শুক্রবার, ২৪ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভোটারদের রায়

দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি আর নয়

বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা যে হ্রাস পেয়েছে জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় নির্বাচনেও কম ভোটারের উপস্থিতি তারই প্রমাণ। অবশ্য কেউ কেউ যুক্তি দেখাচ্ছেন দাবদাহের মধ্যে উপজেলা নির্বাচন হওয়ায় ভোটার উপস্থিতি ছিল হতাশাজনক। বাংলাদেশে অতীতে গ্রীষ্মকালে স্থানীয় নির্বাচন হয়নি এমন নয়। কিন্তু কোনো নির্বাচনে ৪০ শতাংশের নিচে ভোট পড়েছে তেমন কোনো নজির নেই। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নির্বাচন বর্জন করলেও উপজেলা নির্বাচন নির্দলীয় ভিত্তিতে হওয়া সত্ত্বেও তাতে কোনো সাড়া পড়েনি। বরং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বেশ কয়েকজন বিএনপি-জামায়াত নেতা জয়ী হয়েছেন। বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থার সংকটের পেছনে দায়ী দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি। কলকাতায় ঝিনাইদহের একজন এমপির মৃত্যুর পর তার সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমে যেসব তথ্য উঠে এসেছে তা কোনো রাজনীতিক বা জনপ্রতিনিধির ভাবতেও লজ্জা লাগার কথা। উপজেলা নির্বাচনে এ পর্যন্ত সম্পন্ন দুই পর্বে প্রার্থীদের সম্পদের যে তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে তা সাধারণ মানুষের ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার উৎসাহ কমিয়ে দিয়েছে বললে অত্যুক্তি হবে না। কারণ একমাত্র আলাদিনের প্রদীপ পাওয়া কোনো লোক কিংবা বেপরোয়া লুটেরার পক্ষে রাতারাতি এমন সম্পদ অর্জন করা সম্ভব। উপজেলা নির্বাচনের দুই পর্বে ভোটার সংখ্যা কম হলেও ভোটারদের রায় লুটেরাদের জন্য সাবধান বাণী বলে বিবেচিত হতে পারে। নির্বাচনে গণবিচ্ছিন্ন এমপি-মন্ত্রীদের স্বজনরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরাজিত হয়েছেন। দেশের একজন প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রীর ভাই উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তৃতীয় হয়েছেন। আরও বহু উপজেলায় ঘটেছে একই ধরনের প্রত্যাখ্যানের ঘটনা। আমরা আশা করব, রাজনীতির ওপর মানুষের আস্থা অর্জনে রাজনৈতিক দলগুলো দুর্বৃত্ত ও লুটেরাদের নির্বাচনে প্রার্থী করা শুধু নয়, রাজনীতিতে রাখার ভ্রান্তি থেকে সরে আসার চেষ্টা করবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর