ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত হয়েছে। কিন্তু ভোটের পরিবেশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো কিছু শঙ্কা রয়েছে। তা প্রকাশ করেছে বৃহস্পতিবার ইসির সঙ্গে সংলাপে বসা কয়েকটি রাজনৈতিক দল। তারা নির্বাচনি আইনে আরও কিছু সংস্কার চায়। প্রথম দিনের সংলাপে ১২টি দল অংশ নেয়। ১১টি বিষয় নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। উল্লেখ্য অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সার্বিক পরিবেশ-পরিস্থিতি সৃষ্টি করাই এর উদ্দেশ্য। ফলে দলগুলোর মতামত, সুপারিশ নিশ্চয় বিবেচনা করবে ইসি। সেখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তবে তার লক্ষ্যে সর্বোচ্চ সদিচ্ছা ও সক্রিয়তা নিয়ে সচেষ্ট থাকবে ইসি। তফসিল ঘোষণার পর কোথাও অনিয়ম দেখা গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে কমিশন। সিইসির ভাষায়, ‘রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে খেলবে। এতে নিরপেক্ষ রেফারির ভূমিকা পালন করতে চায় ইসি।’ নিয়ম মেনে খেলা এবং তা পরিচালনায় উভয় পক্ষের ন্যায্যতার সমন্বয় না হলে, নির্বাচনপ্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আর তেমন হলে তা জাতির জন্য হবে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। প্রায় দেড় যুগ দেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগের নাগরিক মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। গত তিনটি নির্বাচন ছিল খুবই বিতর্কিত। এগুলোতে জনগণের সঙ্গে প্রহসনের মাধ্যমে গদি আঁকড়ে, অনাচার-দুরাচার, দুঃশাসন, গুম-খুন-লুটপাটের রামরাজত্ব কায়েম করেছিল কর্তৃত্ববাদী সরকার। বিরোধী দলমত দমনে চরম নিষ্ঠুরতা এবং সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর সঙ্গে সাধারণ নাগরিকের আকাশপাতাল বৈষম্য সৃষ্টি করে, পাপের গড়া পূর্ণ করেছিল পতিত স্বৈরাচার। গণ অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে এবার তাই নাগরিকদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। জাতি চায় প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুত ‘ইতিহাস সেরা, ঈদের দিনের মতো আনন্দমুখর পরিবেশে’ হোক এবারের ভোট। জনগণ এতে স্বতঃস্ফূর্ত ব্যাপক অংশগ্রহণে পছন্দের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবে। নির্বাচিত সরকারের হাতে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব অর্পিত হবে। তারা জুলাইর চেতনা বাস্তবায়ন, সংস্কার, বিচার ইত্যাদির চলমানতা রক্ষা করে, পূর্ণতার দিকে এগিয়ে নেবে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা এবং গণতন্ত্রের সুদৃঢ় ভিত্তি রচনা করে, জাতির ভাগ্যোন্নয়নের অঙ্গীকার পূরণ করবেন।