শিরোনাম
সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা : এক নজরে করণীয়

শরীফ খান

মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা : এক নজরে করণীয়

জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ইউনেস্কো’র তথ্যানুসারে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছে উচ্চশিক্ষার পছন্দনীয় গন্তব্যস্থল হিসেবে বিশ্বে বর্তমানে মালয়েশিয়ার অবস্থান ১১তম। দেশটিতে এখন এক লাখের মতো বিদেশি শিক্ষার্থী তাদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছে। এশিয়ার ‘হাইয়ার এডুকেশন হাব’খ্যাত এ দেশটিতে পড়াশোনা করতে যেতে চাইলে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের করণীয় কী তা নিয়েই নিচে আলোচনা করা হলো :

প্রথম ধাপ [সাবজেক্ট ও প্রতিষ্ঠান বাছাই এবং আবেদন] : উচ্চশিক্ষার প্রথম ধাপটি হলো কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই করে পছন্দের বিষয়ে পড়াশোনার জন্য আবেদন করা। এ লক্ষ্যে আবেদনফরম পূরণ। আবেদনের সময় সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও মার্কসিটের স্ক্যান কপি, পাসপোর্টের প্রথম পাঁচ পৃষ্ঠার স্ক্যান কপি, এডুকেশন মালয়েশিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেস ইএমজিএস ফি যা ২ হাজার থেকে ৩ হাজার মালয়েশিয়ান রিংগিট [শিক্ষার্থীর বাছাইকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে তা ভিন্ন ভিন্ন হয়।] এবং ইএমজিএস অনুমোদিত কোনো স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে করা মেডিকেল রিপোর্ট জমা দিতে হবে।

দ্বিতীয় ধাপ [ভিসা অ্যাপ্রোভাল লেটার পেতে আবেদন] : মালয়েশিয়ান অভিবাসন দফতর কর্তৃক প্রদত্ত ভিসা অ্যাপ্রোভাল লেটার [ভিএএল] পাওয়া-ই এ ধাপের কাজ। এজন্য ইএমজিএস বরাবর আবেদন করতে হবে যা শিক্ষার্থীর বাছাইকৃত প্রতিষ্ঠান-ই শিক্ষার্থীর হয়ে করে দেবে। এজন্য একটা নির্দিষ্ট ফি, মেডিকেল রিপোর্ট এবং সম্পূর্ণ পাসপোর্টের স্ক্যান কপি জমা দিতে হবে। ভিএএল পেতে সাধারণত চৌদ্দ কর্মদিবস সময় লাগে।

তৃতীয় ধাপ [ভিসা আবেদন ও প্রাপ্তি] : মালয়েশিয়ার এন্ট্রি ভিসা পাওয়াই এ ধাপের মূল লক্ষ্য। এজন্য শিক্ষার্থীর বাছাইকৃত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত অফার লেটার, ভিসা অ্যাপ্রোভাল লেটার, সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সনদ, মূল পাসপোর্ট, স্থানীয় মালয়েশিয়ান হাইকমিশনের চাহিদামাফিক অন্যান্য সকল আবেদনফরম যথাযথভাবে পূরণ এবং ভিসা ফি ৫ হাজার টাকাসহ হাইকমিশনে জমা দিতে হবে। হাইকমিশন যাচাইবাছাই শেষে একটা নির্দিষ্ট সময় পরে ভিসা প্রদান করবে।

চতুর্থ ধাপ [টিউশন ফি প্রদান ও টিকিট ক্রয়] : এ ধাপে শিক্ষার্থী তার বাছাইকৃত বিষয়ে পড়ার জন্য টিউশন ফি প্রদান করবে এবং বিমানের টিকিট কাটবে। সবশেষে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে উড়াল দেবে। সাধারণত টিটি করে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্ট বরাবর টিউশন ফি জমা দেওয়া হয়। মালয়েশিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়াশোনার জন্য বার্ষিক টিউশন ফি পড়বে ৩ হাজার থেকে ৬ হাজার ডলারের মতো। সেইসঙ্গে আবাসন ও খাওয়া-দাওয়াবাবদ বছরে আরও প্রায় আড়াই থেকে ৩ হাজার ডলার খরচ পড়বে। অর্থাৎ মালয়েশিয়ায় চার বছরের বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি পেতে সর্বসাকুল্যে খরচ দাঁড়াবে প্রায় ২০ হাজার ডলারের মতো যা বাংলাদেশি মুদ্রায় দাঁড়ায় ১৬ লাখ টাকার মতো।

পঞ্চম ধাপ [স্টুডেন্ট পাস এনডোর্সমেন্ট] : শিক্ষার্থী মালয়েশিয়ায় পৌঁছার পরপরই সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি বিমানবন্দরে তাদের গ্রহণ করে ও পাসপোর্ট নেয়। মূলত স্টুডেন্ট পাস অনুমোদন বা তাতে সংশ্লিষ্ট স্টিকার সংযোজনের জন্যই পাসপোর্ট নিয়ে নেওয়া হয়। এজন্য চৌদ্দ কর্মদিবস সময় লাগে। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার পাওয়ার পরই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীর হয়ে ইএমজিএস বরাবর স্টুডেন্ট পাস চেয়ে আবেদন করে থাকে। এজন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রদান করতে হয়। প্রথমে এক বছর অবস্থান করার জন্য স্টুডেন্ট পাস দেওয়া হয় যা এক বছর অন্তর অন্তর নবায়ন করতে হয়। স্টুডেন্ট পাস হচ্ছে দেশটির অনুমোদিত কোনো প্রতিষ্ঠানে কোনো একটি প্রোগ্রামে পড়াশোনার জন্য একটি মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা ও অনুমোদন। সাধারণত সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজে পড়াশোনার জন্য প্রথমে এক বছর [যা বছর বছর নবায়ন করা যায়] এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র ও স্কিলস ট্রেনিং সেন্টারের জন্য সর্বোচ্চ এক বছরের জন্য বা কোর্সের মেয়াদ অনুসারে স্টুডেন্ট পাস দেওয়া হয়।

বিস্তারিত তথ্য : মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার বিষয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রকৃত ও বিস্তারিত তথ্য প্রদান করে এডুকেশন মালয়েশিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেস। এদের ওয়েবসাইট হলো  http://educationmalaysia.gov.my/; উল্লেখ্য, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষার বিষয়ে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের গত ২৩ বছর ধরে পরামর্শ দিচ্ছে ‘বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক।’ বিস্তারিত জানতে ফোন  করুন ০১৭২০৫৫৭১১৮, ০১৭২০৫৫৭১০৭। বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান বাছাই থেকে শুরু করে ভিসা আবেদন পর্যন্ত অনেক বিষয় রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে অনেক শিক্ষার্থীরই যথাযথ জ্ঞান থাকে না। এক্ষেত্রে কনসালটেন্সিগুলো মূল্যবান পরামর্শ দিয়ে থাকে।

সর্বশেষ খবর