শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঋণ কেলেঙ্কারি

লাখ লাখ কোটি টাকা অনাদায়ী ব্যাংকিং খাতে

ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারির শেষ নেই। দুঃখ ও দুর্ভাগ্যের সংবাদ হচ্ছে, দেশে বর্তমানে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ ৫ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। মন্দ ঋণ ২ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা। ৭২ হাজার মামলায় অর্থঋণ আদালতে আটকা ১ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক সেমিনারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এই হতাশাজনক তথ্য প্রকাশ করেছে। সেমিনারের শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের সামনে কী?’ উত্তর হচ্ছে- ‘অন্তহীন সংকট ও আস্থাহীনতার অশনি সংকেত।’ সেমিনারে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদদের বক্তব্যে এই মর্মান্তিক দুঃসংবাদই ধ্বনিত হয়েছে। তারা বলেছেন, ‘ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা কমে যাচ্ছে। তাই এই খাত ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। দেশে ঋণখেলাপির বড় অংশই ইচ্ছাকৃত।’ বাস্তবচিত্র হচ্ছে- ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়ে ফেরত দেওয়ার দায়িত্বশীলতা কম গ্রহীতার মধ্যেই দেখা যায়। কারণ ফেরত না দিয়েও নানা অসিলায়, প্রচলিত আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে পার পাওয়া যায়। সে দৃষ্টান্তই বেশি। ব্যাংকের ঋণ যে নিয়ম-কাঠামোর আওতায় হওয়ার কথা, তা যখন যথাযথভাবে প্রতিপালিত হয় না- তখনই ঋণখেলাপি হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। নিয়ম মেনে সততা ও স্বচ্ছতার সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় ঋণ দিলে খেলাপি হওয়ার সুযোগ কমে যায়। অন্যদিকে খেলাপি ঋণ আদায়ে দেশে আইন থাকলেও সেসব প্রয়োগে জোরালো নজির নেই বললেই চলে। এ ছাড়া রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে-প্রভাবে ব্যাংকিং খাতে খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। অর্থঋণ আদালতে ঝুলে থাকছে অসংখ্য মামলা। ব্যাংক খাতের সব তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশও পাচ্ছে না। এসব কারণেই সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে পাল্লা দিয়ে স্ফীত হয়েছে খেলাপি ঋণের টাকার অঙ্ক। ব্যাংকের ওপর সাধারণ গ্রাহকের আস্থা কমছে। তারল্য সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। সব মিলে এক চরম হযবরল অবস্থা। এ থেকে উত্তরণে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাংকিং কমিশন গঠন করে এই খাতে ‘দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন’ করার উদ্যোগ নিতে হবে।

 

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর