শনিবার, ১৮ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা
গাইডলাইন .......

পছন্দের কলেজে ভর্তিবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের করণীয়

পছন্দের কলেজে ভর্তিবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের করণীয়

সায়েম [ছদ্মনাম] এ বছর রাজধানীর মোটামুটি মানের একটি মাধ্যমিক স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পায়নি। স্কুলে পড়াকালীন সায়েম ও তার বাবা-মার স্বপ্ন ছিল এসএসসিতে সর্বোচ্চ ফলাফল লাভ করলে সে রাজধানীরই শীর্ষ একটি কলেজে ভর্তি হবে। কিন্তু আশায় গুড়ে বালি কারণ তার এসএসসির ফল প্রত্যাশার ধারেকাছেও হয়নি। ফলে শীর্ষ কলেজে পড়ার স্বপ্ন তার মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায়। কিন্তু তাই বলে তো পড়াশোনা থামিয়ে রাখা যাবে না। তাই সায়েম  অপেক্ষা করতে থাকে কবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। এরই মধ্যে সায়েম ও তার বাবা-মা ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন কলেজে ভর্তির ব্যাপারে  খোঁজখবর নিতে শুরু করে। অবশেষে আসে সেই ক্ষণ। শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রণীত ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী রাজধানীসহ দেশের সমস্ত কলেজগুলো শিক্ষার্থী ভর্তির লক্ষ্যে তাদের স্ব স্ব প্রয়োজনীয় শর্তাবলী রেখে ভর্তি সংক্রান্ত তথ্য তাদের নিজ নিজ ওয়েবসাইট বা নোটিস বোর্ডে প্রকাশ করে। এ দেখে শিক্ষার্থীরা ভর্তির নীতিমালা মেনে অনলাইনে বা টেলিটক মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে তাদের পছন্দের কলেজগুলোতে আবেদন করে। সায়েমও এর ব্যতিক্রম নয়। সেও তার ফলাফলের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পছন্দক্রম অনুসারে অনলাইনে দশটি কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করে। এরপর কলেজে ভর্তির জন্য ফলাফল প্রকাশের অপেক্ষায় থাকে সে। কিন্তু এসএসসির ফলাফলের মতো এবারও হতাশ হতে হয় সায়েমকে কারণ পছন্দকৃত দশটি কলেজের কোনোটিতেই প্রয়োজনীয় মেধাক্রমের মধ্যে তার স্থান নেই। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সায়েম ও তার বাবা-মা। ‘আমার কি তাহলে কোনো কলেজেই ভর্তি সম্ভব না, এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খায় সায়েমের মাথায়। এরকম অবস্থার মুখোমুখি সায়েমের মতো আরও হাজার হাজার শিক্ষার্থী। তাদের আসলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। অনলাইনে বা এসএমএসে আবেদনের সময় প্রতিটি শিক্ষার্থীকেই একটি পিন নম্বর অর্থাৎ শনাক্তকরণ নম্বর দেওয়া হয়েছে। এ পিন নম্বরটি ব্যবহার করে এসব শিক্ষার্থী আসন খালি থাকা সাপেক্ষে দেশের যেকোনো কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবে। অনলাইন বা এসএমএসে আবেদন করে পছন্দের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত এসব শিক্ষার্থীর জন্য অন্যতম অপশন হতে পারে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোডস্থ ‘কুইন মেরী কলেজ’। ‘সেগা-জামাল ফাউন্ডেশন’র আওতায় ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি ব্যবসা নয়, বরং একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম একটি সুশিক্ষিত জাতি গড়াই কলেজটির প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্য। এ লক্ষ্য পূরণে কলেজটির রয়েছে নিজস্ব নিরাপদ ক্যাম্পাস, বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাব, ডিজিটাল ক্লাসরুম, শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষা কার্যক্রম নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং একঝাঁক অভিজ্ঞ ও গুণগত শিক্ষক। ফলে অনেক কম জিপিএ নিয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরাও সর্বোচ্চ জিপিএ নিয়ে এইচএসসি উত্তীর্ণ হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের জিপিএ-৫  প্রাপ্তির হার ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ। অথচ এদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর এসএসসিতে জিপিএ-৫ ছিল। সেইসঙ্গে শতভাগ পাসের সাফল্য ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত রয়েছে। আর এটাই কলেজটির প্রধান বিশেষত্ব। ফলে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নজর কেড়েছে। ফলশ্রুতিতে এর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বছর বছর লক্ষ্যণীয় হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষেও প্রতিষ্ঠানটিতে উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম চলছে। আরও জানতে ফোন ০১৭৫০০০০৯৪৬-৭। ভিজিট করতে পারও www.queenmarycollege.edu.bd প্রতিষ্ঠানটির ফেসবুকে পেজে আরও প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যাবে।

পছন্দের প্রতিষ্ঠানের আবশ্যিক বৈশিষ্ট্যসমূহ  : একটি ভালো কলেজের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো একঝাঁক অভিজ্ঞ শিক্ষক, অডিও ভিজুয়্যাল এইড শিক্ষা পদ্ধতি, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ক্লাসরুম, কম্পিউটার ল্যাব, ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা আলাদা আবাসিক হোস্টেল, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি ও পরিবহন সুবিধা। সেইসঙ্গে বিগত বছরগুলোয় ভালো ফলাফল। কুইন মেরী কলেজ এসব সুযোগ-সুবিধা ও সাফল্য সংবলিত তেমনই একটি প্রতিষ্ঠান। একটু সচ্ছল ও সচেতন পরিবারের শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানটিকে নির্দ্বিধায় বেছে নিতে পারে।

কলেজটিতে কেবল বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ভর্তির সুযোগ রয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ২.৫ এবং ব্যবসায় শাখায় এসএসসি বা সমমানে ন্যূনতম জিপিএ ২.০ প্রাপ্তরাও প্রতিষ্ঠানটিতে ভর্তি হতে পারবে। প্রতিষ্ঠানটিতে বিশেষ বৃত্তিতেও পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। এসএসসির ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে তিনটি ক্যাটাগরিতে শিক্ষার্থীদের এ বৃত্তি [টিউশন ফি ওয়েভার] দেওয়া হয়। এসএসসিতে জিপিএ-৫ থাকলে কোনো শিক্ষার্থীর টিউশন ফি পড়বে বার্ষিক মাত্র ৪৮ হাজার টাকা! আর বাকি অর্থ মিলবে বৃত্তি বাবদ। আবার কোনো শিক্ষার্থীর জিপিএ ৪.০০ থেকে ৪.৯৯ থাকলে তার বৃত্তির পরিমাণ দাঁড়াবে বার্ষিক ১ লাখ ২০ হাজার টাকা অর্থাৎ তার বার্ষিক টিউশন ফি মাত্র ৬০ হাজার টাকা। একইভাবে জিপিএ মাত্র ৩.০০ থেকে ৩.৯৯ হলে টিউশন ফি দাঁড়াবে বছরে মাত্র ৭২ হাজার টাকা অর্থাৎ বৃত্তি বাবদ মিলবে ১ লাখ ৮ হাজার টাকা। বৃত্তিপ্রাপ্ত প্রতিটি শিক্ষার্থীই তাদের টিউশন ফি ১২টি কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবে।

শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে, কলেজ জীবন হচ্ছে তোমাদের সবচেয়ে মূল্যবান সময়। এজন্য তোমাদের ভালো কলেজ বেছে নিতে হবে। সুন্দর পরিবেশে থেকে সঠিকভাবে পড়াশোনা করে যেসব শিক্ষার্থী এ সময়টার যথাযথ ও সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারবে তারাই উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফলাফল নিয়ে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হবে। সেজন্য ভালো একটি কলেজের কোনো বিকল্প নেই। অভিভাবকদেরও উচিত তাদের সন্তানদের সঠিক প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানো। ভালো একটি কলেজ শিক্ষার্থীদের পথ প্রদর্শকের ভূমিকা পালন করে। তাই  প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

সর্বশেষ খবর