দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার অন্তরায় সব কালাকানুন বাতিল এবং স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন সংবাদপত্রের সম্পাদকরা। সংবিধান সংস্কার, ব্যাংকিং খাত সংস্কার, সুশাসন প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন পর্যায়ে জরুরি সংস্কারের প্রস্তাবও করেছেন তারা। যেখানে সেখানে খুনের মামলায় সাংবাদিকদের না জড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে সম্পাদকদের পক্ষ থেকে। মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সম্পাদক পরিষদের বৈঠকে এসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ড. ইউনূস বলেছেন, তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন। তাঁর প্রত্যাশা সত্যিকার সক্রিয় গণমাধ্যম। সেজন্য যা দরকার, তিনি তা করার আশ্বাস দেন। সরকার পরিচালনায় ভুলত্রুটি ধরিয়ে দিতেও গণমাধ্যমকে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, আপনারা পথ দেখাবেন, ভুল করলে জোর গলায় বলবেন। সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। বৈঠকে সবাই বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের ওপর বিশেষ জোর দেন। ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লবের পর যখন দেশজুড়ে, প্রতিটি ক্ষেত্রে জোর কদমে সমাজ সংশোধন ও রাষ্ট্র সংস্কার কর্মযজ্ঞ চলছে, এ সময় গণমাধ্যমের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি এবং অতীতে এর ওপর দমন-পীড়নের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে আশা করা যায়। বিশেষত, গত দেড় দশকে যেখানে পদে পদে হুমকি-ধমকি, হামলা-মামলা, বিজ্ঞাপন বন্ধ করে ভাতে মারার অপকৌশল মোকাবিলা করতে হয়েছে অনেক দায়িত্বশীল সংবাদপত্রকে। কণ্ঠরোধ করা হয়েছে সত্য উচ্চারণে। সেখানে ড. ইউনূসের জোর গলায় ভুল ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান নিঃসন্দেহে ইতিবাচক বার্তা দেয়; আশার আলো দেখায়। যে বার্তা গণমাধ্যমে মুক্তকণ্ঠে সত্য প্রকাশের সাহস, শক্তি ও প্রেরণা জোগাবে। আমরা তাঁকে সাধুবাদ জানাই। প্রত্যাশা করি- বর্তমান মুক্ত প্রবাহে দেশের গণমাধ্যম যেন সত্যিকার অর্থেই সততা এবং আদর্শিক ও পেশাদারি নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পারে। আর তার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ‘চতুর্থ স্তম্ভ’ হিসেবে মহিমান্বিত মর্যাদা সমুজ্জ্বল করতে সক্ষম হয়।