সোমবার, ১৮ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির রসায়ন প্রথম পত্র

মুহাম্মদ জিল্লুর রহমান, প্রভাষক

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির রসায়ন প্রথম পত্র

১. জাল পাসপোর্ট বা জাল টাকা শনাক্তকরণে UV রশ্মির ব্যবহার লেখ।

উত্তর : দৃশ্যমান বেগুনি রশ্মির চেয়ে শক্তিশালী বিকিরিত রশ্মিকে UV রশ্মি বলে। প্রকৃত ব্যাংক নোট ও পাসপোর্টে প্রতিপ্রভ পদার্থ দিয়ে তৈরি নিরাপত্তা সুতা, জলছাপ, নকশা লুকায়িত থাকে, যা জাল টাকা বা জাল পাসপোর্টে থাকে না। প্রকৃত নোট বা পাসপোর্টে UV রশ্মি আপতিত করলে প্রতিপ্রভ পদার্থ দ্বারা ক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের UV রশ্মি শোষিত হয় এবং বড় তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের দৃশ্যমান আলো বিকিরিত হয়; কিন্তু জাল টাকা বা জাল পাসপোর্টে প্রতিপ্রভ পদার্থ দ্বারা তৈরি কোনো নকশা বা জলছাপ না থাকায় এটি কোনো দৃশ্যমান আলোকরশ্মি বিকিরণ করতে পারে না। এভাবে UV রশ্মি দিয়ে জাল টাকা বা জাল পাসপোর্ট শনাক্ত করা যায়।

২. গ্রাফাইট বিদ্যুৎ পরিবাহী; কিন্তু হীরক বিদ্যুৎ অপরিবাহী কেন?

উত্তর : গ্রাফাইটের প্রতিটি কার্বন পরমাণু এর নিকটতম অন্য তিনটি কার্বন পরমাণুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে জালের মতো একটি সমতলীয় স্তর তৈরি করে। এ ক্ষেত্রে একটি মুক্ত ইলেকট্রন থাকায় গ্রাফাইটের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ পরিবহনে সহায়তা করে; অন্যদিকে হীরক স্ফটিকে প্রতিটি কার্বন পরমাণু অপর চারটি কার্বন পরমাণুর সঙ্গে সমযোজী বন্ধনের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বৃহদাকার অণুতে পরিণত হয়। হীরকের কার্বন পরমাণুর সব যোজনী ইলেকট্রন সমযোজী বন্ধন গঠনে ব্যবহৃত হওয়ায় কোনো মুক্ত ইলেকট্রন থাকে না। তাই হীরক বিদ্যুৎ অপরিবাহী।

৩. প্রভাবকের বৈশিষ্ট্যগুলো লেখ।

উত্তর : নিম্নে প্রভাবকের  বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করা হলো :

১. কোনো প্রভাবকই বিক্রিয়া শুরু করতে পারে না।

২. খুব সামান্য পরিমাণ প্রভাবকই বিক্রিয়ার গতিকে প্রভাবিত করার জন্য যথেষ্ট।

৩. বিক্রিয়া শেষে প্রভাবকের মোট ভরের কোনো পরিবর্তন হয় না।

৪. প্রত্যেক বিক্রিয়ার জন্য প্রভাবক নির্দিষ্ট।

৫. কিউরিং করা হয় কেন?

উত্তর : কাঁচা চামড়ার ওপর লবণ ছিটিয়ে চামড়ার পানি দূর করার প্রক্রিয়াকে কিউরিং বলে। পশু জবাই করার পর থেকে ট্যানারিতে চামড়া প্রক্রিয়াজাত শুরু করতে কয়েক দিন সময় লেগে যায়। এ সময় যাতে চামড়ার ওপর কোনো ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে না পারে সে জন্য কিউরিং করা হয়। এ ছাড়া কিউরিংয়ের মাধ্যমে চামড়া থেকে যথাসম্ভব পানি বের করে নেওয়া হয়, যা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৫. সিমেন্ট ক্লিংকারের সঙ্গে জিপসাম মেশানো হয় কেন?

উত্তর : সিমেন্ট ক্লিংকারের সঙ্গে ২-৩% জিপসাম মেশানো হয়। কারণ, সিমেন্টে উপস্থিত ট্রাই ক্যালসিয়াম অ্যালুমিনেট সিমেন্টকে পানির উপস্থিতিতে দ্রুত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। তাই জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া ধীরগতি করার জন্য সিমেন্টের সঙ্গে জিপসাম মেশানো হয়।

৬. জিংকের প্রমাণ বিজারণ বিভব -0.76V বলতে কী বোঝ?

উত্তর : প্রমাণ হাইড্রোজেন তড়িৎদ্বার ও জিংক তড়িৎদ্বারের সমন্বয়ে গঠিত কোষের তড়িৎচালক বল--0.76V । এ ক্ষেত্রে হাইড্রোজেনের তুলনায় জিংকের ইলেকট্রন ত্যাগের প্রবণতা বেশি, তাই জিংক তড়িৎদ্বারে জারণ বিক্রিয়া সম্পন্ন হয় এবং জিংকের জারণ বিভব ধনাত্মক ও বিজারণ বিভব ঋণাত্মক হয়। যেহেতু প্রমাণ হাইড্রোজের তড়িৎদ্বারের বিভব শূন্য, তাই জিংক তড়িৎদ্বারের বিজারণ বিভব--0.76V.

৭. ফ্রিডেল ক্রাফট বিক্রিয়ায় আর্দ্র AlCl3 ব্যবহার করলে কী ঘটবে?

উত্তর : ফ্রিডেল ক্রাফট বিক্রিয়ায় আর্দ্র AlCl3 ব্যবহার করলে AlCl3 লুইস এসিড হিসেবে কাজ করতে পারে না। এখানে পানি লুইস এসিড হিসেবে কাজ করে। ফলে AlCl3 ও CH3Cl এর সঙ্গে বিক্রিয়া করতে পারবে না। এর ফলে কোনো কার্বক্যাটায়ন তৈরি হয় না। ফলে বেনজিনচক্রে আগমনকারী কোনো প্রজাতি উৎপন্ন হয় না। এ জন্য বিক্রিয়াটি ঘটবে না।

৮. সেমিমোলার দ্রবণ একটি প্রমাণ দ্রবণ কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : যেসব দ্রবণের ঘনমাত্রা নির্দিষ্টভাবে জানা থাকে সেসব দ্রবণকে প্রমাণ দ্রবণ বলে। সেমিমোলার দ্রবণ একটি প্রমাণ দ্রবণ, কারণ এর ঘনমাত্রা নির্দিষ্ট, যার মান ০.৫ মোল। যেহেতু সেমিমোলার দ্রবণের ঘনমাত্র নির্দিষ্টভাবে জানা থাকে; তাই সেমিমোলার দ্রবণকে প্রমাণ দ্রবণ বলা হয়।

৯. Na2CO3 কে প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ বলা হয় কেন?

উত্তর : যেসব পদার্থ প্রকৃতিতে বিশুদ্ধরূপে পাওয়া যায় এবং বায়ুর উপাদান দ্বারা আক্রান্ত হয় না বলে দীর্ঘদিন যাবৎ দ্রবণের ঘনমাত্রা অপরিবর্তিত থাকে সেসব পদার্থকে প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ বলা হয়। Na2CO3 -কে প্রকৃতিতে বিশুদ্ধরূপে পাওয়া যায় এবং বায়ুর উপাদান দ্বারা Na2CO3 আক্রান্ত হয় না বলে এর ঘনমাত্রা অপরিবর্তিত থাকে। এ জন্য Na2CO3 -কে প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ বলা হয়।

১০. তীব্র এসিড ও তীব্র ক্ষারের প্রশমন তাপের মান ধ্রুবক হয় কেন?

উত্তর : কক্ষ তাপমাত্রায় এসিড ও ক্ষারের বিক্রিয়ায় এক মোল পানি উৎপন্ন হলে যে তাপ উৎপন্ন হয় তাকে প্রশমন তাপ বলে। তীব্র এসিড ও তীব্র ক্ষারের প্রশমন তাপ ধ্রুবক এবং এর মান -৫৭.৩৪ শল/সড়ষ। তীব্র এসিড ও তীব্র ক্ষারের প্রশমন তাপ ধ্রুবক; কারণ তীব্র এসিড ও তীব্র ক্ষার হিসেবে যেটাকেই নেওয়া হোক না কেন, প্রশমন বিক্রিয়ায় এসিড থেকে প্রাপ্ত H+ আয়ন ও ক্ষার থেকে প্রাপ্ত OH- আয়ন বিক্রিয়া করে এক মোল পানি উৎপন্ন করে এবং পানি উৎপন্ন করতে -৫৭.৩৪ শল/সড়ষ তাপ উৎপন্ন হয়। এ জন্য তীব্র এসিড ও তীব্র ক্ষারের প্রশমন তাপের মান ধ্রুবক হয়।

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

১. সক্রিয়ন শক্তি কাকে বলে?

উত্তর : ন্যূনতম যে শক্তির ফলে একটি বিক্রিয়া সম্পন্ন হয় বা একটি বিক্রিয়া সম্পন্ন হতে ন্যূনতম যে শক্তির প্রয়োজন হয় তাকে সক্রিয়ন শক্তি বলে।

২. অবস্থান্তর মৌল কাকে বলে?

উত্তর : যেসব মৌলের ইলেকট্রনবিন্যাসের পর অরবিটাল ইলেকট্রন দ্বারা আংশিক পূর্ণ থাকে তাদের অবস্থান্তর মৌল বলে।

৩. MSDS -এর পূর্ণরূপ কী?

উত্তর : Material Safety Data Sheet.

৪. আধুনিক পর্যায় সূত্রটি লেখ।

উত্তর : ‘মৌলসমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মাবলি তাদের পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয়।’

৫. MRI এর পূর্ণরূপ কী?

উত্তর : MRI এর পূর্ণরূপ হলো Magnetic Resonance Imaging.

৬. মাইক্রোওয়েভের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য কত?

উত্তর: মাইক্রোওয়েভের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য 106-108nm.

৭. pH কী?

উত্তর : কোনো দ্রবণের হাইড্রোজেন আয়নের ঘনমাত্রার ঋণাত্মক লগারিদমকে pH বলে।

৮. জলাশয়ে পানির পিএইচের মান কত হলে জলজ উদ্ভিদ ও মাছ মারা যায়?

উত্তর : ৩-এর নিচে।

৯. Na টুকরাকে কেরোসিনের পাত্রে রাখা হয় কেন?

উত্তর : Na টুকরাকে কেরোসিনের পাত্রে রাখা হয় নতুবা মিথানলের সঙ্গে বিক্রিয়া ঘটিয়ে নিঃশেষ হয়ে যাবে।

১০. ওয়াটার বাথের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কত পর্যন্ত হয়ে থাকে?

উত্তর : ওয়াটার বাথে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৯৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হয়ে থাকে।  

সর্বশেষ খবর