রবিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

প্রশ্ন ফাঁসসহ শিক্ষার দুর্নীতি বন্ধে দুদকের ১৫ সুপারিশ

মেধাবী এবং মননশীল মানবসম্পদ সৃষ্টি করতে হলে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ করতেই হবে। কারণ, পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস দুর্নীতির মাত্রায় নতুন সংযোজন।

মোস্তফা কাজল

প্রশ্ন ফাঁসসহ শিক্ষার দুর্নীতি বন্ধে দুদকের ১৫ সুপারিশ

প্রশ্নফাঁস বন্ধসহ শিক্ষার দুর্নীতিরোধে সরকারের কাছে ১৫ দফা সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। গত বছরের ৮ এপ্রিল দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে হস্তান্তর করা বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব সুপারিশ করেন। এতে বলা হয়েছে, শিক্ষা ক্ষেত্রে জ্ঞান ও মেধা যাচাইয়ের একমাত্র এবং প্রাচীনতম পদ্ধতি হচ্ছে পরীক্ষা। মেধাবী এবং মননশীল মানবসম্পদ সৃষ্টি করতে হলে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ করতেই হবে। কারণ, পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস দুর্নীতির মাত্রায় নতুন সংযোজন।

দুদকের সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটিতে মেধাবী, সৎ এবং মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষক বাছাই করে নিয়োগের ব্যবস্থা করা। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটিতে ইংরেজি অনুবাদের জন্য একজন অনুবাদক নিয়োগ দেওয়া। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণে যারা থাকবেন তাদের কাছ থেকে অঙ্গীকারনামা নেওয়া। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত মডারেটরসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কঠোর নজরদারিতে রাখা, বিশেষ লক সংবলিত বক্সের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রতিটি ট্রেজারিতে প্রশ্নপত্র পাঠাতে হবে। এই তালা জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে খোলা হবে এবং একই পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রশ্নপত্র উপজেলা পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠানো যেতে পারে।

দুদক বলছে, পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা যতদূর সম্ভব কমিয়ে আনতে হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রসমূহ উপজেলা শহরেই থাকা বাঞ্ছনীয়। সব পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন হতে হবে সৃজনশীল ও বর্ণনামূলক। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষায় বিদ্যমান বহু নির্বাচনী প্রশ্ন প্রণয়ন পদ্ধতি বাতিল করা যেতে পারে। বিভিন্ন প্রকল্পের গাড়ি অবৈধভাবে ব্যবহার বন্ধে মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ চায় দুদক। এক্ষেত্রেও মন্ত্রণালয় দুর্নীতি দমন কমিশনের সহযোগিতা নিতে পারে। সুপারিশে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিচালিত প্রকল্পসমূহের বিভিন্ন ক্রয়, গাড়ি ব্যবহার, অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ, প্রশিক্ষণের নামে অর্থ ব্যয়ে অনিয়মের যে সব অভিযোগ রয়েছে তা দূরীকরণের উদ্যোগ প্রয়োজন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা অথবা তার ইউনিটের মাধ্যমে বিভিন্ন মনিটরিং টুলস যেমন-পরিদর্শন, অডিটিং, রিপোর্টিং ইত্যাদি প্রয়োগ করে এসব ক্ষেত্রে এ জাতীয় অনিয়ম দূর করা যেতে পারে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুসারে সনদপত্রের শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং শিক্ষাসংক্রান্ত সব কার্যক্রম বন্ধ করা যেতে পারে। দুদক বলছে, প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছে শিক্ষার মূল ভিত্তি। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষকরা হবেন শিক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন। তাদের জীবনমান এবং ক্যারিয়ার প্ল্যানিং যুগোপযোগী করা প্রয়োজন। জাতীয় শিক্ষা নীতি অনুসারে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা জরুরি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

সর্বশেষ খবর