বুধবার, ২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা : বাংলা

মেহেরুন্নেসা খাতুন, সিনিয়র শিক্ষিকা

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা : বাংলা

এনসিটিবি প্রকাশিত নমুনা প্রশ্ন (সেট-খ)

গত জুনে (২০১৮) বাংলা ও ইংরেজির নতুন/পরিবর্তিত নম¡র বণ্টন, পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি এই দুটি বিষয়ে ২ সেটের নমুনা প্রশ্ন প্রকাশ করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এরপরই পড়ালেখা পাতায় বিষয় দুটির প্রথম সেটের নমুনা প্রশ্ন ছাপা হয়। শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য আজ বাংলা বিষয়ের নমুনা প্রশ্ন (সেট-খ) ছাপা হলো।

 

পূর্ণমান : ১০০ সময় : ৩ ঘণ্টা

সৃজনশীল অংশ (৪০ নম্বর)

 

গদ্যাংশ

যেকোনো ২টি প্রশ্নের উত্তর দাও।                                                                                                          ১০x২ = ২০

১. ঐতিহ্যবাহী ফুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহানা তার বিদ্যালয়ের সুনাম নিয়ে গর্ব করে। কিন্তু শ্রেণিকক্ষ অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন থাকার ব্যাপারটি তাকে ভীষণ পীড়া দেয়। বিষয়টি শ্রেণিশিক্ষককে জানালে তিনি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রয়োজনীয়তার ওপর উদ্দীপনামূলক এক বক্তব্য দেন এবং ছুটির পর সবাইকে থাকতে বলেন। চরম উত্তেজনা নিয়ে সবাই অপেক্ষা করে, কিন্তু স্যারের দেখা নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেল তিনি বাসায় চলে গেছেন। শাহানা মর্মাহত হয় এবং বিষয়টি নিয়ে ভাবতে থাকে। পরদিন পরিকল্পনামাফিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সে কয়েকটি দলে ভাগ করে এবং ছুটির পর পালাক্রমে এক একটি দল শ্রেণিকক্ষটি পরিষ্কার করতে শুরু করে। তারা শ্রেণিকক্ষের দেয়ালে বিভিন্ন মনীষীর ছবি টানিয়ে দেয়। ফলে শ্রেণিকক্ষটি আকর্ষণীয় ও পাঠের উপযোগী হয়ে ওঠে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শাহানাদের ভীষণ প্রশংসা করে এবং পুরস্কারের ব্যবস্থা করে।

ক) ‘দশচক্রে ভগবান ভূত’ কথাটির অর্থ কী?   ১

খ) ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে ‘পুষ্পবিহীন সৌরভ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ২     গ) উদ্দীপকের শ্রেণি শিক্ষকের মধ্যে ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের যে দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে, তা ব্যাখ্যা কর।          ৩

ঘ) শ্রেণি শিক্ষক নন, শাহানাই কাজী নজরুল ইসলামের কাক্সিক্ষত ব্যক্তিত্ব-‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।    ৪

২. গ্রীষ্মের ছুটিতে গ্রামে নানাবাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল সুমি। হৈচৈ-আনন্দে সময় ভালোই কাটছিল তার। এরই মধ্যে একদিন সুমির বড় মামার মেয়ে সোহানা কলেজ থেকে ফিরে অজ্ঞান হয়ে যায়। বাড়ির সবাই তাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কেউ মাথায় পানি ঢালে, কেউ হাত-পায়ের তালুতে সরিষার তেল মালিশ করে। সুমির নানি বলেন, ‘সোহানার ওপরে জিনের আছর হইছে, তাড়াতাড়ি ঝাড়ফুঁকের ব্যবস্থা করো।’ অবস্থা দেখে সুমি সবার উদ্দেশে বলে, ‘প্রচুর গরমে এবং না খেয়ে থাকার কারণে সোহানা আপু অসুস্থ হয়েছে। ঝাড়ফুঁক নয়, তাকে ডাক্তার দেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে।’ ডাক্তার দেখানোয় সোহানা সুস্থ হয়ে ওঠে।

ক) মামার তৈলচিত্রের কাছে গিয়ে নগেন অস্ফুট স্বরে কী বলেছিল?    ১

খ) নগেনের কেন মনে হয়েছিল যে সে পাগল হয়েছে? বুঝিয়ে লেখ।       ২

গ) উদ্দীপকের সুমি ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের কার প্রতিনিধিত্ব করে ব্যাখ্যা কর।           ৩

গ) সুমির নানিকে কি নগেনের প্রতিচ্ছবি বলা যায়? ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের আলোকে তোমার মতামত দাও। ৪

৩. অংশ-১ : দরিদ্র কৃষক ওসমানের টানাপড়েনের সংসার হলেও আজকের দিনটার জন্য সে বিগত কয়েক দিন ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। নতুন জামাকাপড় বানিয়েছে, কষ্ট করে বেশ কিছু টাকাও জমিয়েছে। মনটা তার বেশ ফুরফুরে। কারণ তালুকদার সাহেব যে আজ তার সঙ্গে সুন্দর করে কথা বলবেন, খোঁজখবর নেবেন এবং পান-সুপারি ও মিষ্টিমুখে আপ্যায়ন করবেন।

অংশ-২ : গ্রীষ্মের ছুটিতে দাদুবাড়ি গেছে আবীর। বিকেলবেলা দাদুর

সঙ্গে গ্রামের বাজারে যেয়ে দেখে-দোকানপাট সব রঙিন কাগজে সাজানো, আপ্যায়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি রাখা হয়েছে, মাইকে গান বাজছে। দোকানে ঢুকতেই সবাই খুব খাতির-যত্ন করল। ভীষণ ভালো লাগল আবীরের।

ক) বাংলার কৃষক পরিবারের প্রাচীন আঞ্চলিক মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানটির নাম কী?  ১

খ) বাঙালি জাতিসত্তা গঠনের সঙ্গে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন কিভাবে জড়িত ছিল তা বুঝিয়ে লেখ।   ২

গ) অংশ-১-এর ওসমান ‘বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধের কোন উৎসবে যোগ দিয়েছিল তা ব্যাখ্যা কর।               ৩

ঘ) আবীরের দেখা উৎসবটি বাংলা নববর্ষের প্রধান সর্বজনীন উৎসবের একটি উৎসব মাত্র-মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।          ৪

 

কবিতাংশ

যেকোনো ২টি প্রশ্নের উত্তর দাও।                                                                      ১০x২ = ২০

৪। নবদম্পতি আব্দুল বারী ও সামিনা চৌধুরীর সংসারে পরপর দুটি কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। এ জন্য তাঁদের দুজনেরই ভীষণ মন খারাপ। তাঁদের মতে, মেয়েরা তো পরের ঘরে চলে যাবে। বংশের বাতি দেওয়ার তো আর কেউ থাকবে না। অবশেষে পুত্রের আশায় তৃতীয় সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা। এবারও হলো কন্যাসন্তান। মনের দুঃখে মেয়ের নাম রাখলেন ‘মেঘলা’। কারণ তাঁদের জীবনে নাকি ঘন কালো মেঘের অন্ধকার নিয়ে এসেছে মেয়েটি। এ ঘটনা জানার পর বারী সাহেবের এক বন্ধু বললেন, ‘ঘন কালো মেঘ থেকে ঝরা বৃৎষ্টিতেই সারা পৃথিবী সুশীতল হয় এবং জীবন ও প্রাণে স্পন্দন জাগে। কাজেই মেঘ ছাড়া বৃষ্টির আশা করা বোকামি।’

ক) যুগের ধর্ম কী?         ১

খ) কবির চোখে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নেই কেন?         ২

গ) উদ্দীপকের নবদম্পতির মানসিকতায় ‘নারী’ কবিতার যে দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে তা ব্যাখ্যা কর।           ৩

ঘ) বারী সাহেবের বন্ধুর বক্তব্যে কাজী নজরুল ইসলামের অনুভূতি যথার্থভাবে প্রতিফলিত হয়েছে কী? তোমার মতের পক্ষে যুক্তি দাও।        ৪

৫. অংশ-১ : মায়ের ভাষায় কথা বলাতে

স্বাধীন আশায় পথ চলাতে,

হাসি মুখে যারা দিয়ে গেল প্রাণ,

সেই স্মৃতি নিয়ে গেয়ে যাই গান।

অংশ-২ : ভাইয়ের বুকের রক্তে আজিকে

রক্ত মশাল জ্বলে দিকে দিকে।

সংগ্রামী আজ মহা জনতা

কণ্ঠে তাদের নব বারতা,

শহীদ ভাইয়ের স্মরণে।

ক) ‘...তবু তোরা পার পাবি?’ চরণটির শূন্যস্থানে কী বসবে?           ১

খ) ‘এমন সময় ঝড় এল এক, ঝড় এল ক্ষ্যাপা বুনো’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?     ২ [চলবে]

সর্বশেষ খবর