শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

নিপুণের আক্ষেপ

নিপুণের আক্ষেপ

দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঝুড়িতে পুরে নেওয়া নিপুণ বললেন, ব্যবসায়ী বা অন্য যা কিছু হই আমার প্রধান এবং প্রথম পরিচয়  আমি একজন অভিনেত্রী। চলচ্চিত্রই আজ আমাকে নিপুণ নামে পরিচিত করেছে। নিপুণের কথা তুলে ধরেছেন— আলাউদ্দীন মাজিদ

 

২০০৭ সালে এফ আই মানিকের ‘পিতার আসন’ ছবি দিয়ে বড় পর্দায় আসা আমেরিকা প্রবাসী নিপুণ এখন ঢাকা ও আমেরিকা দুই জায়গাতেই ব্যবসা নিয়ে দারুণ ব্যস্ত। বড় পর্দায় উপস্থিতি অনেকটাই কমে গেছে তার। চলচ্চিত্রে তেমন একটা দেখা যায় না কেন? এমন প্রশ্নে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে নিপুণ বলেন, ছবি নির্মাণ কি আগের মতো হচ্ছে, দর্শক দেখবে এমন গল্প আর চরিত্র কোথায়? একজন শিল্পী হয়ে এই আক্ষেপ আর কষ্টের কথা কাকে বোঝাব বলুন।

অনেক আগেই বনানীতে সৌন্দর্যচর্চা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন নিপুণ। এখন আমেরিকায় শুরু করেছেন রেস্টুরেন্ট, মানে খাবার-দাবারের ব্যবসা। কেমন চলছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান? উচ্ছ্বসিত নিপুণের কথায় বেশ রমরমা বলতে পারেন। দুই জায়গাতেই ভালো চলছে। বলতে পারেন ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে দারুণ সময় কাটাচ্ছি। তাহলে অভিনয়কে আপাতত টা টা। এমন প্রশ্নে হতচকিত হয়ে ত্বরিত জবাব তার, ‘না না, তা হবে কেন, অভিনয় তো আমার জান-প্রাণ। ওই যে বললাম, এখন ভালো কাজ হচ্ছে না। তাই আপাতত বিরতি। তবে অভিনেতা জাহিদ হাসানের সঙ্গে কথা চলছে। তিনি ‘ডন’ শিরোনামের মেগা সিরিয়াল নির্মাণ করবেন। এতে অভিনয়ের জন্য আমাকে প্রস্তাব দিয়েছেন। আমি তাকে জানিয়েছি, ‘যদি আমার অংশের শুটিং সপ্তাহে তিন দিন করা যায় তাহলে এতে কাজ করব। কারণ আমাকে আমেরিকা ও বাংলাদেশ দুই জায়গাতেই প্রতি সপ্তাহে আসা-যাওয়া করতে হয়। আমেরিকায় শুধু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নয়, সেখানে আমার পরিবারও থাকে। দেশে ছবির বাজার মন্দা হলেও বিদেশে আমাদের ছবির জয়জয়কার চলছে? কেন এমনটি হচ্ছে? কপালে চিন্তার ভাঁজ এঁকে নিপুণ বলেন, আসলে আমরা ঠিকঠাকভাবে সময়ের পথে হেঁটে এগোতে পারছি না। প্রদর্শনেও পুরনো পদ্ধতি। এখন বিশ্বব্যাপী সিনেপ্লেক্সের যুগ। আর আমরা সিনেমা হল নিয়ে পড়ে আছি। দর্শক এখন শপিং মলকেন্দ্রিক সিনেপ্লেক্সে গিয়ে একই সঙ্গে শপিং, খাওয়া-দাওয়া আর ছবি দেখতে চায়। যানজট ঠেলে শুধু ছবি দেখতে সিনেমা হলে তারা যাবে কেন। ঢাকায় দুই তিনটি সিনেপ্লেক্স দিয়ে কি ছবির ব্যবসা চাঙ্গা করা যাবে? এর জন্য প্রয়োজন সারা দেশে বেশি করে সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করা। এ ছাড়া পুরনো নামিদামি প্রোডাকশন হাউসগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। ভালো নির্মাতাও দরকার। তারা জানেন একটি ছবিকে কীভাবে হিট করাতে হয়। একই সঙ্গে ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা দরকার। এ ব্যবস্থা ভালো ছিল বলেই ‘অজ্ঞাতনামা’ আর ‘আয়নাবাজি’ দর্শক নজর কেড়েছে। ছবি ভালো ব্যবসা না করার ক্ষেত্রে তাহলে এগুলোই প্রধান অন্তরায়, তাই না? প্রত্যয়ী নিপুণ দৃঢ়তার সঙ্গে বললেন, আরও সমস্যা আছে। টেকনিক্যাল সাপোর্ট বলতে কিছু নেই। যেনতেনভাবে কিছু একটা বানিয়ে ফেসবুক আর ইউটিউবে চটকদার গান আর টিজার ছেড়ে দিয়ে এমন একটা ভাব যেন সাংঘাতিক রকম কিছু একটা বানিয়ে ফেলেছি। দর্শককে বোকা ভাবলে চলবে?

শিল্পী সংকট প্রশ্নে নিপুণের দ্বিমত হলো— ‘কে বলেছে শিল্পী নেই। আমি বলব যারা নতুন আসছে তাদের ধৈর্যের যথেষ্ট অভাব আছে। এসেই রাতারাতি স্টার হতে চাইলেই কি হওয়া যায়। শিল্পী হিসেবে নিপুণ নামটি প্রতিষ্ঠা করতে আমার ১০ বছর সময় লেগেছে। শোবিজ খুব সহজ জগৎ নয়, সব দিকে কঠিনের সঙ্গে লড়ে এখানে প্রতিষ্ঠা পেতে হয়...।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর