রবিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির : বাংলা প্রথম পত্র

মো. জিল্লুর রহমান, প্রভাষক

একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির : বাংলা প্রথম পত্র

ক- বিভাগ (গদ্য)

 

১. রাত তখন ১২টা। তখন মোবাইলে ফোন এলো। রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বলল, ‘ভাই, আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে প্রায় ২০০ লোকের খাবার অবশিষ্ট আছে। খাবার নষ্ট না করে কী করা যায়?’ তাৎক্ষণিক কয়েকজনকে নিয়ে রওনা হলাম। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, যে পরিমাণ খাবার আছে তা দিয়ে দুই শতাধিক প্যাকেট করা যাবে। তা-ই করা হলো। খাবারের প্যাকেটগুলো রাস্তার পাশে অবস্থান নেওয়া অসহায় লোকদের মধ্যে বণ্টন করা হলো। আমরা ফিরে আসার সময় খেয়াল করলাম, অভুক্ত লোকগুলো কত তৃপ্তির সঙ্গে খাবার খাচ্ছে।

(ক) বঙ্কিমচন্দ্র কোন পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন?

(খ) ‘সোহাগের বিড়াল’ বা ‘গৃহমার্জার’ শব্দ দুটি বিড়াল রচনায় কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

(গ) উদ্দীপকটি বিড়াল রচনার সঙ্গে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? আলোচনা কর।   

(ঘ) ‘দরিদ্রের ব্যথায় ব্যথিত হইলে যে কিছু অগৌরব নাই অথবা উচ্ছিষ্ট খাবার নষ্ট না করে তার যথাযথ ব্যবহারের যে সকরুণ মিনতি বিড়ালের কণ্ঠে শোনা যায় উদ্দীপকটি যেন তারই প্রতিচ্ছবি’ মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।   

২. যাকে বুঝি না, যাঁর মত বুঝতে পারি না, তাঁর মুখের সামনে মাথা উঁচু করে বলতে হবে যে, আপনার মত বুঝতে পারছি না বা আপনার এ মত এই কারণে ভুল। তাতে যিনি সত্যিকার দেবতা, তিনি কখনই রুষ্ট হবেন না, বরং তোমার সরলতা ও সত্য প্রিয়তার দুঃসাহসিকতার জন্য শ্রদ্ধাই করবেন। বিদ্রোহ মানে কাউকে না মানা নয়, বিদ্রোহ মানে যেটা বুঝি না, সেটাকে মাথা উঁচু করে ‘বুঝি না’ বলা। যে লোক তার নিজের কাজের জন্য নিজের কাছে লজ্জিত নয়, সে ক্রমেই উচ্চ হতে উচ্চতর স্তরে স্বর্গের পথে উঠে চলবেই চলবে। আর যাকে পদে পদে তার ফাঁকি আর মিথ্যার জন্য কুণ্ঠিত হয়ে চলতে হয়, সে ক্রমেই নিচের দিকে নামতে থাকে, এটাই নরক যন্ত্রণা। আমার বিশ্বাস আত্মার তৃপ্তিই স্বর্গসুখ, আর আত্মপ্রবঞ্চনার পীড়াই নরক যন্ত্রণা।  

 

(ধূমকেতুর পথ : কাজী নজরুল ইসলাম)

 

(ক) ‘কুর্নিশ’ শব্দের অর্থ কী?

(খ) ‘এই পরাবলম্বনই আমাদের নিষ্ক্রিয় করে ফেললে’ উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।  

(গ) ‘আমি সে দাসত্ব হতে সম্পূণ মুক্ত’ উক্তিটি উদ্দীপকের আলোকে আলোচনা কর।

(ঘ) ‘আমার পথ’ ও ‘ধূমকেতুর পথ’ প্রবন্ধের লেখক সত্য প্রকাশে নির্ভীক ও অসংকোচ মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর।

৩. গ্রামের নাম কাশীপুর। গ্রাম ছোট, জমিদার আরও ছোট। তবু দাপটে তাঁর প্রজারা টু শব্দটি করিতে পারে না এমনই প্রতাপ। ইহারই সীমানায় পথের ধারে গফুর জোলার বাড়ি। তাহার মাটির প্রাচীর পড়িয়া গিয়া প্রাঙ্গণ আসিয়া পথে মিশিয়াছে। একদিন দ্বিপ্রহরে জমিদারের পিয়াদা যমদূতের ন্যায় আসিয়া প্রাঙ্গণে দাঁড়াইয়া, চিৎকার করিয়া ডাকিল, গফরা ঘরে আছিস?

গফুর তিক্ত কণ্ঠে সাড়া দিয়া কহিল, আছি। কেন?

বাবুমশায় ডাকচেন, আয়।

গফুর কহিল, আমার খাওয়াদাওয়া হয়নি, পরে যাব।

এত বড় স্পর্ধা পিয়াদার সহ্য হইল না। সে কুসিত একটা সম্বোধন করিয়া কহিল, বাবুর হুকুম, জুতো মারতে মারতে টেনে নিয়ে যেতে।

গফুর দ্বিতীয়বার আত্মবিস্মৃত হইল, সে-ও একটা দুর্বাক্য উচ্চারণ করিয়া কহিল, মহারানীর রাজত্বে কেউ কারো গোলাম নয়। খাজনা দিয়ে বাস করি, আমি যাব না। 

 

(মহেশ : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)

 

(ক) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত প্রথম গল্প কোনটি?

(খ) ‘নিজেকে তার ছ্যাঁচড়া, নোংরা, নর্দমার মতো মনে হয়।’ উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।

(গ) উদ্দীপকের পিয়াদার সঙ্গে ‘মাসি-পিসি’ গল্পের কোন চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে? সাদৃশ্যের কারণ ব্যাখ্যা কর।

(ঘ) ‘উদ্দীপকের গফুর এবং ‘মাসি-পিসি’ গল্পের মাসি-পিসি একই শক্তির জাঁতাকলে পিষ্ট এবং তাদের প্রতিবাদের ধরনও একই’ মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।    

৪. ২৭ মার্চ, শনিবার, ১৯৭১। হাসপাতালে আউটডোর গেটে ঢোকার আগে রুমী আরেকবার ‘ও গড’ বলে ব্রেক কষে ফেলল। পাশেই শহীদ মিনারের স্তম্ভগুলো গোলার আঘাতে ভেঙে দুমড়ে মুখ থুবড়ে রয়েছে। আমার দুই চোখ পানিতে ভরে গেল। এ কী করেছে ওরা! শহীদ মিনারের গায়ে হাত? চারদিকে ইতস্তত ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে মাথায় জাল দেওয়া হেলমেট পরা সৈন্য। ... হাসপাতালে লাইট নেই, পানি নেই, খাবার নেই, শহীদ মিনারের ওপর ক্রমাগত শেলিংয়ে হাসপাতাল বিল্ডিংয়ের ওই দিকটা প্রায় বিধ্বস্ত।  

 

(একাত্তরের দিনগুলি : জাহানারা ইমাম)

 

(ক) ‘রেইনকোট’ গল্পটি প্রকাশিত হয় কত সালে?   

(খ) ‘রাশিয়ায় ছিল জেনারেল উইন্টার, আমাদের জেনারেল মনসুর’—উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।   

(গ) শহীদ মিনারের ওপর আক্রোশের বিষয়টি ‘রেইনকোট’ গল্পে কীভাবে ফুটে উঠেছে? উদ্দীপকের আলোকে আলোচনা কর।    

(ঘ) উদ্দীপকটি ‘রেইনকোট’ গল্পের একাংশ মাত্র মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।

 

খ-বিভাগ (পদ্য)

 

৫. কচি লেবুপাতার মতো নরম সবুজ আলোয়

পৃথিবী ভ’রে গিয়েছে এই ভোরের বেলা;

কাঁচা বাতাবীর মতো সবুজ ঘাস-তেমনি সুঘ্রাণ-

হরিণেরা দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে নিচ্ছে।

আমারো ইচ্ছে করে এই ঘাসের এই ঘ্রাণ

হরিৎ মদের মতো গেলাসে-গেলাসে পান করি,

ঘাসের পাখনায় আমার পালক,

ঘাসের ভিতর ঘাস হয়ে জন্মাই কোনো এই নিবিড়

ঘাস-মাতার শরীরের সুস্বাদ অন্ধকার থেকে নেমে।        

 

(ঘাস : জীবনানন্দ দাশ)

 

(ক) জীবনানন্দ দাশের মায়ের নাম কী?  

(খ) “সেখানে হলুদ শাড়ি লেগে থাকে রূপসীর শরীরের ‘পর’ উক্তিটি ব্যাখ্যা কর। 

(গ) জীবনানন্দ দাশের কবিতায় প্রকৃতি ও প্রাণিকুলের অবিচ্ছেদ্য সংহতির বিষয়টি উদ্দীপক ও ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতার আলোকে আলোচনা কর।  

(ঘ) “সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকের চেয়ে ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতার ভাবের গভীরতা ও ব্যাপকতা অধিক।” মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর।    

৬. হে মহান শহীদেরা, তোমরা এই বাংলায় নেই, এই নির্দয় সত্য মেনে নিতে পারি না কিছুতেই আমরা যখন শীত সকালের মধুর রোদে হাঁটি কিংবা কোনো জ্যোৎস্না রাতে শুনি রবীন্দ্রসংগীত, তখন উপলব্ধি করি তোমাদের উপস্থিতি। যখন আমরা সুন্দর এবং কল্যাণের অভিষেকের প্রস্তুতির জন্যে মিছিল করি, যখন পশু-তাড়ানোর সংগ্রামে আমরা মিলিত হই জনসভায়, তখন স্পষ্ট দেখতে পাই

তোমরা আছো আমাদের পাশে। তোমাদের চোখে মানবতার অবিনশ্বর দীপ্তি, হাতে উজ্জ্বলতম ভবিষ্যতের ঠিকানা। আমাদের সম্মিলিত অগ্রযাত্রার পথে অজস্র ফুলের বিকাশ, পাখিদের নীলিমা-ছোঁয়া গীতধারা। [চলবে]

সর্বশেষ খবর