাস নেওয়ার জায়গা নেই। তাই মেয়র এবং জেলা প্রশাসক দুজনকেই চিঠি দিয়েছি যাতে শহীদ মিনার স্পর্শ করা না হয়। শহীদ মিনারের জায়গা ছোট হলে সভা-সমাবেশ, আলাপ-আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কোনো কিছুর জন্য কোনো জায়গা থাকবে না। কত কিছু হচ্ছে শহীদ মিনারের পাশে। বিন্দুবাসিনী উচ্চবিদ্যালয়, যেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একমাত্র সুসংগঠিত কাদেরিয়া বাহিনীর হাত থেকে অস্ত্র নিয়েছিলেন। কত কিছু হলো, স্কুলে বড় বড় দালান হলো। কিন্তু পিতার স্মৃতি রক্ষায় কোনো কিছু হলো না, মুক্তিযুদ্ধের বা যোদ্ধাদের অমর স্মৃতির কোনো মূল্য হলো না। অস্ত্রসমর্পণের পর পুলিশ প্যারেড ময়দানে শহীদ মিনারের স্থান নির্ধারণে পিতা-পুত্র একসঙ্গে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলাম। ওপরে বঙ্গবন্ধু, নিচে কাদের সিদ্দিকী। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে খুনি সরকার এলে সেই ভিত্তিপ্রস্তরের প্রস্তরফলক খুলে নিয়ে পৌর ভবনে রাখা হয়েছিল। এখনো আছে। মুক্তিযোদ্ধা শহীদস্মৃতি পৌর উদ্যানে সে প্রস্তরফলক আর লাগানো হয়নি। বিএনপি সরকারের সময় বঙ্গবন্ধুর নাম থাকায় লাগেনি, এখন আওয়ামী সরকারের আমলে আমার নাম থাকায় লাগানো হচ্ছে না। এ হলো অবস্থা। এ যেন ‘শিল পাটায় ঘষাঘষি মরিচের জান ক্ষয়’ এমন এক অসহনীয় অবস্থা।

পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শাসন এবং বঞ্চনার হাত থেকে মুক্তি পেতে দেশকে স্বাধীন করতে আমরা একসাগর রক্ত ঢেলেছি। পাকিস্তানের প্রচন্ড সামরিক শক্তির কাছে আমাদের এক ফুৎকারে উড়ে যাওয়ার কথা ছিল। আমাদের তেমন শক্তি-সামর্থ্য, অস্ত্র ছিল না। আমাদের ছিল দুর্বার দেশপ্রেম, ভালোবাসা আর ইমান। যে কারণে পৃথিবীর বিস্ময় জার্মান বাহিনীর কাছাকাছি গর্বিত পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করেছিলাম। সাধারণ পরাজয় নয়, এক অসাধারণ পরাজয়, একেবারে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছিলাম। আমাদের দেশপ্রেম, মানবিক গুণাবলি, সাংগঠনিক ক্ষমতা সবকিছুতে বিশ্বজয় করেছিলাম। কিন্তু ধীরে ধীরে স্বাধীনতার ৫০ বছর উল্টো স্রোতে কেমন যেন সবকিছু খোয়াতে বসেছি। কোথায় যেন হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে সেই দেশপ্রেম, নৈতিকতা, ভালোবাসা। কোনো কিছু আর অবশিষ্ট নেই। আমরা কেমন যেন বড় বেশি নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। ১৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ছিল হুজুর মওলানা ভাসানীর ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। প্রতি বছরের মতো এবারও গিয়েছিলাম। কিন্তু কেমন যেন এক উদাসীন ভাব চোখে পড়ল। টাঙ্গাইল শহরের কোথাও মনে হলো না এই দিনে একজন মহামানব আমাদের থেকে চলে গেছেন। সকাল ৯টায় যখন হুজুরের মাজারে যাই তখন মাওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজের আঙিনা পর্যন্ত তেমন কোনো লোকজনের চিহ্ন দেখিনি। সেখান থেকে প্রায় ৫০০-৬০০ গজ দূরে মাওলানা ভাসানী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা। তেমন লোকজন ছিল না। হুজুর মওলানা ভাসানীর মাজার পর্যন্ত সব মিলিয়ে হয়তো হাজারখানেক লোক হবে, তার বেশি নয়। ফাতেহা পাঠ করে বেরোলে বেশ কিছু চ্যানেল এবং সংবাদপত্র চেপে ধরেছিল। আমি যেমন বঙ্গবন্ধুর শিষ্য, তেমনি হুজুর মওলানা ভাসানীর ভক্ত। ভক্তরা যেভাবে বলে আমিও সেভাবে বলেছিলাম। জাফর নামে টাঙ্গাইলের সাংবাদিকদের এক নেতা প্রশ্ন করেছিলেন, জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘দিনের ভোট রাতে হয়েছে- এটা কি বলতে পারেন?’ বলেছিলাম, জাপানি রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য নিন্দনীয়। কিন্তু সেই মন্তব্যের ব্যবস্থা যারা করেছে তারাও নিন্দনীয় কাজ করেছে। দিনের ভোট রাতে না হলে তো জাপানি রাষ্ট্রদূত ও অন্যরা এসব কথা বলতে পারত না। কেমন যেন আমরা নিজেদের ত্রুটি স্বীকার করি না, করতে চাই না। এত বড় একজন মানুষ যার জন্মদিন মৃত্যুদিন কীভাবে যায় তেমন কেউ জানতেই পারে না। বিএনপির বিভাগীয় সভা-সমাবেশ নিয়ে যে আলোচনা তার বিন্দুবিসর্গও হুজুর মওলানা ভাসানীর মৃত্যু দিবস নিয়ে হয়নি। এখন প্রায় সব ক্ষেত্রে ৩-৪ ঘণ্টার এক দিনের সমাবেশ, গাড়িঘোড়া বন্ধ করায় তিন দিনে গিয়ে ঠেকেছে। কিন্তু মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে নিয়ে কোনো আলোচনা নেই, পত্রপত্রিকায় জায়গা নেই, কোনো চ্যানেলে স্থান নেই। বড় হতাশাজনক। এভাবে হৃদয়হীনের মতো আচরণ করলে মানবিক গুণের দিক থেকে শূন্যের কোঠায় চলে গেলে ভবিষ্যতে আমাদের বড় মুখ করে বিশ্বের সামনে দাঁড়ানোর কোনো পথ থাকবে না। ধীরে ধীরে আমরা যেভাবে আমাদের অতীত মুছে ফেলার চেষ্টা করছি, বর্তমান নিয়ে টানাটানি যতই করি নিজেদের ছাড়া অন্যদের সামান্যতম সম্মান গুরুত্ব শ্রদ্ধা করি না। বিশ্বাস তো করিই না। এমনভাবে মানবিক গুণ ধ্বংস হয়ে গেলে, বড়-ছোটর পার্থক্য খুইয়ে ফেললে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, সন্তান-সন্ততিরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছি না। শুধু অন্ধকার আর অন্ধকার, কোনো আলোর দেখা নেই। আওয়ামী লীগের লোকজন ভীষণ ন্যক্কারজনকভাবে বিরোধী দলের লোকদের নাহক তাচ্ছিল্য করছে, আবার বিএনপি-জামায়াত বা অন্যরা কাউকে কোনো সম্মান করতে চায় না। সরকারপ্রধান নেত্রী শেখ হাসিনাকে যা নয় তা-ই বলে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলতে গিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়েও ন্যক্কারজনক কথা বলে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শুধু আওয়ামী লীগের নন, তিনি সব বাঙালির, বাংলাদেশের তিনি জাতির পিতা। আওয়ামী লীগের যেমন বিএনপি-জামায়াত, অন্য দলেরও তেমন। বাংলাদেশকে স্বীকার করলে বাংলাদেশে বাস করলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা কেন যে সার্বিকভাবে সবকিছুকে বড় করে দেখতে পারি না। জাতীয় মীমাংসিত বিষয়গুলো আমাদের চিন্তা করে দেখা দরকার, সেভাবেই বিবেচনা করা উচিত।

গত এক-দেড় মাস বিএনপি সব বিভাগে গণজমায়েত করছে। আওয়ামী লীগ এবং সরকার কার পরামর্শে বা বুদ্ধিতে সমাবেশগুলোর আগে আগে সব গাড়িঘোড়া বন্ধ করে হরতালের আবহাওয়া সৃষ্টি করে হিতে বিপরীত করছে। আমি আমার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নেত্রী শেখ হাসিনা যদি দু-চার-ছয় মাস বা এক বছর বিএনপির নাম উচ্চারণ না করতেন তাহলে বিএনপি এবং তার নেতারা অনেক পিছিয়ে পড়তেন। একটি বিভাগীয় সভা তাদের মতো তারা করতেন, সরকার বা আওয়ামী লীগ তাদের মতো করত। নির্বিবাদে সভা-সমাবেশ করতে পারলে আমি জোর দিয়ে বলতে পারি বিএনপির মধ্যে এত আত্মপ্রত্যয় জাগত না। বাধা পেলে কোনো জিনিস হয় বন্ধ হয়ে যায়, থেমে যায় আর বাধা অতিক্রম করতে পারলে তা অনেক বেশি গতিময় হয়- সেটাই হয়েছে। সরকার কীভাবে বিরোধী শক্তি মোকাবিলা করবে এটা সরকারের ব্যাপার। পৃথিবীতে কোনো সরকার জোর করে কোনো দিন কোনো বিরোধী শক্তি দমাতে পারেনি। তার কৌশল ভুল হলে ফল খারাপ হবে এবং তা-ই হচ্ছে। যে যা-ই বলুন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা আইয়ুব-ইয়াহিয়াকে পরাজিত করেছি। সে সময় পাকিস্তানের আইয়ুব-মোনায়েম-ইয়াহিয়ার চেয়ে বর্তমান সরকারের শক্তি খুব একটা বেশি বলা যাবে না। তাই গায়ের জোরে কেউ কোনো দিন জয়ী হয়নি, বর্তমানেও হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বাধা দিয়ে ঝিমিয়ে পড়া বিএনপিকে বরং সজাগ করা হয়েছে। সব বড় বড় দলেই নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি, মারামারি, হানাহানি থাকে। বিএনপিতেও ছিল বা আছে। সরকারি বাধায় তারা তাদের বিরোধ ভুলে গেছে। এমনই হয়। এখন যত ভুল পদক্ষেপ নেওয়া হবে বিরোধী দল ততই শক্তিশালী হবে। দেশের অবস্থা ভালো না। তেলের দাম, চালের দাম প্রতিদিন বাড়ছে, শাকসবজি-মাছ-মাংস স্পর্শ করা যায় না। আমি ’৬০ সাল থেকে ’৬৪ সাল পর্যন্ত এক নাগাড়ে বাজার করেছি। সে সময়ের ১ টাকার ইলিশ মাছ এখন দেড়-দুই হাজার টাকা, ১ টাকা সের গরুর মাংস ৬০০-৭০০ টাকা, ১ টাকা ৪ আনা সের খাসির মাংস ৮০০-৯০০ টাকা, ৮ আনা সের সরিষার তেল ৩০০-৩৩০ টাকা, ২ আনা সের লবণ ৪০-৫০ টাকা। সবকিছু আকাশছোঁয়া। ১ টাকার দিনমজুর এখন ৪০০-৫০০ টাকা। ১ টাকা মজুরিতে যেভাবে স্বাচ্ছন্দ্যে সংসার চলত, এখন ৪০০-৫০০ টাকায়ও তেমন চলে না।

মানুষের আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের কোনো মিল নেই। আর বিশেষ করে যাদের স্থায়ী আয় তাদের তো মরণদশা। আয় বাড়েনি একটুও। কিন্তু ব্যয় বেড়েছে আকাশচুম্বী। মানুষের যাওয়ার কোনো পথ নেই। যারা নয়ছয় করতে পারে, চুরি-চামারি, ডাকাতি করতে পারে একমাত্র তাদেরই পোয়াবারো। রাজনৈতিক কোনো ভারসাম্য নেই। সামাজিক বন্ধন অনেকটাই আগলা হয়ে গেছে। বড়-ছোটর পার্থক্য একেবারে ধুলায় মিলিয়ে গেছে। সবাই যেন কেমন হাওয়ায় ভেসে বেড়ায়। কেউ কাউকে পরোয়া করে না। অন্যের প্রতি সমীহ নেই বললেই চলে। মেধাবী, জ্ঞানীরা পিছে পড়ে আছেন। পোঁ ধরা চাটুকারদের জয়জয়কার। কী করে যে মিথ্যা সত্যের ওপর দাপট দেখাচ্ছে ভেবে কূল পাই না। যদিও হাজার হাজার বছরের ইতিহাস বলে, সত্যের ওপর মিথ্যা কখনো জয়ী হতে পারে না, প্রতিষ্ঠা পেতে পারে না। তবু কেন যেন বেশকিছু মানুষ মিথ্যাকে সত্য বলে প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় মরিয়া। ভুল করে কেউ তা স্বীকার করে না। যে জাতি ভুল স্বীকার করার সাহস হারিয়ে ফেলে তাদের অনেক দুঃখ সইতে হয়। আমাদের কপালেও সেরকম দুঃখ যে ভর করে নেই বলা যায় না। কীভাবে যে দেশ-জাতি প্রায় দুটো স্রোতধারায় বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে; যা কোনোমতেই কাম্য নয়। সেই অনাকাক্সিক্ষত বিষয়টাই অবলীলায় ঘটে চলেছে। আমরা তেমন কেউ জাতীয়ভাবে সার্বিক বিবেচনায় কোনো কিছু করছি না। দলীয় বা গোষ্ঠী চিন্তা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছি। যার পরিণাম মোটেই ভালো হতে পারে না। জেনে বুঝে শুনে কোনো মানুষ এরকম সর্বনাশা ভাগাড়ে পা দিতে পারে না। কিন্তু আমরা পরম আনন্দে সর্বনাশের দিকে এগিয়ে চলেছি। কবে হুঁশ হবে ভেবে পাচ্ছি না। যত তাড়াতাড়ি হুঁশ হবে ততই মঙ্গল। কিন্তু কবে যে হবে। গতকাল ছিল আমাদের শৌর্যবীর্যের প্রতীক সশস্ত্র বাহিনী দিবস। পৃথিবীর ইতিহাসে খুব কম সশস্ত্র বাহিনী খুঁজে পাওয়া যাবে যে বাহিনী রক্ত ঝরিয়ে দেশের জন্ম দিয়েছে। সাধারণত একটা দেশ ধীরে ধীরে তার প্রশাসন তৈরি করে। সেখানে সীমান্তরক্ষী, সেনাবাহিনী, বিমান-নৌ বাহিনী, অভ্যন্তরীণ শান্তিশৃঙ্খলার জন্যে পুলিশসহ নানা ধরনের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকে। কিন্তু আমাদের সশস্ত্র বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়ে একটা দেশ সৃষ্টিতে মুক্তিবাহিনী ও দেশবাসীর সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছে এবং সফলভাবে দেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছে। প্রতি বছর ২১ নভেম্বর অত্যন্ত মর্যাদার সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত এবং যুদ্ধাহতদের সেনাছাউনিতে দাওয়াত করে সম্মান দেখানো হয়। অন্য বারের মতো এবারও ঘাটাইল শহীদ সালাউদ্দিন সেনানিবাস থেকে দাওয়াত এসেছে। যাব কি যাব না ভাবছিলাম। এরকম সময় হঠাৎই এক বীর সৈনিক এসে কিছু উপহার দিয়ে গেল। উপহারের মধ্যে সুন্দর চাদর, সহধর্মিণীর জন্য শাড়ি সঙ্গে একটা খাকি লেফাফা। লেফাফাটির ভিতরে দেখলাম দুটি নোট। একটি হাজার (চজ ১৪৫১৭৭১) টাকা, আরেকটি ৫০০ (জখ ৮৫৭৬১৯৯) টাকা। লম্বা মানুষ বুঝতে পারলাম না এমন একটি শুভদিনে পনের শ টাকা কেন পাঠিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে বেসামরিক ব্যক্তি হিসেবে একমাত্র আমি বীরউত্তম খেতাব পেয়েছিলাম। ওয়াপদার ইঞ্জিনিয়ার এম এইচ সিদ্দিকুল বীরউত্তম খেতাব পেয়েছেন। কিন্তু তার নামেও ব্রাকেডে ‘অনারারি ক্যাপ্টেন’ লেখা আছে। ১৫ ডিসেম্বর, ১৯৭৩ সালের গেজেটে একমাত্র বেসামরিক ব্যক্তি হিসেবে আমাকেই বীরউত্তম খেতাবে ভূষিত করা হয়েছিল। সে যা হোক, বেশ কয়েকবার সেনা দিবসে ঢাকা-ময়মনসিংহ-ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্টে গেছি। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে গতকালও গিয়েছিলাম। তাদের স্বঃতস্ফূর্ততা, শৃঙ্খলা ও আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়েছি। পরম করুণাময় দয়ালু আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি- তিনি যেন আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে তার সুশীতল ছায়াতলে রাখেন। দেশ ও দেশবাসীর যাতে সেবা করতে পারে এবং তাদের পরম কল্যাণ হয় এই কামনাই করি।

লেখক : রাজনীতিক

www.ksjleague.com

সর্বশেষ খবর