সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ : চয়নিকা চৌধুরী

পরিচালনায় ১৫ বছর পার করে দিলাম

আলী আফতাব

পরিচালনায় ১৫ বছর পার করে দিলাম

২০০১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ‘শেষ বেলায়’ নাটকের মধ্যদিয়ে পরিচালনায় আসেন চয়নিকা চৌধুরী। গতকাল ছিল তার পরিচালনার ১৫ বছর। দীর্ঘ এ পথচলা আর সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে আজ তার ইন্টারভিউ—

 

গতকাল কীভাবে পালন করলেন পরিচালনার ১৫ বছর?

আমাদের বাংলা সাহিত্যে ও নাট্য ুজগতের প্রবাদপুরুষ হচ্ছেন হুমায়ূন আহমেদ। আমি তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নুহাশ পল্লিতে ১৫টি গাছ রোপণ করেছি। একদিন আমরা থাকব না। কিন্তু এ গাছগুলো ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে। আর আমি এ জন্য ধন্যবাদ জানাই শাওনকে। যে আমাকে এ মহৎ কাজটি করতে সাহায্য করেছে।

 

পরিচালনার জগতে ১৫ বছরের, এই পথচলাটা কেমন ছিল?

একজন নারী নির্মাতা হিসেবে শুরুর দিকে আমার এ পথচলাটা খুব একটা মসৃণ ছিল না। কিন্তু আমি আমার পরিশ্রম, মেধা আর যোগ্যতা দিয়ে আজ এখানে এসে দাঁড়িয়েছি। দীর্ঘ এ পথচলায় আমার পাশে বেশ কিছু মানুষকে পেয়েছি, তার মধ্যে রয়েছে লাইট অ্যান্ড শ্যাডোর মুজিবুর রহমান, জায়েদান রাব্বি। এছাড়া আরও আছে আমার স্বামী অরুণ চৌধুরী, ফরিদুর রেজা সাগর, ইমদাদুল হক মিলন, মাহফুজ আহমেদ, ঈশিতা, আবুল হায়াতসহ আরও অনেকেই। তাদের সাহায্য ছাড়া আমি আজ এতদূর আসতে পারতাম না।

   

একজন নারী নির্মাতা হিসেবে প্রধান প্রতিবন্ধকতাগুলো কি ছিল?

আমি নিজেকে নারী নির্মাতা ভাবি না। নির্মাতার কোনো জেন্ডার নেই। কিন্তু আমি একজন নারী। প্রথমদিকে অনেকে বলত যে, যেহেতু আমার স্বামী অরুণ চৌধুরী একজন লেখক ও নির্মাতা। সে জন্য আমার নাটকগুলো ও লিখে দেয়। কিন্তু মানুষ অচিরেই জানল আসলে ঘটনা তা নয়। আসলে আমি নিজেকে খুবই লাকি মনে করি। কারণ আমি নাটক করতে গিয়ে আমার ফ্যামিলি, আমার স্বামী, আমার স্বামীর ফ্যামিলি সবার সহযোগিতা পেয়েছি। যেহেতু আমি ছোটবেলা থেকেই মিডিয়ায় ছিলাম, তিন বছর বয়স থেকেই। সবাই আমার আঙ্কেল-আন্টি। সবাই পরিচিত মুখ। সবাই আমাকে অনেক পছন্দ করতেন। তবে হ্যাঁ পরিচিতির কারণে এক দিন-দুই দিন-তিন দিন থাকা যায় কিন্তু ভালো কাজ না হলে তো টিকে থাকা যায় না। তবে প্রথম যে প্লাটফর্মটা সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

আমাদের নাটকের বর্তমান কি অবস্থা।

আমি বলব সামগ্রিকভাবে নাটকের খুবই ভালো অবস্থা। নতুনরা অনেক ভালো কাজ করছে। আবার সমস্যাও আছে, নতুনদের অনেকে কিছুই করতে পারে না। আবার চ্যানেল বেশি হওয়ার কারণে বাজেট কমছে। আমি যেমন কাজ করতে করতে গুছিয়ে ফেলেছি, আমার মুখস্থ হয়ে গেছে। কিন্তু অনেকেই তো সেটা পারেনি। অনেক সময় দুই দিনের জায়গায় তিন দিন লাগছে। লেটনাইট আছে। অনেক সময় বিজ্ঞাপনের জন্য ভালো নাটকগুলো মানুষ দেখতে পাচ্ছে না। ধরেন, একটা নাটকের মাঝখানে যত সময় বিজ্ঞাপন দেয় তাতে মানুষ ছুটে যায় অন্য চ্যানেলে, এটা বড় একটা ব্যাপার।

 

সামনে নতুন কি কাজ করছেন?

এবারের ঈদে আমার তিনটি নাটক প্রচার হয়েছে। আর সব নাটকই দর্শক প্রশংসিত হয়েছে। আগামী ২৩ তারিখ থেকে পূজার একটি নাটকের কাজ করব।

 

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

কাজ করে যাওয়া। আজীবন কাজ করে যেতে চাই। মাঝে মধ্যে মনে হয় যে, আজকে কাজ করব না, দুই-তিন দিন কাজ বাদ দেই, এ রকম মনে হয়। সব মানুষের জীবনেই কিন্তু দুঃখ-কষ্ট থাকে। রবীন্দ্রনাথের একটা কথা আমি সবসময় মনে রাখি— মনরে আজ কহ যে, ভালোমন্দ যাহা হোক সত্যরে লও সহজে। আরও কিছুটা সময় চাই দর্শকদের পাশে থাকার। 

সর্বশেষ খবর