বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

চলছে তিন নায়িকার লড়াই...

শোবিজ প্রতিবেদক

চলছে তিন নায়িকার লড়াই...

অনেক বছর ধরে যে চিত্র দেখা যায়নি, এবার তা দেখা যাচ্ছে। ঈদের ছবি দেখার জন্য হলগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে দর্শক। প্রতিটি শো হাউসফুল। অনেক দর্শক টিকিট না পেয়ে ফিরে এসেছে। আবার অনেক দর্শক বাড়তি টাকা দিয়ে কালোবাজারি থেকে টিকিট কিনেছে। কালোবাজারি বিষয়টিকে যেখানে সবার নেতিবাচকভাবে দেখার কথা, সেখানে সবাই এটাকে এখন দেখছে ইতিবাচক হিসেবে। কারণ একটাই— দর্শক ফিরেছে হলে। বলা যায় শিকারি, সম্রাট আর মেন্টাল কাঁপিয়ে দিচ্ছে পুরোপুরি। তিনটি ছবির নায়কই শাকিব খান। বহু বছর পর শাকিব এভাবে একনায়কতন্ত্র চালালেন। এত দিনও তিনি একনায়কতন্ত্র চালিয়েছেন— সেটা কাগজে-কলমে। কিন্তু এবার আক্ষরিক অর্থেই। তাই শাকিবকে নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই। এখন দেখার বিষয় তার নায়িকাদের অবস্থান। এবার তার তিন ছবির নায়িকা ছিলেন তিনজন। ‘সম্রাট’-এ অপু বিশ্বাস, ‘শিকারি’তে কলকাতার শ্রাবন্তী এবং ‘মেন্টাল’-এ ছোটপর্দার জনপ্রিয় মুখ নুসরাত ইমরোজ তিশা। বলা যায়, এই তিন নায়িকার মধ্যে এখন চলছে লড়াই। চারদিকেই আলোচনা— কে আছেন এগিয়ে!

আসলে এই প্রশ্নের উত্তর এই সপ্তাহ না গেলে পরিষ্কার হবে না। তবে অনুমান করা যাচ্ছে। শাকিবের নতুন লুক এবং দুর্দান্ত মেকিংয়ের কারণে ‘শিকারি’ বেশ প্রতাপের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। এরপর ‘সম্রাট’ আর ‘মেন্টাল’র অবস্থা একই রকম। অতএব লড়াইয়ে একটু হলেও এগিয়ে আছেন ‘শিকারি’ ছবির নায়িকা কলকাতার জনপ্রিয় মুখ শ্রাবন্তী। এরপর আছেন ‘সম্রাট’র অপু বিশ্বাস এবং ‘মেন্টাল’র তিশা।

ব্যবসায়িক হিসেবে এই চিত্র হতে পারে। কিন্তু অভিনয়ের চিত্র আবার উল্টো। এখানে কোনো হিসাব-নিকাশ নেই, অনুমানও নেই। দর্শক মন থেকেই প্রকাশ করছেন তাদের অনুভূতি। পাশাপাশি মিডিয়াপাড়ায়ও অভিনয় নিয়ে ব্যাপক চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়েছে। প্রায় সবখানেই তিশার অভিনয়ের বেশ প্রশংসা ছড়িয়েছে। ছোটপর্দা থেকে যারা সাধারণত মসলাদার ছবিতে অভিনয় করতে আসেন, তাদের মধ্যে এক ধরনের আড়ষ্টতা থাকে। সাবলীল অভিনয় হয়ে ওঠে না। কিন্তু তিশা সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছেন একেবারে ইউটার্নের মতোই। তিনি দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন বলেই সবার মন্তব্য। তবে গানের  কিছু দৃশ্যে তিশাকে দেখে তার ভক্তরা কিছুটা হতাশ হয়েছেন। অবশ্য তাদের সেই হতাশাকে অন্যরা ‘ছোটপর্দার’ চোখ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। বরং ছোটপর্দার রীতি ভেঙে বড়পর্দায় বড়পর্দার মতো কাজ করেছেন বলেই মত সবার। সব মিলিয়ে তিশার মন্তব্য চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি যখন যেখানে অভিনয় করি, মন দিয়ে পরিপূর্ণ কাজ করার চেষ্টা করি। বড়পর্দায় আমার অভিনয়ের আগ্রহ আছে, কিন্তু বেছে বেছে। তাই আমি এখনো ছোটপর্দায় নিয়মিত অভিনয় করছি। কিন্তু দুটো দুই মাধ্যম। আমাকে সেভাবেই অভিনয় করতে হয়।’

তার অভিনয়ের প্রশংসা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত এটা ভেবে যে, দর্শক আমার অভিনয়ের প্রশংসা করছে। একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে তো এটুকুই চাই। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ, যারা আমার অভিনয় পছন্দ করে।’

তিশার পর প্রশংসিত হচ্ছে অপু বিশ্বাসের অভিনয়। ‘সম্রাট’ ছবিতে তিনি শাকিব এবং ইন্দ্রনীলের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। নিজের চরিত্রটি ভালোভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন। অথচ অপুর কোনো খোঁজ নেই। কোন অভিমানে সেই যে নিখোঁজ হয়েছেন, তারপর থেকে আড়াল। কোনো কথা নেই কারও সঙ্গে। তাই অপুর কোনো মন্তব্য নেওয়া যায়নি। তবে তার অভিনয়ের যে প্রশংসা হচ্ছে, এটা নিশ্চয়ই তিনি জানতে পারছেন। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সবার প্রত্যাশা, অপু সব অভিমান ভুলে চলচ্চিত্রে আবার মনোযোগী হবেন। এদিকে ‘শিকারি’ ছবির নায়িকা শ্রাবন্তীকে নিয়ে যেমন প্রশংসা হচ্ছে, তেমনি সমালোচনাও হচ্ছে। কারও কাছে অভিনয় ভালো লেগেছে, কারও কাছে খারাপ। কিন্তু ছবি সুপারহিট। আর সেটা শুধু শাকিবের কারণেই। এখানে শ্রাবন্তী গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু মুখ্য নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যৌথ প্রযোজনার ছবি হওয়ায় আলোচনা-সমালোচনা হতে পারে। কারণ এ ধরনের ছবিতে দুই সংস্কৃতি তুলে আনতে গিয়ে ঝামেলা পেকে যায়। তাই অভিনয় করাও মুশকিল হয়ে ওঠে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর