শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঢাকা-ব্যাংকক সম্পর্ক

অংশীদারির নতুন যুগের সূচনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডে ছয় দিনের সরকারি সফর সম্পর্কে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এর মাধ্যমে ফলপ্রসূ অংশীদারির নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। এ সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে মাইলফলকও হয়ে থাকবে। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য খুবই প্রাসঙ্গিক ও আশাজাগানিয়া। থাইল্যান্ড দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় জোট আসিয়ানের প্রভাবশালী সদস্য। বাংলাদেশের কাছের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে থাইল্যান্ড অন্যতম। এ দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের পারস্পরিক যোগাযোগ শত শত বছরের পুরনো। মধ্যযুগে চট্টগ্রাম থেকে মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ডে যাতায়াত করত বাণিজ্যিক বহর। দক্ষিণ থাইল্যান্ডে ইসলাম প্রচার হয় বাংলাদেশ থেকে। সেখানকার মুসলিম অধিবাসীদের একাংশ বাঙালি বংশোদ্ভূত বলে মনে করা হয়। সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় দিক থেকে থাইল্যান্ডসহ ইন্দোচীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ। থাইল্যান্ডে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার হয়েছে দক্ষিণ এশিয়া থেকে। সে সময় বাংলাদেশও ছিল বৌদ্ধ অধ্যুষিত। চীনসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ধর্ম প্রচারও করেছেন সে সময়ে। প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের ৮০তম বৈঠক সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন। বৈঠকে তিনি বিশ্বনেতাদের যুদ্ধকে না বলা এবং যুদ্ধ হানাহানি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের নীতি অনুসরণ করছে। চারদিকের উসকানি সত্ত্বেও নিকটবর্তী প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে সংঘাতের বদলে শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রত্যাশা করে চলছে বাংলাদেশ। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, যুদ্ধ ও হানাহানি মানব জাতির সর্বনাশই শুধু ডেকে আনে। দুই মহাযুদ্ধ কী সর্বনাশ ডেকে এনেছে তা আমাদের অজানা নয়। ইউক্রেন ও গাজার যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত অবস্থায় ফেলেছে। ফলে প্রধানমন্ত্রীর যুদ্ধকে না বলার আহ্বানে মানব জাতির প্রত্যাশাই ব্যক্ত হয়েছে। থাইল্যান্ড সফরকালে সম্পাদিত চুক্তির ফলে বিকাশমান অর্থনীতির দুই দেশই লাভবান হবে। আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও এ সফর আলোকবর্তিকা হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর