মাত্র তিন সপ্তাহ আগে বাড়ানো হয়েছিল বিদ্যুতের দাম। তার রেশ না কাটতেই আরেক দফা দাম বাড়ানো হলো। নির্বাহী আদেশে এবার বিদ্যুতের দাম বেড়েছে পাইকারি পর্যায়ে ৮ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং গ্রাহক পর্যায়ে ৫ শতাংশ। দেশের ইতিহাসে তিন সপ্তাহের ব্যবধানে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘটনা এটিই প্রথম। তবে এখন থেকে প্রতি মাসেই বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ খাতে যে হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়, তা থেকে রেহাই পেতে নেওয়া হয়েছে এই অজনপ্রিয় সিদ্ধান্ত। স্মর্তব্য, এর আগে বছরে সর্বোচ্চ একবার গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সুযোগ পেত নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। পরে সে নিয়ম পরিবর্তন করে বছরে একাধিকবার মূল্য সমন্বয়ের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। এরপর আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে গণশুনানি এড়িয়ে সরাসরি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের সুযোগ তৈরি হয় গত বছরের শেষে। এরপর এক মাসের ব্যবধানেই একবার গ্যাসের এবং দুবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেছে সরকার। সর্বশেষ ১২ জানুয়ারি খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়, যা জানুয়ারির বিলের সঙ্গে কার্যকর হওয়ার কথা। এরপর ফেব্রুয়ারির জন্য বিদ্যুতের মূল্য আরও ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেল। এর আগে সর্বশেষ ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপকরণ গ্যাস, কয়লা, জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারে বেড়ে গেছে বহুগুণ। বাড়তি দামে জ্বালানি কিনে ভর্তুকি দিয়ে চলা সরকারের পক্ষে যে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা সহজেই অনুমেয়। আমরা আশা করব লোকসানের কবল থেকে রেহাই পেতে দাম বাড়িয়ে বসে থাকলে চলবে না। বিদ্যুৎ খাতের অপচয় ও দুর্নীতি বন্ধের উদ্যোগও নিতে হবে। দেশজুড়ে লাখ লাখ ইজিবাইকের ব্যাটারি চার্জে যে বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হয়, তার সিংহভাগই যে চুরি করা তা ওপেন সিক্রেট। অবৈধ বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধেও নিতে হবে কঠোর ব্যবস্থা।