সংস্কারের অভাবে দেশের বেশির ভাগ সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। বন্যা ও অতি বৃষ্টিপাতে খানাখন্দে ভরে উঠেছে গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়ক। রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং কর্তৃপক্ষীয় দায়িত্বহীনতাসহ নানা কারণে দেশের বেশির ভাগ সড়ক জনদুর্ভোগ ও ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনো কোনো সড়কপথকে মারণফাঁদ হিসেবে বিবেচনা করছে যানবাহন চালক এবং যাত্রীরা। এসব ব্যাপারে দায়িত্বশীল মহলকে অবহিত করার পরও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। জুলাই গণ অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ নেতাদের পাশাপাশি দলীয় ঠিকাদাররাও পলাতক। ফলে বেশির ভাগ সড়ক সংস্কারের কাজ থমকে রয়েছে আড়াই মাস ধরে। রাজশাহী-বানেশ্বর হয়ে পাবনার ঈশ্বরদী পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়ক চওড়া ও সংস্কারের কাজ শেষ হয়েছে এক বছরও হয়নি। গত বছরের ডিসেম্বরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু বছর না ঘুরতেই সড়কের কিছু অংশ ফুলে উঠেছে, কিছু অংশে সড়কের দুই পাশ দেবে গেছে। আবার কিছু অংশের সড়ক হয়ে পড়েছে ক্ষতবিক্ষত। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের পাঁচলিয়া বাজার থেকে মান্নাননগর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার অংশ বেহাল দশা হয়ে পড়েছে। এ সড়কের অন্তত অর্ধশতাধিক পয়েন্টে তৈরি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। অব্যাহত ভারী বর্ষণে এসব গর্ত সারাক্ষণ পানিতে পূর্ণ থাকছে, প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। গর্তে পড়ে যানবাহনের যন্ত্রাংশ নষ্ট ও বিকল হচ্ছে। দেশের কয়েক শ সড়কের অবস্থা উপরোক্ত সড়কের মতো। সড়ক-মহাসড়কগুলোর বেহাল অবস্থার জন্য দায়ী সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার কাজে পুকুর চুরির ঘটনা। প্রতিটি সড়ক নির্মাণ বা সংস্কারে যে অর্থ বরাদ্দ হয় তার অর্ধেকও ব্যয় করা হয় কি না সন্দেহ। এসব দেখাশোনার দায়িত্ব যাদের তাদের যোগসাজশে ঠিকাদাররা অনেক সময় কাজ না করেও বিল ওঠানোর সুযোগ পান এটি একটি ওপেন সিক্রেট। আবার সঠিকভাবে নির্মাণ বা সংস্কার কাজ করেও উৎকোচ না দিলে হয়রানির শিকার হতে হয় এটিও একটি অলিখিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনগণের ট্যাক্সের টাকার অপচয় রোধে এসব ব্যাপারে সরকারকে কড়া হতে হবে।