সোমবার, ১ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ব্যবসায় বিসংবাদ

ঘুরে দাঁড়াতে হবে নতুন বছরে

‘বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী’ একটি বাংলা প্রবচন। বাংলাদেশ ৫২ বছরে শূন্য অবস্থা থেকে যতটুকু সমৃদ্ধি অর্জন করেছে তার পেছনে রয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যের অবদান। তবে বিদায়ী বছরটি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সুখকর ছিল না। বিদায়ী বছরে মহামারি করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট ডলার সংকট দেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখতে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি হ্রাস পেয়েছে। কমেছে মূলধনি পণ্য অর্থাৎ যন্ত্রপাতি আমদানি। ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নে পণ্যের দাম বাড়ায় বিক্রি নেমেছে অর্ধেকে। সব মিলিয়ে ২০২২ সাল ভালো যায়নি ব্যবসায়ীদের। উদ্যোক্তাদের মতে, ডলার সংকট যত তীব্র হয়েছে, কাঁচামাল আমদানিতে ঋণপত্র খোলার হার তত কমেছে। এ সংকট কাটাতে প্রবাসী ও রপ্তানি আয় বাড়াতে হবে। হুন্ডি ব্যবসা ও অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে নিতে হবে কঠোর পদক্ষেপ। এ বিষয়ে আগেভাগে পদক্ষেপ নিলে সংকট এড়ানো সম্ভব হতো। ডলার সংকটের কারণে ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে আমদানির ওপর বেশকিছু কড়াকড়ি আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে পর্যাপ্ত ডলার না থাকায় অনেক ব্যাংক এলসি বা ঋণপত্র খুলতে পারছে না। দেশে খাদ্যদ্রব্য থেকে শুরু করে যন্ত্রপাতি- বেশির ভাগ পণ্যই আমদানি করা হয়। শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করতে গিয়েও এলসি জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছেন কারখানার মালিকরা। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ বেড়েছে। বছরের শুরুর দিকে শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়ার পর বেড়েছে কারখানায় উৎপাদন খরচ। এসব কারণে সংকটে পড়েছে অনেক দেশি প্রতিষ্ঠান। দেশি বাজারে পণ্যের দাম বাড়ার পাশাপাশি কাঁচামাল আমদানি জটিলতায় উৎপাদন অব্যাহত রাখা কঠিন হয়েছে।  এর ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমেছে। কর্মসংস্থানের বিসংবাদের সূচনা হয়েছে। নতুন বছরে অর্থনৈতিক দুরবস্থা নিরসনে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। হুন্ডি বন্ধে নিতে হবে সংকল্পবদ্ধ উদ্যোগ। অস্তিত্বের স্বার্থে নতুন বছরে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।

সর্বশেষ খবর