মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বায়ুদূষণের নগরী ঢাকা

কর্তাব্যক্তিদের দিবানিদ্রা ভাঙুক

রাজধানী ঢাকার শিরোস্ত্রাণে একের পর এক কলঙ্কের তিলক দেড় কোটি নগরবাসীর নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকা এক সময় ছিল দুনিয়ার অন্যতম নোংরা নগরী। তিন দশক আগের এক সেনাপতি শাসক সেই নোংরা নগরীকে তিলোত্তমা ঢাকা বলে অভিহিত করে আত্মপ্রসাদ লাভ করতেন। ঢাকার সে নোংরা অবস্থা কিছুটা বদলে গেলেও যানজটের আগ্রাসনে তা অচল নগরী হয়ে উঠেছে কয়েক দশক ধরে। এ সমস্যার সমাধানে একের পর এক ফ্লাইওভারসহ নানা ব্যবস্থা নেওয়া হলেও কাক্সিক্ষত ফলাফল মেলেনি। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উঠেছে ঢাকার বায়ুদূষণ। রবিবার সকাল ৭টায় আন্তর্জাতিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা-এয়ার ভিজুয়ালের বায়ুমান সূচক একিউআই ৩১৬ স্কোর নিয়ে ঢাকার বাতাসের মান ‘বিপজ্জনক’ অবস্থায় ছিল। এ সময় প্রতি ঘনমিটার বাতাসে দূষণের সবচেয়ে বিপজ্জনক উপাদান পিএম-২.৫ অতি সূক্ষ্ম বস্তুকণা ছিল ২৬৬ মাইক্রোগ্রাম। বিকাল ৫টা নাগাদ দূষণ কিছুটা কমে বায়ুমান সূচকে স্কোর ১৯০-তে নামলেও ঢাকা ছিল দূষিত নগরীর তালিকায় শীর্ষে। একই দিন সকালে ভারতের দিল্লি ও চীনের শেনইয়াং যথাক্রমে ৩১৩ ও ২৪৫ স্কোর নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে ছিল। একিউআই স্কোর ৫০-এর মধ্যে থাকলে তাকে স্বাস্থ্যকর, ৫১ থেকে ১০০ পর্যন্ত সহনশীল, ১০১ থেকে ১৫০ সংবেদনশীল অর্থাৎ শিশু, বৃদ্ধ ও নানা রোগে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১ থেকে ২০০ অস্বাস্থ্যকর, ২০১ থেকে ৩০০ খুবই অস্বাস্থ্যকর ও ৩০০ ছাড়িয়ে গেলে বিপজ্জনক মাত্রায় দূষিত হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। এয়ার ভিজুয়ালের তথ্যানুযায়ী, ২১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২২ জানুয়ারি বিকাল ৫টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টা বিপজ্জনক মাত্রায় দূষিত ছিল ঢাকার বাতাস। উন্নয়নের বিড়ম্বনায় একের পর এক নির্মাণ কাজে ঢাকার দূষণ কিছুটা বাড়লেও বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যানবাহনের বিষাক্ত ধোঁয়া। এগুলো যারা নিয়ন্ত্রণ করেন তাদের সঙ্গে যানবাহন মালিকদের গোপন সমঝোতা থাকায় দূষিত নগরীর বদনাম অনিবার্য হয়ে উঠছে। এ বিষয়ে কর্তাব্যক্তিরা দিবানিদ্রা থেকে জেগে উঠলে ভালো করবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর