বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, তার দল জাতীয় সরকারব্যবস্থায় দেশ পরিচালনা দেখতে চায়। জনগণের সমর্থনে বিএনপি আগামীতে দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে জাতীয় সরকারব্যবস্থা ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট চালু করতে চায়। বুধবার ঢাকা বিভাগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ভিডিও কনফারেন্সে দেওয়া তার এ বক্তব্য খুবই প্রাসঙ্গিক ও তাৎপর্যের দাবিদার। বিএনপির শীর্ষ নেতা বলেছেন, পূর্বসূরিরা রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে একটা স্বাধীন দেশ আমাদের দিয়ে গেছেন। এ যুদ্ধ জয়ের মূল শক্তি ছিল প্রশ্নহীন জাতীয় ঐক্য। দুঃখজনক হলেও সত্য, স্বাধীনতার পর আমরা সেই ঐক্যের শক্তিকে কাজে লাগাতে পারিনি। অত্যাবশ্যকীয় একটা জাতীয় সরকারের পরিবর্তে আওয়ামী লীগের দলীয় সরকার ক্ষমতায় আসায় দেশ বিভক্ত হয়ে পড়ে প্রথম দিন থেকেই। ফলে জাতির একটা বিরাট অংশ ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দেশ গঠনে কোনো অবদান রাখতে পারেনি। স্মর্তব্য, বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে দীর্ঘ ২৩ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের পথ ধরে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। মুক্তিযুদ্ধে প্রবল পরাক্রান্ত পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর লজ্জাজনক পরাজয় ঘটে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, তিস্তা, করতোয়া, বুড়িগঙ্গা পাড়ের বীর জাতির ঐক্যের কারণে। স্বাধীনতার পর জাতীয় ঐক্যের সরকার প্রতিষ্ঠার ডাক উঠেছিল মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সব দলের পক্ষ থেকে। কিন্তু ব্যক্তি বিশেষের ক্ষমতাদর্পী মনোভাবে দেশ পুনর্গঠনে মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী বাস্তবতার নিরিখে জাতীয় সরকার গঠনের দাবি উপেক্ষিত হয়। জুলাই গণ অভ্যুত্থানে পৌনে ১৬ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতনের পর দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, প্রশাসন, বিচারব্যবস্থাসহ সব ক্ষেত্রে যে জঞ্জাল জমে উঠেছে, তা অপসারণে জাতীয় ঐক্যের সরকারের বিষয়টি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। বিগত পৌনে ১৬ বছরের দুঃশাসনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সংস্কার এখন সময়ের দাবি। সংস্কারের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে নির্বাচিত জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। রাজনৈতিক দলগুলো এ প্রশ্নে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারলে সরকারের পক্ষেও দ্রুত নির্বাচন দেওয়া সম্ভব হবে। পূরণ হবে সংস্কারের কাক্সিক্ষত লক্ষ্য।