রবিবার, ১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

নুরজাহান

নুরজাহান

নুরজাহান ছিলেন মোগল সম্রাজ্ঞী। সম্রাজ্ঞী হওয়ার পর তাঁর রূপলাবণ্য ও প্রজ্ঞা দ্বারা সম্রাট জাহাঙ্গীরের ওপর পুরোপুরি প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হন। জাহাঙ্গীরের সাম্রাজ্যে নুরজাহানের ক্ষমতাই সর্বোচ্চ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে জাহাঙ্গীর ক্রমে আরামপ্রিয় হয়ে বিলাসিতার স্রোতে নিজেকে ভাসিয়ে দেন। অন্যদিকে নুরজাহান দিন দিন অভিজ্ঞতা ও শক্তির অধিকারী হতে থাকেন এবং সম্রাটের নামের সঙ্গে তাঁর নামও মুদ্রায় অঙ্কিত হয়। এমনকি সব সরকারি ফরমানে জাহাঙ্গীরের দস্তখতের সঙ্গে তাঁর দস্তখতও থাকত। শেষ পর্যন্ত জাহাঙ্গীর নুরজাহানের হাতের ক্রীড়নকে পরিণত হন। সম্রাটের ওপর নুরজাহানের প্রভাবের সুফল আমরা তৎকালীন শাসনব্যবস্থা দ্বারা নির্ণয় করতে পারি। নুরজাহান অনেক সময় সম্রাটের বদমেজাজ ও নিষ্ঠুরতা স্বীয় বুদ্ধিমত্তা দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করতেন। বিদ্রোহ দমন, সাম্রাজ্য বিস্তার এবং সুষ্ঠু শাসন পরিচালনায় তিনি অত্যন্ত দূরদর্শিতার পরিচয় দেন।

নুরজাহানের প্রভাব যেমন সুফল বয়ে আনে তেমনি এর অনেক কুফলও রয়েছে। তিনি ক্ষমতার লোভে যুবরাজ খুররমের (শাহজাহান) পরিবর্তে স্বীয় জামাতা এবং সম্রাটের কনিষ্ঠ পুত্র শাহরিয়ারকে সিংহাসনে বসাতে চেয়েছিলেন। ফলে সাম্রাজ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বকাল ছিল ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার এক ঘটনাবহুল যুগ। এ সম্পর্কে ইতিহাসবিদ ঈশ্বরীপ্রসাদ বলেন, মুঘল আমলে সম্রাট জাহাঙ্গীর ছিলেন এক আকর্ষণীয় চরিত্র এবং তাঁর রাজত্বকাল সুখসমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ ছিল। তিনি সম্রাজ্ঞী নুরজাহানের প্রভাবে প্রভাবিত হয়েও শাসনব্যবস্থায় অতুলনীয় অবদান রাখতে সক্ষম হন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর