ব্যবসা-বাণিজ্য যে কোনো জাতির উন্নতির চাবিকাঠি। কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে দুনিয়াজুড়েই এ খাত এগিয়ে। স্বাধীনতার পর ৫৩ বছরে বাংলাদেশ যেটুকু এগিয়েছে তা ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর ভিত্তি করে। এ বিষয়ের সব কৃতিত্ব দেশবাসীর। ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সুষ্ঠু নীতির অভাব ছিল এ দেশে শুরু থেকেই। পতিত সরকারের আমলেও ব্যবসা-বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হয়েছে একদিকে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা অন্যদিকে সরকারের ভুল নীতিমালার কারণে। গ্যাস, বিদ্যুতের অভাবে দেশীয় উদ্যোক্তারা যেমন হতাশ হয়েছেন তেমন বিদেশি উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে শিল্প গড়ে তুলতে নিরুৎসাহিত হয়েছেন। নিরাপত্তাহীনতা ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে বিরাজ করেছে সব সময়। ছাত্র-সমাজের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এ খাতে অচলাবস্থা দেখা দেয়, ভেঙে পড়ে উৎপাদন ব্যবস্থা। সে অবস্থার উত্তরণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে ব্যবসায়ীরা শিল্প-কারখানার উৎপাদন চালু রাখতে দ্রুত গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার অনুরোধও জানিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণেরও সুপারিশ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ব্যবসায়ীদের দাবির সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করে পাচারকৃত অর্থের ব্যাপারে তাদের কাছে কোনো তথ্য থাকলে তা সরকারের কাছে জমা দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, বৈশ্বিক ক্রেতাদের বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। রপ্তানি খাতের অংশীদারি বৃদ্ধিতে সম্ভাব্য সব কিছুই করা হবে। প্রধান উপদেষ্টার কাছে উত্থাপিত ব্যবসায়ীদের তিন দাবি পূরণ হলে দেশের উৎপাদন খাতের পুনরুজ্জীবনে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কড়া হতে হবে। সেসব চাঁদাবাজ দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে তারা ইতোমধ্যেই ভাই বদল করে নেমেছে অভিন্ন অপকর্মে। এ দুর্বৃত্তদের শায়েস্তা করতে উদ্যোগী হতে হবে।