বুধবার, ২০ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

সব ইলেকট্রনিক্স পণ্য দেশেই উৎপাদন করবে ভিশন

আমরা এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছি। এখন বলা যায় বেশির ভাগ পণ্যই বাংলাদেশের পণ্য। তবে ব্যাকওয়ারড লিংকেজ ও কাঁচামালের জন্য আমাদের চীননির্ভর হতেই হচ্ছে। ভিশন-এর বাজার শেয়ার প্রায় ১৫ শতাংশ। দেশের অর্থনীতিতে এখন পর্যন্ত ১০ শতাংশ পর্যন্ত ভূমিকা রাখছে...

সব ইলেকট্রনিক্স পণ্য দেশেই উৎপাদন করবে ভিশন

রকিব আহমেদ, হেড অব মার্কেটিং, ভিশন ও বিজলি

বাংলাদেশ এখন প্রায় শতভাগ বিদ্যুতায়িত হচ্ছে। এ ছাড়াও বর্তমানে এদেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ব্যবসায়িক নতুন ইনভেস্টমেন্ট সবকিছু মিলিয়ে এখন মানুষের জীবনযাত্রা এখন অনেক আধুনিক হচ্ছে। এই যেমন প্রতিদিন বাজার ঝামেলায় না থেকে মানুষ এখন সাত দিনের বাজার একবারে করছে। কারণ রেফ্রিজারেটর সেই সংরক্ষণ নিরাপত্তা দিচ্ছে। আবার ওয়াশিং মেশিনের কথা যদি বলতে হয় তাহলে শহুরে ব্যস্ত জীবনে এটা একটা অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হচ্ছে। সুতরাং যত দিন যাচ্ছে আমরা ইলেকট্রনিক হোম অ্যাপলায়েন্স পণ্যের ওপর নির্ভর হয়ে পড়ছি ও এই পণ্য আমাদের জীবনকে আরও সহজ করে তুলেছে। বাংলাদেশে হোম অ্যাপলায়েন্স পণ্য উৎপাদন ও বিপণনকারী অন্যতম প্রতিষ্ঠান আরএফএল ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড। আরএফএলের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এবং ভিশন ব্র্যান্ড যা আজ মানুষের পছন্দের তালিকায় পরিণত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির হেড অব মার্কেটিং রাকিব আহমেদ দেশে হোম অ্যাপলায়েন্স পণ্য সম্পর্কে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে কথা বলেন।

রাকিব আহমেদ বলেন, স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এদেশের উদ্যোক্তা এখন ইলেকট্রনিক্স পণ্য প্রস্তুতে এগিয়ে আসছেন। এ ছাড়াও সরকার এ ক্ষেত্রে অনেক সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে যেমন ইকোনমিক জোন, ট্যাক্স রিবেট, অর্থের জোগান ইত্যাদি। এ ছাড়াও দেশি ইলেকট্রনিক্স পণ্যের মান আমদানি পণ্যের চেয়েও ভালো হচ্ছে। তার ওপর বিক্রয় পরবর্তী সেবা দেশীয় কোম্পানি ভালো দিচ্ছে। তাই দেখা যাচ্ছে, আমদানি নির্ভরতার চেয়ে এখন দেশীয় পণ্যের প্রতি মানুষের আস্থা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের পণ্যের রেঞ্জ অনেক ভালো। আমরা বর্তমানে ভিশন রেফ্রিজারেটর, রাইস কুকার, আয়রন, ইন্ডাকশন কুকার, ব্লেন্ডার, ভোল্টেজ স্টেব্লাইজার, সকল প্রকার ফ্যান, কেতলি, মশার ব্যাট ইত্যাদি বানাচ্ছি। এ ছাড়াও এসি, এলইডি টিভি, ওয়াশিং মেশিন, ওভেন কিছুদিনের মধ্যে উৎপাদনে যাব যা এখন অ্যাসেম্বল (কমপ্লিট নক ডাউন) করছি। তিনি বলেন, ভিশন ইলেকট্রনিক্স পণ্যের মান আন্তর্জাতিক পণ্যের তুলনায় কোনো অংশে কম নয়। নিত্য নতুন ডিজাইন ও আধুনিক ফিচার সম্পন্ন পণ্যে বাজারের কাস্টমারদের নজর কেড়েছে। আমাদের বর্তমানে ফার ফিল্ড ভয়েস কন্ট্রোল, গুগল সার্টিফাইড ও অফিশিয়াল অ্যান্ড্রয়েড টিভি আছে যা রিমোট ছাড়াই আপনার ভয়েস কমান্ডে কাজ করবে যা এখন বাংলাদেশের বাজারে আমরাই প্রথম।  প্রতিবছর বাজার চাহিদা ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। রাকিব আহমেদ বলেন, ইলেকট্রনিক্স পণ্য বাজারজাতকরণে লোকাল বড় কোম্পানিগুলোকে কিছুটা বাধার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন- উৎপাদনের ক্ষেত্রে সরকারের আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে, কাঁচামাল আনার ক্ষেত্রে ফ্রেইট চার্জ লাগামহীনভাবে বাড়ছে। এতে করে কাস্টমার ও ব্যবসায়ী উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অধিকাংশ পণ্যের কাঁচামাল আমদানি নির্ভর। তবে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ দেশীয় সোর্স। সরকার পণ্য উৎপাদনের ওপর অনেক সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। যার ফলে আমদানি নির্ভরতা সাত বছর আগেও যা ছিল তা ৫০ শতাংশ কমে এসেছে। ভিশন এখন পর্যন্ত এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অল্প কিছু এক্সপোর্ট করেছে যার মধ্যে ভারত, নেপাল, কম্বোডিয়া, কোরিয়া, লাওস  রয়েছে।

এ ছাড়াও ওশেনিয়া দেশগুলোর মধ্যে ফিজি, সামোয়া ও আফ্রিকান সাব কন্টিনেন্ট বারনিকা ফাসওসহ আরও কিছু দেশ রয়েছে। এশিয়া, আফ্রিকা ও ওশানিয়া সাব কন্টিনেন্ট দেশগুলোতে বাংলাদেশ রপ্তানি করে থাকে। তিনি আরও বলেন, আমরা এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছি। এখন বলা যায়, বেশির ভাগ পণ্যই বাংলাদেশের পণ্য। তবে ব্যাকওয়ারড লিংকেজ ও কাঁচামালের জন্য আমাদের চীননির্ভর হতেই হচ্ছে। ভিশনের বাজার শেয়ার প্রায় ১৫ শতাংশ। দেশের অর্থনীতিতে এখন পর্যন্ত ১০ শতাংশ পর্যন্ত ভূমিকা রাখছে। তিনি আরও বলেন, ইলেকট্রিক খাতের মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হয়। এটা বাংলাদেশে উৎপাদন সম্ভব যদি এই ধরনের কারখানা এ দেশে গড়ে ওঠে। আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি এ ধরনের কারখানা বাংলাদেশে গড়ে উঠতে শুরু করেছে। নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, আরএফএল ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড যা আরএফএল অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এবং ভিশন ব্র্যান্ড যা আজ মানুষের পছন্দের তালিকায় পরিণত হচ্ছে। আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আমরা সব ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদনে যাবই যাব এবং আমাদের দেশকে স্বনির্ভর বাংলাদেশে রূপান্তর করতে যা যা পদক্ষেপ নেওয়া উচিত তা-ই করব। এ ছাড়াও ভিশন ব্র্যান্ডকে এদেশের মানুষের সবচেয়ে ভালোবাসার পণ্যে রূপান্তর করা ও রপ্তানি খাতে বড় ভূমিকা রাখা।

 

 

সর্বশেষ খবর