বুধবার, ২০ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

একসঙ্গে মোট ছয়টি ব্র্যান্ডের এসি পাবেন

একসঙ্গে মোট ছয়টি ব্র্যান্ডের এসি পাবেন

রিতেশ রঞ্জন, ট্রান্সকম ডিজিটালের হেড অব বিজনেস

ট্রান্সকম গ্রুপ এখন দেশের অন্যতম বড় শিল্পগোষ্ঠী। ওষুধ থেকে শুরু করে খাদ্যদ্রব্য, চা, ইলেকট্রনিক পণ্য, ভোক্তাপণ্য এমনকি গণমাধ্যম ব্যবসা- যেখানেই হাত দিয়েছে ট্রান্সকম গ্রুপ, সেখানেই ‘সোনা’ ফলেছে। এ গ্রুপে এখন প্রায় ১৭ হাজার কর্মী আছেন। আর এর সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছেন আরও লাখ খানেক মানুষ। ট্রান্সকম গ্রুপের ভিত গড়ে উঠেছিল সেই ১৮৮৫ সালে, লতিফুর রহমানের দাদা খান বাহাদুর ওয়ালিউর রহমানের হাত ধরে। এরপর উত্তরা ব্যাংক থেকে ৫০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে লতিফুর রহমান ব্যবসা শুরু করেছিলেন। আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সেই ব্যবসা সম্প্রসারিত হয়ে আজকের ট্রান্সকম গ্রুপ তৈরি হয়। পরিণত হয় দেশের অন্যতম বড় শিল্প পরিবার। এখন তা দিগন্ত বিস্তার করে পাখা মেলেছে ওষুধ, খাদ্য ও পানীয়, ইলেকট্রনিক, মিডিয়াসহ নানা ব্যবসায়। ১৩৫ বছর ধরে এই পরিবার এ দেশে ব্যবসা করছে।

১৯৯৩ সাল থেকে ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায় যাত্রা শুরু করা ট্রান্সকম ইলেকট্রনিক্সের রিটেইল প্রতিষ্ঠান হিসেবে ট্রান্সকম ডিজিটাল সুনামের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রধান শহরগুলোতে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। ট্রান্সকম ডিজিটাল থেকে পণ্য ক্রয়ের মাধ্যমে ক্রেতা ৩৩টি ব্যাংকের ইএমআই, ফ্রি ডেলিভারি ও ইন্সটলেশন, সহজ কিস্তি এবং এক্সচেঞ্জ অফার ইত্যাদি বিশেষ সুবিধাগুলো পেয়ে থাকেন। এই গরমে চাহিদা বেড়েছে এসির। বাংলাদেশের বাজারে অন্যান্য হোম অ্যাপলায়েন্সের পাশাপাশি ট্রান্সকমের এসির রয়েছে আলাদা সুনাম। এসির বাজারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন ট্রান্সকম ডিজিটালের হেড অব বিজনেস রিতেশ রঞ্জন। দেশের বাজার সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) বাজার দিন দিন বাড়ছে। ২০১৬ সালের মধ্যে পণ্যটির সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি ধরা হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ শতাংশ। একই সময়ে অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি হবে ১০ শতাংশের কম। মানুষ এখন বেশ ব্যস্ত জীবনযাপন করছেন। এ জন্য কর্মক্ষেত্রে কিংবা ঘরে ফিরে তারা চান আরামদায়ক পরিবেশ। এ ক্ষেত্রে অন্যতম অনুষঙ্গ এসি। ফলে দেশে পণ্যটির বাজার বড় হচ্ছে।’

এসির বাজার বৃদ্ধির পেছনে জলবায়ু পরিবর্তন ও নগরায়ণের স্পষ্ট প্রভাবের কথা বলেন তিনি। তার ভাষায়, ‘দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। নারীরাও কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে আসছেন। তাদের আয় যোগ হওয়ায় পারিবারিক সচ্ছলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে দেশের এসির বাজারে এসেছে বিরাট পরিবর্তন। বেড়েছে চাহিদা। ঢাকা, চট্টগ্রাম বা বিভাগীয় শহরগুলোতেই মূলত এসি বেশি ব্যবহৃত হয়। এখন থেকে তিন বছর আগেও বড় শহরগুলোর বাইরে খুব বেশি এসি বিক্রি হতো না। কিন্তু এখন ছোট শহরগুলোতেও এসির ব্যবহার বাড়ছে।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে (বরিশাল, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও কুষ্টিয়া অঞ্চল) এসির ব্যবহার বেড়েছে। ট্রান্সকমের মাল্টিপল সলিউশন ও একই ছাদের নিচে একাধিক ব্র্যান্ডের উপস্থিতি ক্রেতাদের আগ্রহী করে তুলেছে। ক্রেতারা আমাদের কাছে একসঙ্গে মোট ছয়টি ব্র্যান্ডের এসি পাবেন। এগুলো মোটামুটি তিন স্তরের পণ্য। এর মধ্যে বড় বাজেটের প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড হচ্ছে ডেইকিন ও রিলপুল। মধ্যম বাজেটের মধ্যে ক্রেতারা পাবেন প্যানাসনিক, স্যামসাং ও হিটাচি (নতুন আসছে)। আর যাদের বাজেট তুলনামূলক কম, তাদের জন্য থাকছে ট্রান্সটেম ব্র্যান্ড।

ট্রান্সকম ডিজিটাল হিটাচির অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নতুন এক ধরনের এসি বাজারে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে। এটি হবে আই-সি টেকনোলজির বিশেষায়িত এসি, যেটি কক্ষে থাকা ব্যক্তির অবস্থান শনাক্ত করে ওই নির্দিষ্ট জায়গা ঠাণ্ডা করবে। আবার কক্ষ থেকে কেউ বের হয়ে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যন্ত্রটি বন্ধ হয়ে যাবে। এ বছর নতুন এসি বাজারে আসবে। তা ছাড়া বায়ু পরিশোধক ও ফোর-ডি এয়ার ফ্লো (ডান-বা ওপর নিচ চারদিকে সমানভাবে বাতাস দেয়) প্রযুক্তি সংবলিত এসিও পাওয়া যাবে ট্রান্সকম ডিজিটালের বিক্রয় কেন্দ্রে।

ট্রান্সকম ডিজিটাল এসি ক্রয়ে গ্রাহকদের জন্যও দিচ্ছে বিশেষ ধরনের সুবিধা- জানিয়ে রিতেশ রঞ্জন বলেন, এসির জন্য আমরা ১২ থেকে ৩৬ মাস পর্যন্ত মাসিক কিস্তি সুবিধা (ইএমআই) দিচ্ছি। ক্রেতারা কোনো সুদ পরিশোধ ছাড়াই এই সুবিধা পান। এ ক্ষেত্রে এক ইনভয়েসে লাখ টাকার নিচে পণ্য কিনলে ১২ মাস, ২ লাখ টাকা পর্যন্ত কিনলে ২৪ মাস ও ২ লাখ টাকার বেশি দামের পণ্য ক্রয়ে ৩৬ মাসের ইএমআই সুবিধা পান ক্রেতারা। তা ছাড়া বিক্রয়োত্তর সেবা তো আছেই। সে ক্ষেত্রে আমরা অন্য যে কোনো প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ক্রেতাদের সমস্যা দ্রুত সমাধান করে থাকি।

বাংলাদেশের সার্বিক ইলেকট্রনিক বাজার নিয়ে তিনি বলেন, এখন স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো ভালো করছে। আবার যেসব আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের বাংলাদেশে ব্যবসা ছিল না, তারাও আসছে। পাশাপাশি এখন যাদের ব্যবসা আছে, তারাও সক্ষমতা বাড়াচ্ছে।

সব মিলিয়ে বাজারে নানামুখী পরিবর্তন আছে, গতি বাড়ছে। ক্রেতাদের হাতে বিকল্প বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকায় অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় বাজার এখন বেশ প্রতিযোগিতাপূর্ণ। এতে দিন শেষে ক্রেতারাই লাভবান হবেন।

সর্বশেষ খবর