মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী বাংলাদেশে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল। সে ধ্বংসস্তূপ থেকে বাংলাদেশ ফিনিক্স পাখির মতো আকাশে উড়াল দিয়েছে ‘বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী’ প্রবচনকে প্রাধান্য দিয়ে। বিশেষ করে গত দেড় দশকে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে দেশ এগিয়েছে নজরকাড়া গতিতে। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং এটিকে সামনে রেখে একের পর এক অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা এনেছে। বৈদেশিক বাণিজ্য মার খেয়েছে ভয়াবহভাবে। রবি ও সোমবার চট্টগ্রাম বন্দরে ডেলিভারি না হওয়ায় জাহাজ থেকে আসা কনটেইনার ওঠানামা এবং স্থানান্তরে দেখা দেয় জট। তবে বহির্নোঙরে মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাস ও লাইটারিং ছিল স্বাভাবিক। বুধবার ইন্টারনেট সেবা চালু হওয়ার পর শুরু হয় বন্দর থেকে কনটেইনার ডেলিভারির স্বাভাবিক কার্যক্রম। গত পাঁচ দিনে বিদেশ থেকে মোংলা বন্দরে ১৩টি জাহাজে আসা প্রায় ৯৪ হাজার টন ক্লিংকার, খাদ্যশস্য, পাথর খালাস হয়। কিন্তু সড়কে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান চলাচল না করায় তা নির্ধারিত স্থানে নিতে পারেননি আমদানিকারকরা। বুধবার থেকে এসব পণ্য সড়কপথে গন্তব্যে নেওয়া শুরু হয়। একই সঙ্গে নৌপথেও পণ্য নেওয়া হচ্ছে। গত ১৫ জুলাই থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত পায়রা বন্দরের জেটিতে ভিড়েছে ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লাবাহী ৪টি মাদার ভেসেল। ইতোমধ্যেই ৪টি জাহাজের কয়লা খালাস করা হয়েছে। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে পটুয়াখালীতে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। ধকল কাটিয়ে দেশের সামুদ্রিক বন্দরগুলোতে স্বাভাবিক তৎপরতা চালু হওয়া একটি ইতিবাচক খবর। সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ-আন্দোলন গণতান্ত্রিক সমাজের অনুষঙ্গ। এ অধিকার প্রয়োগের নামে জাতীয় সম্পদের ধ্বংসযজ্ঞ, ব্যবসা-বাণিজ্যের সর্বনাশ ডেকে আনে এমন কিছু কাক্সিক্ষত নয়। দেশের সরকারি খাতের চাকরিজীবী নগণ্য। ঘুষ-দুর্নীতি ছাড়া তাদের একাংশ জাতিকে বড় কিছু উপহার দিয়েছেন তা বলার সুযোগ নেই। বেসরকারি খাতের ওপর নির্ভরশীল সিংহভাগ মানুষ। সে ক্ষেত্রে যে কোনো ক্ষয়ক্ষতি মানেই কর্মসংস্থানের সুযোগ বন্ধ হওয়া। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বন্দর সচল হওয়ায় দেশের বৈদেশিক ব্যবসা-বাণিজ্যে সুবাতাস ফিরে আসবে এমনটিই প্রত্যাশিত।